somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্ধকার গুহার বাসিন্দাদের আমরা আর ক্ষমতায় দেখতে চাই না

১৪ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ১১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইস্যু গুলো আলোচনা করলে বোঝা যাবে সরকার খুব ভালভাবে সামাল দিতে পারছে না। অবস্থা দেখে মনে হয় রাজনীতিতে খুব একটা মুনশিয়ানাও দেখাতে পারছে না তারা।
গোল্ড ফিশ স্মরণশক্তি’র সাথে আমাদের নাকি মিল আছে – সেটা আমিও বুঝতে পারছি। নিকট ঘটনা ছাড়া এইমুহূর্তে সব মনেও পড়ছে না।

এপিসোডঃ লিমনঃ
র‍্যাব কিন্তু এখনও প্রমান করতে পারেনি লিমন সন্ত্রাসী। তাহলে ইস্যু টাকে নিয়ে এতো কচলিয়ে তিতা বানানো হল কেন? ওই মুহূর্তে লিমনকে ছেড়ে দিয়ে র‍্যাব কি পরে investigate করতে পারত না? ওই মুহূর্তে জনগনের মন মানসিকতাকে মূল্য দিলে সরকারের বা আওয়ামীলীগের কি ক্ষতি হত? বরঞ্চ লাভ কি হত না? টক শো এবং মিডিয়ার বদৌলতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা আওয়ামীলীগের কোন নেতার ওই সময়কার ভুমিকাকে কি বিজ্ঞ politician বলে মনে হয়েছে?

এপিসোডঃ বিরোধী দলের হুইপ-ফারুক বনাম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পুলিশঃ
হুইপ জনাব ফারুক মানুষ হিসাবে কেমন সেই বিচার পরে। সবার আগে তিনি একজন নির্বাচিত এবং জনগনের প্রতিনিধি এবং সেই সাথে বিরোধী দলের হুইপ, যিনি লক্ষাধিক ভোট পেয়ে আমাদের জাতীয় সংসদের একজন মাননীয় সদস্য। আমাদের সংবিধানেই তো আছে জনগন সকল ক্ষমতার উৎস, সেখানে সেই লক্ষাধিক জনগনের একজন প্রতিনিধিকে একজন জনগনের সেবক (পুলিশ) কিভাবে প্রহার করতে পারে! জনগনের প্রতিনিধি হওয়ার কারনেই জনাব ফারুক কোনভাবেই আমার কাতারের মানুষ না! আমার চেয়ে কিংবা সাধারন একজন আওয়ামীলীগ কর্মীর চেয়ে অনেক বেশি ওজনদার মানুষ। তাঁর গায়ে হাত তোলার আগে শতবার চিন্তা করা উচিৎ একজন পুলিশের।
এখানে দেখুন আওয়ামীলীগ নেতাদের ভূমিকা – কোন একজন কে পাওয়া গেল না, যার কথাবার্তা শুনে মানুষ বলবে বাহ দারুন তো! সবাই একই গলিতে চললেন। “কাজ টা ঠিক হয়নি, কিন্তু উনি যে আচরন করেছেন......” এই কথাগুলো বলে পুলিশকেই সমর্থন জানালেন? আর আমাদের একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছেন – তিনি তো পুলিশ বাহিনীকে দত্তক নিয়েছেন। কিছুই শুনবেন না তাদের বিরুদ্ধে। একজন ওসি’র কতখানি দুঃসাহস হলে বলতে পারে “...লাঠি তো চুমা খাওয়ার জন্য না!” – একজন সংসদ সদস্য কে লাঠি পেটা করে, কিল ঘুসি মেরে কি প্রমান করা হল? জনগনের প্রতিনিধির চেয়েও পুলিশ উচ্চ স্থানে? সংবিধান কি তা পাশ করে? জানি না ওই পুলিশ কর্মকর্তার বর্তমান অবস্থা কেমন। নিশ্চয়ই পুরস্কৃত।
নিউটনের সুত্র বা আমাদের পূরানো প্রবাদ কিছুই মনে পড়ে না – সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে বা ঢিল ছুড়লে, পাটকেলের জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়...ইত্তাদি।
বিস্মিত হওয়ার মত ঘটনা হল, বিরোধী দলের চিফ হুইপকে দেখতে স্পিকারও যাননি! নাগরিক ভদ্রতা বাদ দিলেও এটাতো তো সংসদীয় আচরনের মধ্যেই পড়ে।
আমি বলি ওই ঘটনায় জড়িত সব পুলিশকে বরখাস্ত করলে কে লাভমান হত? সাময়িক বরখাস্ত করতেন। “তদন্তের পর কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে” এমন কথাও তো রাজনৈতিক অঙ্গনে চলে, না কি? অন্ধভাবে পুলিশের পক্ষে সাফাই গেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা অন্যান্য নেতারা কি কোন দিক দিয়েই সরকারের উপকার করলেন?
কোনো সরকার যখন public pulse বুঝতে পারে না, তখন তাকে উন্নাসিক, না জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন সরকার - কোনটা বলে?

এপিসোডঃ ছয় ছাত্রকে ডাকাত সন্দেহে পিটিয়ে হত্যাঃ
এই নির্মম ঘটনা টাকেও ঠিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারল না। এবারো সেই পুলিশ “মাদক সেবনের” সাথে মিলানোর চেষ্টা করল। সতরাং “মাদকসেবীকে” রুগি হিসাবে না দেখে পিটিয়ে মেরে ফেলাটাই পুলিশি সমাধান! মানসিকতা যদি এমনি হয় (হতেই পারে সঠিক প্রশিক্ষন না পেলে) তাহলে তো পুরো পুলিশ বিভাগকে “ঢেলে সাজানো” উচিৎ। এই নিষ্ঠুর নির্মম ঘটনাকে আইনি অবস্থার অবনতি না দেখে “মাদক সেবনের” সাথে মেলালে জনগন বুঝতে পারবে না মনে করা কতবড় বোকামি সেটা অনেক খেসারৎ এর বিনিময়ে হয়তো বুঝতে হবে।
এপিসোডঃ দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতিঃ
শুধুমাত্র এক টিসিবিকে কর্মক্ষম করতে না পারার অভিযোগেই আমাদের “কম খানেওয়ালা” বাণিজ্যমন্ত্রিকে বরখাস্ত্র করা যায়। সেই “প্রাচীন যুগের” পাটকল গুলোকে যদি চালু করে লাভবান করা যায় তাহলে আড়াই বছরে টিসিবিকে গতিশীল করা যাবে না – এটা মেনে নেওয়াও বড় ধরনের ভুল। সবসময় আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিলে চলে? জনগন সরকারের কাছে এই বিষয়ে তার আন্তরিকতাও দেখতে চায়। টিসিবি কে চালু করতে যদি এখনকার পুরো ব্যাচকে পরিবর্তন করতে হয়, তাহলে করা উচিৎ, কিছু শক্ত সিদ্ধান্ত নিলেই সম্ভব। বিদ্যুৎ নিয়ে যদি আমরা ইনডেমনিটি আরোপ করতে পারি, তাহলে যা খেয়ে মানুষ বেঁচে থাকবে সেটাকে নিশ্চিত করতে আরও কঠিন কোন রাস্তায় চলা উচিৎ এবং তাতে মানুষের পূর্ণ সমর্থন পাওয়া যেত, যাবে।

এপিসোডঃ শেয়ার বাজার ধ্বসঃ
১১ জানুয়ারী’র পর নব STAR এর উদয় হওয়াতে কিংবা RATS এর প্রকপ বেড়ে যাওয়াতে আওয়ামীলীগ STAR বা RATS দের সরিয়ে দিতে কুণ্ঠা বোধ করেনি কিন্তু আজও শেয়ার বাজারের কেলেঙ্কারির সাথে জড়িতদের কারো টিকিও ছুঁতে পারেনি। এদের কে তোওয়াজ করে চলতে হবে কেন! মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী দল আওয়ামীলীগ কি এতই দৈন্য বা দেউলিয়া হয়ে গেল যে কত গুলো টাকাখেকো’র মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে সরকারী বা দলীয় সিদ্ধান্ত নিতে হবে! ওই ৫ জন, ১০ জন বা ৫০ জন টাকাখেকোকে দল থেকে বহিষ্কার করলে, আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিলে কার ক্ষতি হত? এই সহজ অংকগুলো সরকার বোঝে না! ভুলের সংখ্যা বাড়ছেই। ভুলগুলো জনগণকে সরাসরি আঘাত করছে যা তাদেরকে নিকট ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।

এপিসোডঃ পার্বত্য চট্টগ্রাম অধিবাসীদের পরিচয় সঙ্কটঃ
প্রায় শান্ত পাহাড় কে কোনো কারন ছাড়া অশান্ত করে ফেলা – কি ভাবে মেনে নেওয়া যায়! সরকার ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক দেশ দেখতে চায় না কিন্তু জাতিগত সাম্প্রদায়িক হতে কোন দোষ নাই! অদ্ভুত না? যে কাজ করে বাহবা পেলাম কিছুক্ষন পরেই সেটাকে লেপটে কদাকার করে ফেললাম! আগে থেকে এই বিসয়ে কেন আলাপ আলোচনা করা হয়নি? যতদূর জানি আদিবাসিরা চিঠিও দিয়েছিল তাদের ‘ফরিয়াদ’ জানাতে। কিন্তু সরকার তাহাতে কর্ণপাত করিলেন না। মানুষের কাছে এটা খুব সম্ভবত গোঁয়ার্তুমিই মনে হচ্ছে। চাকমা, গারো, মুরং, মারমা এরা এখনও পর্যন্ত নিজেদের ভাষায় পড়ালেখা করতে পারে না। ’৪৮ সালে আমরা ৭ কোটি ছিলাম বলে ২১শে ফেব্রুয়ারী আনতে পেরেছিলাম, আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলাম, আদিবাসিরা সংখায় নগণ্য বলে অধিকার আদায় করতে পারছে না – সুতরাং আমি বাঙালি আমি আমার শক্তি দেখাব – এমন যদি আমাদের attitude হয় তাহলে পাকিস্তানিদের সাথে আমাদের পার্থক্য কোথায়!
যেখানে ভাষাগত, জাতিগত বৈচিত্র্যকে সারা পৃথিবী আলিঙ্গন করছে সেখানে আমরা জোর করে দূরে ঠেলে দিচ্ছি। সরকারের পক্ষ থেকে আলচনার পথ কি এই ক্ষেত্রেও বন্ধ ছিল? ইতিহাসে আমরা বাঙালিরা তো কখনই অত্যাচারী হিসাবে পরিচিত ছিলাম না। সামরিক জান্তা যে কূট চাল দিয়ে বাঙালিদের “পুশ ইন” করিয়েছিল তার সাথে এই সরকার কিভাবে একাত্মতা প্রকাশ করে! দয়া করে সঠিক এবং ত্বরিত সিদ্ধান্ত নিন, বাঙালি হিসাবে আমাদেরকে গর্ব করার ফুরসৎ দিন।


আমি সর্বান্তকরণে প্রার্থনা করি যেন এটাই শেষ এপিসোড হয়। তা না হলে সরকারের অনেক বড় বড় অর্জন যার ফিরিস্তি দেওয়াই যায়, সেগুলো না বিফলেই চলে যায়! অন্ধকার গুহার বাসিন্দাদের আমরা আর ক্ষমতায় দেখতে চাই না; বলার দরকার নেই যে, অমন এপিসোড রচনা হলে তাদের শক্তি এমনিই বৃদ্ধি পাবে।
আশা করব সরকারের সব দায়িত্বশীল মহল অবশ্যই দায়িত্বশীলতারই পরিচয় দেবেন। আগামি আড়াই বছর দেশ যেন একদল সুশৃঙ্খল সুশিক্ষিত সুশাসকের কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০১১ দুপুর ২:৪১
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×