রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিককে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার পথে রাজশাহীর শালবাগান এলাকায় নিজ বাসার কাছে দুর্বৃত্তের চাপাতির কোপে জীবন দিতে হলো। নির্দয়ভাবে হত্যা করা হলো একজন সুহূদ শিক্ষককে। রাজনীতিতে যুক্ত থাকেননি, দলবাজি করেননি এবং দলীয় বা সামাজিক কোন্দলের ভিতরে তাঁকে কখনও দেখা যায়নি। শিক্ষকতা নিয়ে নিবিষ্ট থেকেছেন। অহমিকামুক্ত আলোকিত জীবনযাত্রার পথে চলা ব্যক্তিটির ঝোঁক ছিলো সংস্কৃতির দিকে। বিনোদনের খোঁজে তানপুরা বাজাতেন একাকীত্বে আর একটি গানের স্কুল খুলতে চেয়েছিলেন নিজ গ্রামে যা একসময় জেএমবি নেতা বাংলা ভাইয়ের দুর্গ ছিলো। নাস্তিক-আস্তিক লড়াইয়ে তার পক্ষপাত ছিলো না। নিজ গ্রামে মসজিদও বানিয়েছেন এবং মাদ্রাসায় চাঁদাও দিয়েছেন নিয়মিত। সকলের শ্রদ্ধাভাজন হয়েও অলক্ষ্যে জঙ্গি হামলার লক্ষ্যবস্তু বনে গেলেন।
ক্ষোভ ও প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গন। ইসলামি মৌলবাদীদের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪জন প্রথিতযশা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার শিক্ষককে জীবন দিতে হয়েছে বিগত একযুগে। গতবছরের ১৫ নভেম্বর লালনভক্ত অধ্যাপক শফিউল ইসলাম ভুইয়াকে একই কায়দায় দুর্বৃত্তরা খুন করে। আনসার আল ইসলাম নামের জঙ্গি দল দায় স্বীকার করলেও পরবর্তীতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাসহ ১১ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। অধ্যাপক তাহের আহমেদ খুন হন ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। তাঁকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন তার সহকর্মী শিক্ষক ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক নেতাসহ দু’জন। হাইকোর্ট দণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন। ২০০৪ সালে অধ্যাপক ইউনুছকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড পেয়েছিলেন দু’জন জেএমবি নেতা কিন্তু পরবর্তীতে তা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে রূপান্তরিত হয়। এবারের হত্যার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মার্কিনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ টুইট বার্তা দিয়ে প্রকাশ করলো আন্তর্জাতিক জঙ্গি ইসলামিক স্টেটের (আইএস) দায় স্বীকার। বাংলাদেশে গতবছর থেকে জঙ্গি সংশ্লিষ্ট হামলার ধারাবাহিক দায় স্বীকারের বার্তাবাহক হিসাবে সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ আবর্তিত হয়েছে যার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়াই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম নিশ্চিত করেনি।
গত নভেম্বরে ঢাকায় ইতালি নাগরিক তাবেলা সিজার হত্যার পর থেকে বাংলাদেশে আইএস বা আল-কায়েদা হত্যার তথাকথিত দায় স্বীকার অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশের সরকার আইএস-এর অস্তিত্ব মেনে নেয়নি এখনও পর্যন্ত। আইএসের মূল লক্ষ্যের ভরকেন্দ্র এখনও পাশ্চাত্য কেন্দ্রিকতা থেকে সরে আসেনি। সরকারের অবস্থানের বিপরীতে বিদেশি বন্ধুরা কোন নতুন তথ্যের জোগান না দেয়ায় সরকার অবস্থানে অনড়। জামায়াত নেতা মোল্লা কাদেরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে ফাঁসির রায় না হওয়ার প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠা তরুণদের গণজাগরণ মঞ্চ তৈরি হলে ব্লগার রাজীব হায়দার রাতের আঁধারে কুপিয়ে খুন হন নাস্তিকতার অপরাধে। পরবর্তীতে অভিজিত্ রায়সহ অন্তত পাঁচজন ব্লগারখ্যাত ব্যক্তিকে নির্মমভাবে হত্যার বলি হতে হয়েছে। মুক্তচিন্তা চর্চারত ব্লগারদের নাস্তিকতার দায়ে খুন করা ইমানি দায়িত্ব বানিয়ে হত্যার দর্শন সৃষ্টি করে জঙ্গিরা, যদিও আইএস জন্মের অনেক আগে থেকেই চাপাতি-হত্যার কৌশল প্রয়োগ করে কোপানো হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদকে। কবি শামসুর রাহমানকেও হত্যার চেষ্টা করেছিল দেশীয় জঙ্গিরা।
মনোজগতের যুদ্ধে স্বাধীন চিন্তার আগ্রাসনকে সবচেয়ে বড় হুমকি মনে করে ইসলামি জঙ্গিবাদ। চিন্তার মুক্তধারাকে রুখতেই চিন্তকদের হত্যার কৌশল অনেকদিন থেকেই মৌলবাদীরা অনুসরণ করে আসছে। ইদানীংকালের টার্গেটগুলোর মধ্যে বহুমাত্রিকতার অস্তিত্ব পরিলক্ষিত হচ্ছে। প্রথমদিকে অসাম্প্রদায়িক চিন্তা ও চেতনার খ্যাতিমান ধারকদের টার্গেট করা হয়েছে, প্রগতিশীল লেখকদের নাস্তিক আখ্যা দিয়ে হত্যা করে আস্তিক-নাস্তিক লড়াইয়ের সূচনা করা হয়। মুক্তচিন্তার চর্চা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয় বলে অনেকেই বিশ্বাস করতে শুরু করেন। অপ্রত্যক্ষ কৌশল হিসাবে ধর্ম নিয়ে লেখালেখি বন্ধে মনোযোগী হয়ে পড়তে দেখা যায় প্রশাসনকে। কিন্তু চোরে শোনে না ধর্মের কাহিনীর মত সন্ত্রাসীরা বিদেশিদের উপর হামলা শুরু করে, আবার দিক পরিবর্তন করে খ্রিস্টান ধর্মযাজক ও হিন্দু পুরোহিতদের টার্গেট করে। ধর্মান্তরিত হয়ে যাওয়া মানুষদের লাশ ফেলতে শুরু করে এবং অন্যান্য তরিকার অনুসারী পীর মাশায়েকদেরও হত্যা করে। অপরদিকে সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট করতে গোষ্ঠীগতভাবে শিয়া, আহমেদিয়া জামায়াত, মারফতি, মুরশিদ, বাউল সাধক, সাধু-সন্ন্যাসীসহ মন্দির, মাজার, সাধু আস্তানা ও মসজিদকে হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে।
ইদানীংকালে নাস্তিক তকমার বাইরে থাকা ব্যক্তিদের জীবনধারাকে উপলক্ষ্য করে হত্যার তালিকায় নেয়া হচ্ছে। জ্ঞানের মহিমায় মহিমান্বিত, উদার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলা সার্বজনীন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিবর্গের অনুসারীসংখ্যা গুণিতক হারে বাড়ে, ফলে জঙ্গিবাদের প্রসারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। মূল কথায় বাঙালিত্বকে উগ্রবাদীরা ইসলাম-বিরোধী সংস্কৃতি বিবেচনা করে। ফলে শিক্ষক ও লেখকরা সহজেই জঙ্গিদের লক্ষ্যবস্তু বনে যাচ্ছেন যার পেছনে সংঘাতী দর্শনের সম্পৃক্ততার চেয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের নন্দিত বা নিন্দিত দৃষ্টি বেশি অনুঘটক হিসাবে কাজ করছে। “আইএস” নাম যুক্ত হলে গণমাধ্যমের আকর্ষণ ও জায়গা দুটোই বেশি পাবার সম্ভাবনায় থেকে বাংলাদেশে জঙ্গিদের গোপন ও বর্বর হামলার তালিকায় নিরস্ত্র ও নিরীহ মানুষের নাম যোগ হচ্ছে। যাদের হত্যার সহজ শিকার বানিয়ে নিরাপদে পালিয়ে যাবার নিশ্চয়তার সুযোগ অনেক বেশি।
একক ও অরক্ষিত ব্যক্তিকে আক্রমণ করার সুবিধাকে কাজে লাগাচ্ছে বাংলাদেশের জঙ্গিগোষ্ঠী। প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাস করা দৃষ্টির অগোচরে থাকা গুণী মানুষগুলোকে খুন করে আইএসের বৈশ্বিক লক্ষ্য অর্জিত হবার কোন সুবিধা না ঘটলেও গণমাধ্যমের কারণে ‘আইএস’-এর কমবেশি ব্রান্ডিং হচ্ছে নিঃসন্দেহে। বাংলাদেশে ইসলামি জঙ্গিবাদের বীজ রোপণ করেছে জামায়াতে ইসলামীর মতো মৌলবাদী দল। ইসলামি শাসনব্যবস্থা কায়েমের দর্শন নিয়ে জন্ম হওয়া দলটি গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার সমস্ত সুযোগ নিয়ে বেড়ে উঠেছে। পুঁজিবাদী শক্তিগুলোর সাথে ইসলামি মৌলবাদী গোষ্ঠীর অন্তরঙ্গতা যেমন অনেক পুরোনো। ঠিক তেমনি মধ্যপ্রাচ্যের বাদশাহদের অবারিত আর্থিক আনুকূল্য নিয়ে এদেশে তরতর করে বেড়ে উঠেছে ইসলামী মৌলবাদীরা। সৃষ্টি করেছে বিশাল আর্থিক সাম্রাজ্য।
মধ্যপ্রাচ্যের সুন্নি বাদশাহরা নিজেদের রাজ্য ও সম্পদ সুরক্ষিত করতে পুঁজিবাদী বিশ্বের সখ্যতাকে নিরাপত্তার ভিত্তি হিসাবে গণনা করেছে। আইএসের দার্শনিক ভিত্তি সুন্নি ও ওয়াহাবি আকিদা যার দক্ষিণ এশীয় সংস্করণ হয়েছে মওদুদীবাদ। মৌলবাদী দলের গণতান্ত্রিক চরিত্রের আড়ালে লুকিয়ে থাকা উগ্রবাদী সহিংস দর্শন থেকে ইসলামিক স্টেটকে আলাদাভাবে দেখার ভুল থেকে “মডারেট ইসলাম” নামের তত্ত্বের জন্ম যা উগ্রবাদীদের সুরক্ষা দেবার পশ্চিমা কৌশল।
আইএসের জন্ম ও উত্থান নিয়ে অনেক হাইপোথেসিস থাকলেও মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান সমীকরণ ভিন্নমুখী প্রবাহ তৈরি করছে। সৌদি-মার্কিন সম্পর্কের টানাপোড়েন, ইরান নিয়ে মার্কিনীদের নতুন সম্ভাবনাময়ী ধারণা কৌশল, ইয়েমেন যুদ্ধের চোরাবালিতে সৌদিদের আটকে পড়া, আইএস বিরোধী যুদ্ধে আরব দেশগুলোর নেতিবাচক ভূমিকা, মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান আধিপত্য থেকে নতুন মেরুকরণের প্রভাব বাংলাদেশের মৌলবাদী ও জঙ্গিবাদী শক্তির অস্তিত্ব কম্পমান ঠিক তখনি আইএস-এর পত্রিকা দাবিক-এর পাতায় আবির্ভূত হলো বাংলাদেশের আইএস প্রধান শেখ ইব্রাহিম আল হানিফ নামের কাল্পনিক চরিত্র। ভৌতিক গল্পের মতো সুখপাঠ্য হলেও বস্তুনিষ্ঠতার অনুপস্থিতি সাধারণ মানুষের দৃষ্টি এড়ালেও বিশ্লেষকদের বিশ্বস্ততা অর্জন করতে পারেনি। বাংলাদেশে দীর্ঘসময় ধরে চলা জঙ্গি-বিরোধী অভিযানে জঙ্গি সংগঠনগুলো কিছুটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অস্তিত্ব সংকটে থাকা মৌলবাদী রাজনীতি আগের মত পৃষ্ঠপোষকতা দিতে পারছে না। ফলে জঙ্গি দলগুলোর টুকরো টুকরো অংশগুলো স্বভাবতই টিকে থাকার শেষ ও নতুন কৌশল হিসাবে সংগোপনে কিলার সেল বানিয়ে আচমকা হামলা করে অরক্ষিত ও নিরীহ মানুষকে খুন করে নিজেদের অস্তিত্বকে ধরে রাখার চেষ্টা চালাবে এতে অবাক হবার কিছু নেই। জিহাদি উজ্জীবনী সুধা আগের মত কাজে না লাগায় জঙ্গিরা হতাশাগ্রস্ত। নাস্তিক-আস্তিকের লড়াইয়ে মানুষের সমর্থন ধরে রাখতে সুযোগ বুঝে যে কাউকে হত্যা করে গণমাধ্যমে টিকে থাকার দেশীয় জঙ্গিদের নতুন কৌশলের বলি হতে হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য ও সর্বজনশ্রদ্ধেয় অধ্যাপককে।
বাংলাদেশে জঙ্গিদের হত্যাকাণ্ডগুলোকে আইএস তকমা লাগানোর ফলে সরকার সম্ভবত অযাচিত বিদেশি হস্তক্ষেপ ঠেকাতে বাধ্য হয়েছে “আইএস নেই” অবস্থানে যেতে। অপরদিকে হত্যার ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম অনেক আগ্রহ দেখাচ্ছে এবং আইএসের উপস্থিতি খুঁজতে ব্যতিব্যস্ত। ক্রমাগতভাবে আইএসের দায় স্বীকারের বিপরীতে সরকারের অস্বীকারের বিতর্ক দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের আকর্ষিত উপাদানে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের জঙ্গিবিরোধী শূন্য সহিষ্ণুতা নীতির প্রশংসার পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে জঙ্গি নির্মূলে সাফল্যের ঘাটতি বা নিষ্ক্রিয়তা এবং বিচারের দীর্ঘসূত্রিতার কুফল নিয়েও সমালোচনা বাড়ছে। ধর্মীয় অনুভূতির আঘাত থেকে ক্ষিপ্ত হয়ে নাস্তিক মেরে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সহানুভূতি কুড়াচ্ছে ভেবে উস্কানি ঠেকাতে উত্সাহী হয়ে কিছু মন্তব্য করায় আন্তর্জাতিক মহলে সমাদৃত হয়নি এবং জঙ্গি নির্মূলে পূর্বের অনড় অবস্থানের শিথিলতা হিসাবে মনে করতে শুরু করেছে।
জঙ্গিবাদী মতাদর্শে নৈতিকতার জায়গা খুব ছোট। যারা নিরীহ মানুষ মারতে কুণ্ঠিত নয় তাদের কাছে ধর্মীয় অনুভূতি একটি ছুতো মাত্র। অধ্যাপক রেজাউল করিমের হত্যা সেটাই আবার প্রমাণ করলো কারণ তিনি নাস্তিকতার দৃশ্যমান কোন কাজ করেছেন বলে জানা যায়নি। তথাপি তাঁর বিরুদ্ধে নাস্তিকতার আহবান জানানোর অভিযোগ করেছে বলে সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের টুইটে জানা যায়। আইএস নিয়ন্ত্রিত জঙ্গি সংগঠনের অস্তিত্ব বাংলাদেশে দৃশ্যমান না হলেও ইন্টারনেটের সুবাদে বারে বারে প্রচারিত হচ্ছে। নিজ অস্তিত্বকে জাহির করার মত সক্ষমতা সৃষ্টির বদলে সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করার নিজ ক্ষমতা জাহির করার প্রবণতা নিঃসন্দেহে সাংগঠনিক দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ।
গণমাধ্যম বা আন্তর্জাতিক মহলে তোলপাড় হলেও দেশের মানুষের মধ্যে নিরাপত্তা বোধের আস্থার ক্ষয় ধরেছে সেটা মানতেই হবে। নীরব ও আচমকা হামলা থেকে নিরীহ ও নিরপরাধ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে রাষ্ট্রকেই এগিয়ে আসতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ নিয়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয়। চিন্তা-চেতনার স্বাধীনতা ও অসাম্প্রদায়িক মননশীল জীবনধারাকে চাপাতির কোপের ভয়ে শঙ্কায় জীবন কাটাতে হবে, জঙ্গিরা ইচ্ছামত সময়ে, পছন্দমত ব্যক্তিকে ধর্মের দোহাই দিয়ে বা জিহাদের নামে কতল করবে এবং রাষ্ট্র দর্শকের মতো চেয়ে থাকবে না এটাই মানুষের দাবি। রাষ্ট্রীয় মূল্যবোধ ও দর্শন যারা স্বাধীনভাবে ধারণ ও চর্চা করেন সক্রিয় রাজনীতি না করলেও তাদের মধ্যেই রাষ্ট্র বাস করে। হাজার বছরের লালিত সংস্কৃতি ধর্মীয় চাপাতির কোপানলে পড়লেও সংস্কৃতি চর্চা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, চিন্তার অফুরন্ত বিকাশের মধ্যেই নিহিত থাকবে গণতন্ত্র। মনন, মেধা এবং জীবনযাত্রার উপর অপশক্তির বর্বরোচিত নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাকে রুখতে রাষ্ট্রের অবস্থান হতে হবে অত্যন্ত স্থির, অনড় এবং স্বচ্ছভাবে দৃশ্যমান। আঘাত বন্ধে সনাতনী আইন-কানুন কাঙ্ক্ষিত নিরাপত্তা দিতে পারছে না বলে একের পর এক খুন হয়েই চলেছে। হত্যা বন্ধে প্রয়োজনে এসকল অপরাধ নিয়ন্ত্রণে নতুন ব্যবস্থা চালু করতে হবে যাতে নিশ্চিতভাবে পুনরাবৃত্তি রোধ করা যায়।
মেজর জেনারেল মো. আব্দুর রশীদ (অব
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মে, ২০১৬ সকাল ১০:২৭