আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে জনগনের সত্যিকারের মতামত কখনো পৌঁছায় না, যদি সত্যি পৌঁছাত তা হলে তিনি কি পারতেন তাঁকে যে জনগণ নির্বাচিত করেছে তাদেরকে অবর্ণণীয় কষ্ট দিতে - শুধুমাত্র একটি পুরুস্কার জিতে আসবার কারণে - তা হলোই বা সম্মানজনক!
কর্মী-নেতা দিয়ে ঠাসা দেশের প্রধান সড়ককে ঘন্টার পর ঘন্টা অচল করে আমাদের প্রধানমন্ত্রী স্বস্তি পেয়েছেন আমি এটা কখনই বিশ্বাস করি না, তাকে আমার একবারের জন্য অবিবেচক মনে হয় নাই। ভাবুন তো, ঐদিন ঐ ভিড়ের মধ্যে কেউ একজন তার বাবা-মা, ভাই-বোন অথবা প্রিয় কোন মানুষকে নিয়ে হাসপাতাল যাচ্ছে এবং (ধরে নিচ্ছি অত্যন্ত সুশৃঙ্খল) আপনার কর্মীবৃন্দের কারণে পুরো বিমানবন্দরগামী রাস্তা আগাপাসতলা আটকে আছে -ঐ মানুষটির মনে পুরো বিষয়টা কি প্রভাব ফেলবে!! আপনার সম্বন্ধে অথবা যাদেরকে সে ভোট দিয়ে 'সেবা'র জায়গায় বসিয়েছে তাঁদের সম্বন্ধে? এগুলো কি গ্রাহ্যকর বিষয় না?
আমি টাটকা বিষয় নিয়ে লিখছি না, কিন্তু প্রতিদিনের রাস্তার অভিজ্ঞতা সবসময়ই জ্বলন্ত, কখনোই পুরোনো না। প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, আমি নগর পরিকল্পনাবিদ নই, বলতে পারেন চেনা রাস্তা বলেই বলছি - উপরের ছবিটাতে লাল চিন্হিত লাইন-এর মত যদি আপনি আপনার দেশে ফেরার(অথবা দেশের বাইরে অথবা ঢাকার বাইরে যাওয়ার) পথটাকে ঠিক করেন তাহলে অনেকটাই স্বস্তি দেবে না কি আপনার প্রিয় জনগনকে? অন্ততঃ তারা স্বাগত জানাবে আপনার চেষ্টাটিকে।
বিমান বন্দরের ভিতর দিয়ে আইএসএসবি গ্রাউন্ড পর্যন্ত রাস্তটা খুব সম্ভবতঃ তৈরীই আছে(কিংবা করে নিতে হবে), তারপরই কিন্তু সেনানিবাসের প্রশস্ত রাস্তা দিয়ে আপনি জাহাঙ্গির গেট পর্যন্ত অনায়াসে চলে আসতে পারেন। বাকি রইল, জাহাঙ্গির গেট থেকে আপনার কার্যালয় অথবা গণভবন - এইটুকু রাস্তায় নেতা-কর্মীর ভিড় ঠেকাতে আপনার একটি আদেশই কি যথেষ্ট নয়! যে নেতা-কর্মী আপনার জন্য জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত তারা অবশ্যই এইটুকু রাস্তায় না এসেও থাকতে পারবে -আমি বিশ্বাস করি।
ভুক্তভোগি ছাড়া রাস্তার জটের বেদনা কেউ বুঝবে না। সেই ভুক্তভোগি মানুষগুলোর সংখ্যা অসংখ্য এবং যারা হয়ত পুরো দেশের রাজনীতির উপর প্রভাববিস্তারকারী জনগোষ্ঠী। সেই মানুষগলোর বেদনা আপনি নিশ্চয়ই বুঝবেন কারন আপনি যে দেশের কর্ত্রী, আপনাকে বুঝতেই হবে। আপনার এবং দলের ভাবমুর্তি 'পজিটিভ' রাখার জন্যও এটুকু করা জরুরি মনে করি।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১০ সকাল ১০:২৪