somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

করপোরেট বেনিয়াদের হাতে বন্দী দ্রোহ আর প্রতিবাদের প্রতীক একুশে ফেব্রুয়ারি এখন একুশ উৎসব!

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


রেসের ঘোড়াকে কীভাবে ধীরে ধীরে রেসের ময়দানের প্রথম কাতার থেকে সরিয়ে দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং ক্রমান্বয়ে ময়দান থেকে সরিয়ে এনে তার ঘাড়ে জোঁয়াল চাপিয়ে গাড়িটানা ঘোড়ায় রূপান্তরিত করা হয়, এবং সবশেষে তাকে শেয়াল-শকুনের খাবারে পরিণত করা হয় তার জাজ্বল্যমান উদাহরণ আমাদের মহান ভাষা দিবস। যাকে এখন জাতিসঙ্ঘের সনদের বলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বলা হচ্ছে। ভাষা দিবস বা মহান শহীদ দিবস কিংবা শুধুই একুশে ফেব্রুয়ারি যে একটি জাতির প্রতিবাদ, প্রতিরোধ এবং সেই প্রতিরোধ বা প্রতিবাদের নজির এই ভূবিশ্বে কেবলমাত্র বাঙালিরই আছে সেই সত্যটি ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে দেয়ার চেষ্টা যারা করে আসছিল এখন তারা মোটামুটি সফল! নিজের মায়ের ভাষা কেড়ে নেয়ার পাকিস্তানি জুলুম এবং চক্রান্ত প্রতিহত করতে যে বাঙালি গর্জে উঠে অকাতরে প্রাণ দিয়ে তার মায়ের ভাষাকে প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেই প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় মাটিচাপা দেয়ার কাজটা দিনের পর দিন সুনিপুণভাবে করা হচ্ছে।

অনেকেই বলে থাকেন একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদ দিবস। এটা রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও এখন মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু এটা যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, জুলুমের বিরুদ্ধে অসহযোগ যুদ্ধ, আগ্রাসনের বিরুদ্ধে টিকে থাকার লড়াই। সেই জায়গা থেকে বাঙালিকে টেনে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে গত চার দশক ধরে। ১৯৭২ সালের আগ পর্যন্ত একুশে ফেব্রুয়ারিতে খুব ভোরে লখো মানুষ খালি পায়ে শহীদ বেদিমূলে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছিল। সেই শ্রদ্ধা নিবেদনে কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছিলনা। ছিল ভাইয়ের রক্তে কেনা মায়ের ভাষার প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা ভালোবাসা আর কৃতজ্ঞতা।

১৯৭২ সালে একুশে ফেব্রুয়ারি প্রভাতের বদলে রাত বারটা শূণ্য মিনিটে প্রধানমন্ত্রী সরকারিভাবে বেদিমূলে পুষ্পার্ঘ দেয়ার চল করার পর থেকেই প্রভাতফেরি নামক চিরায়ত সংস্কৃতি বদলে যেতে থাকে। তখন থেকেই প্রভাতফেরি হয়ে ওঠে রাষ্ট্রীয় প্রটোকলের অঙ্গ। সেখানে সৈন্য সামন্ত নিয়ে রাষ্ট্রের একটি আনুষ্ঠানিকতাই প্রধান হয়ে ওঠে। আর এর ফলে ধীরে ধীরে ভাষা দিবস তার স্বকীয়তা হারিয়ে পরিণত হয় কেবলই এক আনুষ্ঠানিকতায়। আরো পরে এসে করপোরেট কালচারের আগমন ঘটার পর ওই মধ্যরাতের পুষ্পার্ঘ নিবেদনের রসদে যোগ হয় করপোরেট কেতা। সৈন্যদের স্যালুট, গার্ড অব অনার, প্রটোকল মতে রাষ্ট্রের কুশিলবদের ক্রমবিভাজন। প্রটোকল মতে কে কে প্রথমে শহীদ মিনারে যাবেন সেই সব কেতাও চালু করা হয়। আজ এই একবিংশ শতাব্দীতে এসে নির্দ্বিধায় বলে দেয়া যায়- মহান শহীদ দিবস এখন আর ভাষা রক্ষার সেই গৌরবোজ্জ্বল প্রতিবাদের প্রতীক নয়।

আমরা যারা শহীদ দিবসকে কেবলই ভাষা রক্ষার জন্য আত্মত্যাগ বলি তারাও যথাযথ মূল্যায়ন করিনা। সেটি কি কেবলই মাতৃভাষা রক্ষার আন্দোলন ছিল? শুধুই কি ভাষাকে রক্ষা করার জন্য একশ চুয়াল্লিশ ধারা লঙ্ঘন করে ছাত্ররা গুলি খেয়ে জীবন দিয়েছিল? না। যদিও আমাদের একুশে ফেব্রুয়ারির ইতিহাস সেভাবেই লেখা, যদিও সেই বায়ান্ন থেকে আজ এই দুই হাজার এগার সালে এসেও আমরা ইতিহাসে তেমনই বিবরণ দেখি। কিন্তু সেই বায়ান্নর রাজপথের মানুষগুলোর যারা আজো বেঁচে আছেন তারা জানবেন যে সেটি কেবলই ভাষা রক্ষার আন্দোলন ছিল না। ছিল ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ। সেই প্রতিবাদ ভাষা রক্ষার জন্য না হয়ে ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধেও হতে পারত। যেহেতু ঔপনিবেশিক শাসকরা তাদের উপনিবেশের প্রজাদের প্রথমে ভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল, তাই প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিল ভাষা রক্ষার জন্য। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকরা যদি বলত ‘বাংলা বা উর্দু নয়, ইংরেজিই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। তাতেও বাঙালি প্রতিবাদী হত। কেননা সাতচল্লিশে পাকিস্তান গঠনের পর পরই বাঙালির মোহভঙ্গ শুরু। যা একাত্তরে এসে পূর্ণতা পায়। বাঙালি তার স্বাধীন সার্বভৌম স্বদেশ পায়।

আজ এই দুহাজার এগার সালে যদি কোনো কারণে সরকার ঘোষণা করে- ‘এখন থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের মত দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা আরবী হবে’! তাহলে কি বাঙালি তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে? সরকারের বিরুদ্ধে সর্বগ্রাসী আন্দোলন করে অকাতরে রক্ত দেবে? মনে হয় না। কারণ সেটি হলে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করার সময় বা এখন পুনরায় বাহাত্তরের ধর্ম নিরপেক্ষ সংবিধান পূর্ণমুদ্রণের পরও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকতে পারত না। তুলনাটি এজন্য আসছে যে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বাঙালির বিদ্রোহ বা উপনিবেশের বিরুদ্ধে স্বাধীকারের লড়াই-ই একুশের মূলমন্ত্র। ভাষা সেখানে উপলক্ষ মাত্র। এতো গেল গোড়ার দিককার কথা।

করপোরেট কালচারের অবাধ আমদানি এবং ভাষা দিবসসহ অন্যান্য দিবসে সেই কালচারের দবদবানি এতটাই বেড়েছে যে এর পর থেকে শুরু হয়েছে ভাষা দিবস নিয়ে ন্যাক্কারজনক ‘খেলা’। পঁচাত্তরের পর থেকে সেনা শাসনের দিন শুরুর পর বাঙালির সংস্কৃতিতে ‘সৈনিক’ শব্দটির প্রচলন করা হয়। এই সৈন্য শব্দটিকে জুড়ে দেয়া হয় লেখকের সঙ্গে, শ্রমিকের সঙ্গে, চিত্র পরিচালকের সঙ্গে, এমনকি শিক্ষার সঙ্গেও। সর্বশেষ জুড়ে দেয়া হয়েছে ভাষার সঙ্গে। এখন আর বায়ান্নর ভাষা শহীদ নয়, বলা হয় ‘ভাষাসৈনিক’! সৈনিক কালচারের সঙ্গে অপূর্বভাবে গেলানো হয়েছে করপোরেট কালচার। এই দুই অভূতপূর্ব কালচারের তোড়ে হারিয়ে গেছে মহান একুশ। গৌরবের একুশ। আত্মত্যাগের একুশ। স্বাধীনতার অনুঘটক একুশ। স্বাধীকারের বীজতলা একুশ। ঔপনিবেশিক শাসনমুক্তির একুশ। তার বদলে একুশের এখনকার পরিচয়- ‘ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ ডে’!

একুশকে শুধু এভাবেই ‌'নপুংশক' বানিয়ে থামেনি তারা। এর সঙ্গে আরো অনুপান জুড়ে দেয়া হয়েছে। এখন ফেব্রুয়ারি এলেই ডজন খানেক টিভি চ্যানেল আর কুড়ি খানেক সংবাদপত্র হণ্যে হয়ে খুঁজে বেড়ায় সেই সময়কার ‘ভাষাসৈনিকদের’। তাদের একেকজনকে ধরে এনে তাকে দিয়ে স্মৃতিতর্পণ করানো হয়। কে সেই সময় দেয়ালে পোস্টার সেঁটেছিলেন, কে সেই সময়ে মিছিলের ভেতরে কোথাও না কোথাও ছিলেন, কে মনে মনে সেই মিছিলে যেতে চেয়েছিলেন কিন্তু ‘অনিবার্য কারণে’ যেতে পারেননি, কে নিজে না গেলেও তার বাবা-চাচাকে যেতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন তারাও আজ ‘ভাষাসৈনিক’! আর সেই সব ভাষাসৈনিকদের ‘মহামূল্য স্মৃতি’ চড়া দামে ‘কিনে’ এই করপোরেট কালচার ভাষাকে মহিমান্বত করার নামে বাজারি পণ্যে রূপান্তর করে দিচ্ছে।

ঠিক এমনি ঘটনা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও ঘটানো হচ্ছে। যিনি কোনো দিন বন্দুকের বাঁটে হাত রাখেননি, যুদ্ধ তো দূরের কথা, যিনি কখনোই সেই যুদ্ধকে সমর্থন করে পাকিস্তানি বশ্যতা ত্যাগ করে শহর ছাড়েননি, কিংবা নিজের ছেলেকে আদর্শে উদ্বুদ্ধ করে যুদ্ধে পাঠাননি তারাও এখন মুক্তিযোদ্ধা। মহান মুক্তিযোদ্ধা। এদেশে একেকটি সরকার বদলের পর পরই যেমন মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বদলে কখনো স্ফিত হয়, আবার কখনো খর্ব হয়। তেমনি বছরের পর বছর ‘ভাষাসৈনিকদের’ সংখ্যা স্ফিত হচ্ছে। যেহেতু রফিক, জব্বার, সালাম, বরকতদের মত এখন আর মৃত দেখানো সম্ভব হচ্ছে না তাই ‘অংশীদার’ বানানোর কোশেশ চলছে অব্যহতভাবে। এভাবে চলতে থাকলে দুহাজার ত্রিশ সালেও বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের ‘অন্যতম যোদ্ধা’ আবিষ্কার সম্ভব! এমনকি গানিতিক নিয়মে সেই ‘যোদ্ধার’ বয়স বায়ান্নতে এক বছর হলেও!

এটা যে বাঙালি জাতির জন্য কী পরিমান অপরিনামদর্শী এবং সেই ভাষা শহীদদের প্রতি কী পরিমান অপমানজনক তা বোধ করি আমাদের করপোরেট কালচারে ডুব দিয়ে অশেষ পূণ্য হাসিল করা করপোরেট চোগলখোররা বুঝতে পারছেন না। তারা যে বুঝতে পারছেন না তা নয়। তারা সব কিছু বুঝেশুনেই করছেন। কেননা তারা পুঁজির নিয়ম মেনে জগতের সব কিছুতেই পুঁজির অংশীদারিত্ব আবিষ্কার করেন, এবং সব কিছু থেকেই লগ্নিপুঁজির মুনাফা তুলে নিতে চান। আর দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের এই চাওয়াকেই আমাদের বিভিন্ন সরকার সমর্থন করে।

সমাজে আর এক শ্রেণীর কূপমণ্ডুক আছেন যারা মনে করেন সর্বস্তরে বাংলা চালু করলেই ভাষা আন্দোলনে যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে, মর্যাদা দেয়া হবে! তাই তারা ফিবছর গাড়ির নাম ফলক, দোকানের সাইনবোর্ড, বিভিন্ন সতর্কবাণী বা সরকারি নোটিস সমূহ এবং আদালতে বিচারকদের রায় যেন বাংলায় প্রদান করা হয় সেই দাবি তোলেন। তারা ভাবেন এভাবেই ভাষা দিবসকে প্রকৃত সন্মান জানানো হচ্ছে! তাদের এই নিবীর্য কর্মকাণ্ডকে সমর্থন জানিয়ে সমাজের সর্বস্তরে তা চালু করার জন্য তো করপোরেট বণিকেরা বসে আছেন। তারা এসে ভাষা দিবসকে সামনে রেখে ওই এক মাসের বা মাত্র আঠাশ দিনের জন্য বাংলা চালুর মচ্ছব করে চলেছেন।

আমরা একদিকে বাংলা ভাষার স্বকীয়তা, বাংলা ভাষার ‘সতীত্ব’ নিয়ে হাপিত্যেশ করছি, অন্য দিকে আমাদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের অন্যতম ফেরিওলা ইলেক্ট্রনিকস মিডিয়ায়, বিশেষ করে বেসরকারি রেডিও চ্যানেলগুলোতে এক অদ্ভুত ধরণের ‘জারজ বাংলা’ মেনে নিয়েছি!
সারা দিন রাত রেডিও-টিভি চ্যানেলগুলোতে দেশের ধীমানরা জ্ঞানগর্ভ বক্তৃতা দিচ্ছেন, অথচ কেউ প্রতিবাদী হয়ে বলছেন না যে এটা বাংলা নয়! এভাবে বাংলাকে ‘ধর্ষণ’ করার কোনো অধিকার তোমাদের নেই! বলছেন না, প্রতিবাদ করছেন না, সেও তো এমনি এমনি না। সেখানেও বিকিকিনি! ধীমান বুদ্ধিজীবী আলোচকরা জ্ঞানগর্ভ বক্তৃতা দিয়ে তো খালি হাতে ফিরছেন না! তাকেও ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে কড়কড়ে কারেন্সি! কেউ কেউ আবার একে ‘বাক স্বাধীনতা’ নাম দিয়ে এর পক্ষে ওকালতিও করছেন।


মোবাইল কোম্পানিগুলো বাংলায় বার্তা পাঠাচ্ছে, বাংলায় গর্জে ওঠার আহ্বান জানাচ্ছে, বাংলায় এটা পাবেন ওটা পাবেন বলে সাধারণের নাকের ডগায় মূলো ঝোলাচ্ছেন। জাপানি গাড়ি বিক্রেতারা ‘বাংলাকে ভালোবেসে’ গাড়িরে ব্লুবুক বাংলায় করে দিচ্ছে! বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বিষাক্ত শিশুখাদ্যের টিনে বা প্যাকেটে বাংলা লিখে দিচ্ছে! আর এভাবেই বায়ান্নর পর থেকে একেকটি প্রজন্মকে শেখানো হচ্ছে ভাষা আন্দোলন বলতে যা বোঝায় শেষ বিচারে তা হল সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন। এখনকার প্রজন্মও শিখে নিচ্ছে সর্বস্তরে বাংলা, কেবলমাত্র বাংলা চালু হলেই মহান একুশে ফেব্রুয়ারির সার্থকতা আসবে।

করপোরেট বেনিয়াদের সঙ্গে শাসকদের এই সখ্যতা যে মহান একুশকে দ্রোহের প্রতীক থেকে ‘সেলিব্রেশন ডে’ বানিয়ে দিচ্ছে সেদিকে আমাদের বিদ্যা বুদ্ধির ব্যাপারিদের নজর আছে বলে মনে হচ্ছে না। তারা যে এই দিনকে সামনে রেখে বিভিন্ন ফ্যাশন ডিজাইন করছে, কস্টিউম বানাচ্ছে, শাড়ি-পাঞ্জাবীর জমিনে বর্ণমালা বসিয়ে সঙ সাজার প্রতিযোগীতা করছে, গালে-মুখে-হাতে-কপালে বর্ণমালা লিখে দিনটিকে রং উৎসব বা ‘কালারফুল ডে’ বানাচ্ছে। ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে ‘মহান একুশের বইমেলা’ নাম দিয়ে ‘আনন্দমেলা’র প্রচলন করছে, ঘরে ঘরে একুশ উপলক্ষে সেলিব্রেশন ফুডের মেনু বিলোচ্ছে, একে অপরকে শহীদ দিবসের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে! শহীদ বেদিমূলে রাত বারটা থেকে পুষ্পার্ঘ অর্পণের ছবি দিয়ে নিজ নিজ বা গোষ্ঠিগত ক্যারিয়ারকে ইলেক্ট্রিফায়েড করাচ্ছে তাতে করে মোটেই অবাক হওয়া যাবেনা যদি আগামী কয়েক বছর পর শহীদ দিবসে জমজমাট কনসার্টের আয়োজন করে বলিউড-হলিউডের নামকরা গাইয়ে বা অভিনেতা এনে পুষ্পার্ঘ অর্পণের ডেমো করা হয়!

এই বেজন্মা করপোরেট কালচারের ভেতর যারা অতিকষ্টে নিরবে নিভৃতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারের জন্য চোখের জল ফেলছেন তারা সেই দ্রোহ আর সংগ্রামের এই করুণ পরিনতি দেখে কি-ইবা করতে পারি! হ্যাঁ, একটি কাজই করতে পারি। আর তা হলো সেই সব বীর শহীদদের কাছে নতজানু হয়ে করজোড়ে ক্ষমা প্রর্থণা!

২০.০২.২০১১


মধ্যরাতের এই শহীদ মিনার আমার নয়

এই করপোরেট ফ্যাশনও আমার নয়!

এই আমার তেপ্পান্ন সালের একুশ।


সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৪৩
২১০টি মন্তব্য ১৭৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×