উত্তরটা হল - আমাদের মস্তিষ্ক! এই মস্তিষ্কেরই এমন আরও বিস্ময়কর কিছু সত্য জানতে চান! আসুন...
১। আমরা বোধ হয় এটা জানি যে, মস্তিষ্ক মারাত্মক হুমকিতে পড়বে যদি ১০ মিনিটের জন্য অক্সিজেন সাপ্লাই না থাকে, কিন্তু এটা কি জানি, ঠাণ্ডা পানিতে এই ঝুকি কতটা? বেশ খানিকটা কম – মস্তিষ্কের বড় ধরনের বিপর্যয় ছাড়াই ঠাণ্ডা পানিতে ডুবে যাওয়া মানুষ দিব্যি ৪০ মিনিট পর্যন্ত বেঁচে থাকে!
২। আমাদের শরীরে যে পরিমান রক্ত আছে তার পাঁচ ভাগ রক্তই ব্যবহার করে মস্তিস্ক। আর এটার প্রয়োজন হয় নিউরনের ব্যাপক চাহিদা মেটানোর জন্য, সেখানে গ্লুকোজের পাশাপাশি আবার অক্সিজেনেরও দরকার হয়।
৩। ব্রেইন কোন ব্যথা অনুভব করে না! কারন সেখানে কোন স্নায়ু নেই যা আসলে ব্রেইন কে বলবে “ তুমি ব্যথা পাচ্ছ”। অথচ সেই আবার পুরো স্নায়ুতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করে! এই কারনেই যখন রোগী সচেতন থাকে নেউরোসার্জন-রা ব্রেইন এর পরীক্ষা করতে পারে এবং গুরুত্বপূর্ণ জায়গা চিহ্নিতও করতে পারে, যেমন ব্রেইন এর কোন জায়াগা বক্তৃতা দেওয়ার জন্য, কোন জায়গা দেখার জন্য বার্তা পাঠায় ইত্যাদি ইত্যাদি...।
৪। Cerebellum (লঘুমস্তিস্ক/little brain) যা আমাদের ব্রেইন এর পিছন দিকটাতে থাকে – ছোট্ট একটি অংশ, সে আমাদের অঙ্গভঙ্গি, হাঁটাচলা এবং অন্যান্য জরুরি কাজকে নিয়ন্ত্রন করে – অথচ এর ওজন মাত্র ১৫০ গ্রাম বা ৫ আউন্সের কিছু বেশি!
৫। মানুষের মস্তিষ্কের ওজন ১.৪ কেজি বা তিন পাউন্ডের কিছু বেশি। আবার আইনস্টাইন-এর ব্রেইনের ওজন এই আদর্শ অজনের চেয়ে কম হতে পারে! কারন তিনি মানুষ হিসাবে ছোটোখাটো ছিলেন কিনা! বলা হয়, শরীরের গঠনের সাথে ব্রেইন এর আকারের একটা সাধারন সম্পর্ক আছে!
৬। সেই বিচারেই হাতির মস্তিস্ক কিন্তু বিশাল – মানুষের মস্তিষ্কের প্রায় ছয় গুন! তবে আমাদের জন্য সান্ত্বনা হল, শরীরের তুলনায় আমাদের ভাগে যে পরিমান ব্রেইন থাকার কথা তার তুলনায় বেশিই আছে, যদি অন্যান্য প্রাণীদের বিচার করি – শরীরের প্রায় ২ শতাংশ জুড়ে আমাদের মস্তিস্ক!
৭। মস্তিষ্কে কতটুকু ধমনি থাকলে আপনি খুশি হবেন? আপনার কল্পনাকে হার মানিয়ে দেবে। এর পরিমান ১,০০,০০০ (এক লক্ষ্য) মাইল! পৃথিবীকে মাত্র চারবার প্যাঁচানো যাবে!
৮। আপনার মস্তিস্ক যদি একটি গড়পড়তা মাপের ব্রেইন হয় তাহলে সেখানে নিউরনের পরিমান হবে ১০০ বিলিয়ন!
একটা ভরসা পাওয়ার তথ্যঃ
৯। প্রতিদিন ৮৫,০০০ নিওকরটিকাল নিউরন শেষ হয়ে যায়, কিন্তু ভরসার কথা হল, প্রচুর পরিমানে থাকার জন্য আমরা এই লোকসান টেরই পাইনা। আরও ভরসার কথা, তিন বছরে যে পরিমান নিওকরটিকাল নিউরন হারিয়ে যায় তার পরিমান মাত্র ১ শতাংশ।
এইবার একটা খুশির খবরঃ
১০। অধুনা গবেষণা এটা প্রমান করেছে, “মস্তিস্ক সদা উৎপাদনমুখী” – অর্থাৎ মস্তিক প্রতিনিয়ত নতুন নতুন নিউরন উৎপাদন করে যাচ্ছে। আর সেই সাথে যদি থাকে ‘ব্রেইন গেইম”-এর চর্চা তাহলে তো কথাই নেই। বিজ্ঞানিরা এই উৎপাদনটামুখিতাকে বলছেন brain plasticity বা neuroplasticity (the capacity of the nervous system for adaptation or regeneration after trauma) - মারাত্মক আঘাতের পর আবার “বেঁচে” ওঠার ক্ষমতা।
এটাই খুব সম্ভবত আমাদের জন্য সবচে’ আশার বানী!
সুত্রঃ ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১১ দুপুর ১:৫৭