‘বিএনপি যদি ক্ষমতায় তরুণ প্রজন্মের সমর্থনে যেতে চায় তাহলে তাকে প্রজন্ম চত্বরের চেতনা মেনে যেতে হবে’
এই কথা শুনে অনেকেই বলবে প্রজন্ম চত্বরের চেতনা তো আওয়ামী লীগ ছিনতাই করে নিয়েছে এর উত্তর হল এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধেই কেননা যখন কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ঘোষণা হল তখন ব্লগে ও ফেসবুকে রটে গেল যে ‘আওয়ামী লীগ ও জামাতে ইসলামীর মাঝে সমাজতা হয়েছে যে জামাত যদি বিএনপির সাথে জোট না রাখে তবেই আওয়ামী লীগ জামাতের অনুকূলে যাবে’ তারপর অল্প কিছু ব্লগার দেশপ্রেমে উদবুদ্ধ হয়ে শাহবাগ যাদুঘরের সামনে সমবেত হল প্রতিবাদে! তারপর থেকে ইতিহাস ‘প্রজন্ম চত্বরের’!
আওয়ামী লীগের পলিসি ম্যাকাররা সম্ভবত সুপার সনিক গতিতে চলে তাই তারা প্রথমেই এমন একটি অবস্থানে চলে গেল যাতে আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছিল যে আওয়ামী লীগ বলতে চাইছে এই দেশ তরুণ প্রজন্মের আমরা তার খাদেম মাত্র
কিন্তু একি সময়ে বিএনপিকে মনে হচ্ছিল কিংকর্তব্যবিমূঢ়্য তারা এই তরুণদের সাথে আছে আবার ‘মোবাইল ফোন কোম্পানিদের মত শর্ত প্রযোজ্য ভ্যাট প্রযোজ্য’ বলে বলছে আওয়ামী লীগ প্রজন্ম চত্বরের দেশপ্রেম মূলক দাবী গুলোকে ‘অনুকূলকরন’ করছে কিন্তু এখানে কিছু প্রশ্ন উঠে! প্রজন্ম চত্বরের আন্দোলনে কারা অংশগ্রহণ করেছিল, তারা কি চাইছিল, কিভাবে তারা পেতে চাইছিল?
প্রজন্ম চত্বরের আন্দোলনে কারা অংশগ্রহণ করেছিল?
ওরা যারা তরুণ। এই তরুণ গুলো কারা? ওরা যারা বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অদ্ধ্যায়ন করছে! আমরা ভিবিন্য আন্দোলনে সরকারি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের দেখি কিন্তু বেসরকারি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের দেখিনা কারন বেসরকারি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা হল ওরা যারা সরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়ে রাজনৈতিক বিড়ম্বনায় পরতে চায়না কিন্তু এবার দেখা গেল যে ছাত্র সমাজের সবায় সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এমনকি হাই স্কুলের ছেলে মেয়ে সহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রিরা বাবা মার হাত ধরে শাহবাগ চত্বরকে প্রজন্ম চত্বরে পরিণত করলো!
তারা চাইছিল রাজাকারের ফাঁসি ততপরবর্তীতে রাজাকারির সাথে জড়িত রাজনৈতিক প্রতিস্থানের নিষিদ্ধতা!
কিভাবে তারা পেতে চাইছিল? এই প্রজন্ম চত্বরে সমবেত যারা হয়েছিল যারা তারা নিজেদের দাবী শুনাতে এসেছিল রাজনীতিবিদ ও রাজনীতিজ্ঞদের! রাজনীতিবিদ ও রাজনীতিজ্ঞরা কিভাবে শুনতে পারতেন?
দাবী যখন শুরু হল তখন ফেব্রুয়ারি মাস (এখনো ফেব্রুয়ারি চলছে তবেঁ তা বড় কথা নয়) এই সরকার এই মেয়াদে আর মাত্র ১০ মাস আছে তাই বিএনপি যদি এই রকম ভাবে প্রজন্ম চত্বরে আসতে পারতো, তারা আসতো এবং বলতো প্রজন্মকেঃ
১।
জামাত শিবিরের সাথে আমাদের ঐক্য রাজনৈতিক এমন ঐক্য আওয়ামী লীগও করেছে, এটা নীতিগত আপোষ রফা নয় কিন্তু এখন যেহেতু নতুন প্রজন্ম চাইছেনা তাই আমরা ওয়াদা করছি জামাত শিবিরের সাথে আর নয় এবং অন্য কেউ ওদের সাথে থাকতে চাইলে বা কোন অপসুযোগ নিলে আমরা ছাড় দিবনা তাদের। ২।
রাজাকারদের গন হত্যার প্রমানে শাস্তি যাতে ফাঁসি হয় তা নিশ্চিত করা
৩।
জামাত শিবিরের রাজনীতি আইন করে, সামাজিক ভাবে নিষিদ্ধ ও বয়কট করা হবে।
৪।
বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যত দুর্নীতি হয়েছে তার নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের শাস্তি ও তাদের রাজনৈতিক অধিকার বিলোপ। এইরকম ভাবে তারা আসলে অনেক বেশি বাস্তববাদিতার ও কৌশলী হিসেবে তরুণ প্রজন্মের সামনে তারা হাই লাইতেদ হতে পারতেন এতে ২০১৪ এর নির্বাচনের আগেই তারা কোন রকম জোট গঠন ছাড়ায় তারা নিজেদের তরুণ প্রজন্মের দল হিসেবে রিনিউ নবায়ন রিফ্রেশ করে নিতে পারতেন।
৫।
নির্বাচনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে নিপাট ভদ্রলোক দক্ষ ও সৎ লোক মনোনীত করতে হবে। সন্ত্রাসী, যারা ব্যাবসার জন্য রাজনীতি করে ও দুরনিতিবাজ তাদেরকে ছুড়ে দিতে হবে! আর আওয়ামী লীগ যদি প্রজন্ম চত্বরের দাবীকে মেনে নিয়ে কাজ করতে চায় তাহলে বলতে হয়ঃ
১।
হাতে আছে ১০মাস অতিমানবিক গতিতে তরুণদের জন্য তরুণদের দেশমাতৃকার জন্য কাজ কাজ করতে থাকুন
২।
জামাত শিবিরের রাজনীতি আইন করে, সামাজিক ভাবে নিষিদ্ধ ও বয়কট করতে হবে
৩।
বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যত দুর্নীতি হয়েছে তার নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের শাস্তি ও তাদের রাজনৈতিক অধিকার বিলোপ।
৪।
নির্বাচনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে নিপাট ভদ্রলোক দক্ষ ও সৎ লোক মনোনীত করতে হবে। সন্ত্রাসী, যারা ব্যাবসার জন্য রাজনীতি করে ও দুরনিতিবাজ তাদেরকে ছুড়ে দিতে হবে! এই দাবী গুলো যদি কেউ পূরণ করতে পারে তবেই সে তরুণ প্রজন্মের দল। আর যে এইখানে সুযোগ খুজবে বা সুযোগ না পেয়ে বিষদগার করবে তাদেরকে তরুণ প্রজন্ম নিজেরা প্রতারিত হয়ে চিনে নিবে! আর তরুণ প্রজন্ম প্রতারিত ও ব্যাবহার হতে চায়না কারন তারা মনস্তাত্ত্বিক দাসত্বকে ঘৃণা করে! তরুণ প্রজন্মের চোখ বাধা নেই তারা দেখছে, তরুণ প্রজন্ম স্বাধীন মনস্তাত্ত্বিক দাসত্ব থেকে। তরুণ প্রজন্ম দাবী থেকে সরে যায়নি, যাবেনা! তাদের উঠে দাড়াতে না দিলে তারাও, কাউকে উঠে দাড়াতে দিবেনা!