কে এম মন্জুর হোসেন খান
একটা সূর্য ডুবেছিলো আম্রকাননে,
একটা ফুল ঝরেছিলো আধাঁর মননে,
একটা ইতিহাস মুছেছিলো অঝোর শ্রাবণে,
একটা কালো হাত, থাবা মেরেছিলো নিভৃত চরনে।
দু’শোটি বছর, শেকল পায়ে,
ঘাম ঝরানো লোহিত গায়ে,
ছিলোনা তফাৎ মানুষ-পশুতে,
আমাদের ইতিহাস শুনে বিশ্বও কাঁদে।
একটা সুখের ঘর ভেঙ্গেছিলো শকুনের ছোবলে।
একটা সাজানো বাগান তছনছ, নির্বাক প্রভূর সম্মুখে।
একটা নিঃষ্পাপ হৃদয়ের আত্মহনন, বন্ধুর ছলনে।
একটা কালো ছায়া নিয়েছিলো স্থান, সারা গগনে।
প্রতিটা মূহূর্ত, যেন মৃত্যূর প্রহর গোনা, আর-
অনাহারে- অর্ধাহারে উনুনে টগবগ শব্দ শোনা।
ক্লান্ত শরীরে, ঘুমের ঘোরেই তখন-
স্বপ্নের দেশে রাজভোগ হয় সারা।
হয়েছিলো যে পতন, এসেছিলো নব উত্থান
এসেছিলো নতুন রাজা, নতুন ইতিহাস।
দুর্ভাগা বাঙ্গালী, খুঁজে পায়নি সেই সূর্য।
এ যেন ভাগ্য বিধাতার এক নির্মম পরিহাস।
পিছু হটা জাতি, হঠাৎ ভুলে গেল মৃত্যূর ভয়,
এলো ’৪৭, ’৪৮, ’৫২.... অবশেষে......
’৫৬ তে এলো একজয়।
বাঙ্গালী যেন ভুলে গেছে মৃত্যূভয় কাকে বলে,
জেনে গেছে বেঁচে থাকা মানে সংগ্রাম।
’৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান দিয়ে পুনরায় শুরু,
’৭১ এ এসে একটা রক্তাক্ত পতাকা, মানচিত্রসহ
আমার শিকল মুক্ত মাকে পেলাম।
‘মাগো’ তুমি ওদেরকে তোমার আজকের কথা বল,
বল, তুমি আজ আবার রাহুর হাতে বন্দী।
বল, তোমার সেই অকুতোভয় দামাল ছেলেদের কথা
যারা অন্যায়ের সাথে করেনি কভু সন্ধি।
‘মাগো’ তুমি ওদেরকে তোমার আজকের কথা বল,
বল, এখনও হাতে কিছু সময় আছে বাকি।
বল, ওদের মত সত্যিকারের মানুষ হতে,
যারা তোমার সম্ভ্রম রক্ষার্থে দিয়েছে আত্মাহুতি।
‘মাগো’ তুমি তোমার যুব সন্তানদের বলে দাও
বেঁচে থাকা মানে শুধু পেট পুরে খাওয়া নয়,
নয় শুধু গাঁদা গাঁদা পুস্তক মুখস্ত করা।
বেঁচে থাকা মানে অন্যের কথায় সায় দিয়ে যাওয়া নয়,
নয় ফুলের মালা গলায় পরে, নেয়া ফুলেল শুভেচ্ছা।
বল, জীবন মানে সংগ্রাম,
জীবন মানে মাথা উঁচু করে বাঁচা।
আমার পূর্বের কবিতা “বৃষ্টির প্রতি......”
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৫১