কোন ইমামের অন্ধপক্ষপাতিত্ব মানুষকে কত যে গোমড়াহীতে পতিত করে তা সে বুঝতে পারে না। যতদিন সে অন্ধ তাক্বলীদের শৃংখলে আবদ্ধ থাকবে ততদিন সে বুঝতেও পারবে না যে, সে কি ভুল করছে? কারন সে তো তার ইমামের মত ছাড়া অন্য মত বা দলিল যাচাই করে দেখার প্রয়োজনও বোধ করে না।
-
তার মন-মগজ, বিচার-বুদ্ধি যখন এটাই মেনে নিয়েছে যে, তার ইমাম-ই একমাত্র হক্ব, তখন সে তার ইমামকে শ্রেষ্ঠ প্রমান করতে গিয়ে অন্য ইমামদের সম্পর্কে কুৎসা রটনা করতে তাদের একটুও ভয় লাগে না। এই কুৎসা মানুষের নিকট গ্রহণযোগ্য করতে তখন রাসুল ﷺ এর নামেও মিথ্যা হাদীস তৈরী করতে সে পিছপা হয় না।
প্রমান স্বরুপ নিচের হাদীসটি দেখুন-
-আমার উম্মতের মধ্যে একজন ব্যক্তি আবির্ভূত হবে যাকে মুহাম্মদ বিন ইদরীস (শাফেঈ) বলা হবে, সে আমার উম্মতের মাঝে ইবলীসের চেয়েও ক্ষতিকর। পক্ষান্তরে আমার উম্মতের মধ্যে আর একজন ব্যক্তি হবে তাকে বলা হবে আবু হানিফা, সে হবে আমার উম্মতের প্রদীপ !
[জাল হাদীস !]
দেখলেন কি নিলর্জ তাক্বলীদে শাখছির হাক্বীকত! অনেক অজ্ঞ ও পক্ষপাতদুষ্ট হানাফী এখনও এ হাদীসটি ইমাম আবু হানিফার প্রশংসায় পাঠ করে থাকে। বর্তমান যামানার দেওবন্দী ফেক্বার মহাশ্রদ্ধাভাজন বিশ্ববিদ’আতী ও কবরপুজারী জাহমী আলেম যাহেদ কাওছারী এই জাল হাদীসক সহীহ প্রমাণ করার ব্যার্থ চেষ্টা চালিয়েছেন।
[ত্বানীবুল খাত্বীব পৃঃ৩০ থেকে বায়ানু তালবীসিল মুফতারী মুহাম্মদ যাহিদ আল কাওছারী, পৃঃ১৩৭-১৩৯, শারহুল আক্বীদাহ আত্ ত্বাহাবিয়্যাহ, আলবানীর ভুমিকা পৃঃ৫১]
তাহ্বকীকঃ
======
১। এ হাদীস সম্পর্কে ইমাম ইবনুল জাওযী (রহ) বলেন,
-হাদীসটি জাল। এই হাদীস জালকারীর উপর আল্লাহর লা’নত করুন। এই লা’নত তথা অভিশম্পাত থেকে দুইজন ব্যক্তির একজনও বাদ পড়বে না। তার হলো মামুন ও জুওয়াইবারী। তাদের উভয়ের মধ্যে কোন কল্যাণ নেই। এরা উভয়ে হাদীস জাল করতো। [আল-মাওযু’আত (১/৪৫৭) ]
২। ইমাম আছবাহানী (রহ.) বলেন,
-এজাতীয় লোক আল্লাহ, রাসুল এবং সকল মুসলীমদের অভিশাপ পাওয়ার যোগ্য। [আয যুআফা ১/১৫০]
৩। হাদীসটি যে জাল তা জানতে আরো বিস্তারিত দেখুন-
(i ) সিলসিলাতুল আহাদীস আয যঈফাহ ওয়াল মাওযুআহ হা/৫৭০;
(ii ) কিতাবুল মাজরূহীন ৩/৪৬
(iii ) আয যুআফা ১/১৫০
(iv ) তারিখে বাগদাদ ১৩/৩৩৫