গল্পটা হয়ত অনেকেরই জানা, তবুও ভাগাভাগি করতে ইচ্ছা করছে। আমার খুব ভাল লেগেছিল আর ভাল যা কিছু তা ছড়িয়ে দিতে অসুবিধা কোথায়?
দৃশ্যটার শুরু এমন:
মেয়েটার মন সত্যিকার অর্থেই খুব খারাপ - হতে পারে বান্ধবী'র সাথে মন কষাকষি, হতে পারে কোন কিছু না পাওয়াতে, হতে পারে পছন্দের ছেলেটি... অনেক কিছু। মেয়েটার আসলেই মন খারাপ।
মা বুঝলেন।বললেন,
- হ্যাঁ, মন খারাপ হওয়াটা স্বাভাবিক। ঠিক হয়ে যাবে; আস তোমার পছন্দের কেক্ বানিয়ে দিই, খাবে।
রান্না ঘরে গিয়ে মা তার মন খারাপ করে থাকা মেয়েটাকে কাঁচা ডিম দিয়ে বললেন
- এটা মুখে দিয়ে খেয়ে ফেল।
মেয়েটার মন আরো খারাপ হয়ে গেল! এমন সময় মা এত হাল্কাভাবে মন ভাল করতে চাচ্ছে! ডিমটা পাশে সরিয়ে রাখল।
মা বুঝতে পেরে ময়দা এগিয়ে দিয়ে বললেন
- তাহলে এটা দিয়েও শুরু করতে পার।
এবার মেয়েটার ধৈর্যের বাঁধ ভাঙল। চিৎকার করে উঠল মা'র এমন নিষ্ঠুর আচরণে।
-তুমি আমাকে কাঁচা ডিম, ময়দা খেতে দিচ্ছ কেন? এগুলো এমন করে খাওয়া যায়? কোন মা তার সন্তানকে এসব দেয়?.....
...অনেক কথা......
মা তাকে পুরোটুকু শেষ করতে দিলেন, চুপ হয়ে শুনলেন। মেয়ে থামলে, খুব নরম স্বরে, আত্মবিশ্বাসে শুরু করলেন,
- শেষ? এখন আমি বলি? শোন মেয়ে, তুমি যখন ময়দা, ডিম, তেল, বেকিং পাউডার, চিনি আলাদা আলাদা করে খাবে তখন তা ভীষন বিস্বাদ। কিন্তু সব মিলিয়ে যখন জ্বাল দেওয়া হয় তখন তা হয় সুস্বাদু কেক্। তুমি আমি এখানেই ভুলটা করি। ঈশ্বরের দেওয়া কোন দুঃখে খুব বেশী ভেঙ্গে পড়ি। ওটাতেই ব্যস্ত থাকি, বর্তমানেই ডুবে থাকি। ভুলে যাই ঈশ্বর আমাদের চেয়ে অনেক বেশী আমাদেরকে জানেন, চিন্তা করেন! আমরা জানি না, শেষে আসলে কী অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য! আজকের দুঃখটাকেই তুমি বড় করে দেখছ, সামনের কিছুই জান না। ঈশ্বর কেন এত আয়োজন করেছেন সেটা তাঁকেই চিন্তা করতে দাও, বরং তুমি আমি কাজ করে যাই, ফল দেওয়ার কাজ তাঁর এবং সেটাই সরল আর সঠিক রাস্তা।
মেয়েটি ততক্ষণে স্তব্ধ, চোখ ছলছল এবং অবশেষে মায়ের কোলে নিজেকে সমর্পণ।
(ই মেইল এ পাওয়া একটা গল্পের অনুবাদ)
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০০৮ বিকাল ৫:৩০