--------------------------------------
আলহামদুলিল্লাহ। সমস্ত প্রশংসা একমাত্র মহান আল্লাহ্ তা’আলার।
রাসুলুল্লাহ ﷺ কে আমাদের জীবনের সব কিছুর থেকে বেশি ভালবাসতে হবে। রাসুলুল্লাহ ﷺ কে ভালবাসা মানেই আল্লাহ্ কে ভালবাসা। কারন মহান আল্লাহ্ বলেন,
وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانتَهُوا
“রাসুল যা দিয়েছেন তা গ্রহণ কর। রাসুল যা নিষেধ করেছেন তা বর্জন কর। [হাশর-৭]
এ নির্দেশের লক্ষ ও উদ্দেশ্য নবীর ﷺ আদেশ ও নিষেধের আনুগত্য করা। রসূলুল্লাহ ﷺ নিজেও একথাটি বলেছেন। হযরত আবু হুরাইরা (রা) বর্ণনা করেছেন যে, নবী ﷺ বলেছেন,
“আমি কোন বিষয়ে তোমাদের নির্দেশ দিলে তা যথাসাধ্য পালন করো। আর যে বিষয়ে বিরত থাকতে বলি তা থেকে দূরে থাকো।” [বুখারী, মুসলিম]
মহান আল্লাহ্ আরও বলেন,
وَمَن يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَىٰ وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّىٰ وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ ۖ وَسَاءَتْ مَصِيرًا
সরল পথ প্রকাশিত হওয়ার পর যে কেউ রসূলের বিরুদ্ধাচারণ করে, এবং সব মুসলমানের অনুসৃত পথের বিরুদ্ধে চলে, আমি তাকে ঐ দিকেই ফেরাব যে দিক সে অবলম্বন করেছে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। আর তা নিকৃষ্টতর গন্তব্যস্থান। [সূরা নিসা-১১৫]
অর্থাৎ আমরা বুঝতে পারছি আমাদের রাসুল ﷺ এর আনুগত্য করতে হবে। সব কিছুর উপর রাসুল ﷺ কে ভালবাসতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো আমরা কি আসলেই আমাদের মা-বাবা, ছেলে-মেয়ে, পরিবার-পরিজন থেকে তাঁকে বেশি ভালবাসতে পারব?
রাসুল ﷺ কে আমরা কেউ স্ব-চোখে দেখিনি। অনেকর কাছে মনে হতে পারে এটা কি সম্ভব যাকে কোনো দিন দেখলাম না তাঁকে শুনে শুনেই এত বেশি ভালবাসা যায়! এটা কি সম্ভব? তার উপর সকল আত্মীয়-স্বজন থেকেও? এটা তো খুবই কঠিন একটি কাজ।
আসলে এইরকম মনে হতেই পারে। কারন আমাদের দেশে যে প্রচলিত ইসলাম এই ইসলাম দিয়ে খাঁটি মুসলিম হওয়া আমাদের পক্ষে কি সম্ভব? বাংলাদেশের চলন্ত ইসলামের সাথে প্রকৃত ইসলামের কোন মিল নাই। সত্যিকার ইসলামের সর্বোচ্চ ৫%-১০% আমরা হয়ত জানি। মানি তার চাইতেও কম! কি বিশ্বাস হয় না? দেখুন রাসুলুল্লাহ ﷺ কে ভালবাসার নামে মূলত তাঁর নামে মিথ্যাচার করা হচ্ছে আমাদের দেশে। ভালবাসা প্রকাশ করতে গিয়ে, তাঁর প্রতি মহব্বত দেখাতে গিয়ে বলা হচ্ছে-
*) রাসুল ﷺ নূরের তৈরী!
*) তাঁকে সৃষ্টি করা না হলে দুনিয়া সৃষ্টি হত না!
*) আল্লাহ্ সর্ব প্রথম তাঁর নূর কে সৃষ্টি করেছেন!
*) তাঁর নাম শুনে দুই হাত ঠোঁটে স্পর্শ করে দুই চোখে স্পর্শ করছেন!
*) ঈদে মীলাদুন্নবী শ্রেষ্ঠ ঈদ!
*) রাসুলুল্লাহ রাসুলুল্লাহ জিকির।
*) রাসুলুল্লাহ ﷺ গায়েব জানতেন!
*) রাসুলুল্লাহ ﷺ হাজির নাজির!
*) দুরুদে তাজ, লাখী, হাজারি ইত্যাদি শিরক মিশ্রিত বানানো দুরুদ পাঠ করা!
*) ১০ই মরহমে হাসান-হোসেন (রঃ) শাহদাতের শোকে মাতুম করা
*) শবে বরাতে হালুয়া রুটি তৈরী করা।
অথচ এই কথা ও কাজ গুলো যে সম্পূর্ন মিথ্যা বানোয়াট তা আমরা অনেকই জানি না। এই কাজগুলোর কোন দলিল শরীয়তের মধ্যে আছে কিন কোন দিন যাচাই-বাচাই করি না।
আবার অনেকের ভালবাসা আরও এক ডিগ্রী উপরে। তারা মা-বাবা থেকেও রাসুলুল্লাহ ﷺ কে বেশি ভালবাসা দেখাতে গিয়ে মানুষ আরও যা যা করছে তা হলো:
*) মা বাবা পরিবার ছেড়ে দিয়ে ৪০ দিনের চিল্লায় চলে যায়!
*) মা বাবার তোয়াক্কা না করে ঈদে মিলাদুন্নবীতে নিজেকে নিয়োজিত করে!
*) সংসার বৈরাগী হওয়া!
*) সংসার সম্পর্কে উদাসীন হওয়া!
*) বিভিন্ন মজলিশে উচ্চ শব্দে জিকির আজকার করা!
এগুলোও রাসুলুল্লাহ ﷺ কে ভালবাসার নমুনা তো নয়ই বরং এগুলো পালনের নামে রাসুলুল্লাহ ﷺ কে অপমান করা হয়। কারন এগুলো সু-স্পষ্ট বিদআত ও ভ্রান্ত বিষয়। আর আপনার যদি মনে হয় এগুলো বিদাত ও ভ্রান্ত বিষয নয় তাহলে আপনার দায়িত্ব এগুলো যে বিদাত ও ভ্রান্ত বিষয় নয় তা কোরআন ও হাদিসের দলিল দিয়ে প্রমান করা।
যেহেতু এগুলো বিদায়াত ও ভ্রান্ত আকিদা আজ থেকে আপনি এগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করুন। আর এগুলো আপনার পরিবার থেকে মুছে দিতে পারলেই রাসুল ﷺ কে সবার চাইতে সত্যিকারের ভালবাসা হবে।
তাই আজ থেকে -
১) রাসুল ﷺ এর মত সালাত আদায়:
------------------------------
আজই পরিবারের সদস্যকে বলুন,
-“সালাতে মুখে উচ্চারনে কোন নিয়ত নাই, জায়নামাজের দোয়া নাই, নাই নামাজ শেষে সাম্মিলিত কোন দোয়া, সালাতে রফুলল ঈয়াদাঈন করা নবীর একটা সুন্নত।” নামাজে শেষের রাসুল (স এর জিকির সমূহ তাদের শিক্ষা দিন। আপনার আম্মাকে বলুন,
-“মা তুমি আর আগের মতো সালাত আদায় করবে না। সহীহ হাদিস অনুযায়ী ছেলে-মেয়ের নামাজে কোন পার্থক্য নাই। এখন থেকে তুমি সিজদায় বুককে মাটির সাথে লেপটে রাখবে না। এমন ভাবে জিসদা দিবে যেন মাটি আর বুকের ফাঁক দিয়ে ছাগলের বাচ্চা চলে যেতে পারে।’ আপনার আম্মা হয়তো প্রথমে আপত্তি করবে। বলবে,
- ‘এই তুই কি কস? ছোট কাল হতেই এভাবে নামাজ পড়ে আসতেছি। অত বড় আলেম-উলামারা কি আমাদের ভুল শিখাইছে নাকি?’ আপনি তখন বলুন,
-‘হ্যাঁ, আম্মাজান উনারা আমাদের ভুল ধর্মই শিখিয়েছে। এই সব আলেমদের হয়তো কোন দোষ নাই! কারন তাদের উস্তাদও তাদেরকে ভুল ধর্ম শিখাইছে। এই যে দেখে দলিল!’
এভাবে তাদেরকে নামাজের সহীহ দলিল দেখান। হাদিসের বই সহ, নাম্বার সহ দলিল দেখান। এভাবেই তাদেরক তাদেরকে নসীহত করতে থাকুন। তাদের বলুন,
-‘যত দিন তোমরা রসুলের ﷺ দেখানো নিয়ম অনুযায়ী সালাত আদায় করবে না তত দিন আমি তোমাদেরকে নসীহত করেই যাব। কারন আমি তোমাদেরকে ভালবাসি এবং রাসুলুল্লাহ ﷺ কেও ভালবাসি।’
২) বাজার থেকে চুন, জর্দা, সিগারেট কিনে না আনা:
-----------------------------------
রাসুলুল্লাহ ﷺ কে বেশি ভালবাসার দাবী হচ্ছে আজ হতে আপনার মা-বাবা, বড় ভাই-বোনকে বলবেন,
-“সিগারেট, চুন, জর্দা প্রভৃতি শরীরের জন্য ক্ষতিকর সুতরাং হারাম। আজ থেকে আপনারা এটা আর খাবেন না। আমি তোমাদের আর এটা কিনে দিতে পারবো না।” আপনার মা-বাবা হয়তো বলবেন,
-“কেন রে বাবা! চুন জর্দা কি হারাম?” আপনার বাবা হয়তো বলবে,
-“এতো দিন জানতাম সিগারেট খাওয়া মাকরুহ! আজ তুই বলছিস হারাম?” আপনি তাদেরকে এগুলোর হারাম হওয়ার দলিল দিন কোরআন ও হাদিস হতে। তারপর তাদেরকে মুসনাদে আহমাদ এর ঐ হাদিসটি শুনান যে হাদিসে রুসূল ﷺ বলেছেন, ‘তিন শ্রেনীর মানুষের উপর জান্নাত হারাম, যার প্রথম শ্রেনী হলে যারা নেশাদার দ্রব্য পান করে (যেমন গাঁজাখোর, মদখোর, জুয়ারিখোর, ফেন্সিডিলখোর,বিড়িখোর,হিরোইন খোর,মদখোর, আলাখোর,জর্দাখোর ইত্যাদি)।’”
এটাই হলো রাসুলুল্লাহ ﷺ কে ভালবাসা মা-বাবার উপর।
৩) মা-বাবাকে মাজারে নিয়ে না যাওয়া:-
----------------------------
আপনার মা বাবা যদি পীর পন্থী বা মাজার পন্থী হয়ে থাকেন তা হলে আজই তাদের বলুন এগুলো শিরক। তাদের বলূন,
-“আজ থেকে আমি আর তোমাদের মাজারে নিতে পারবো না।” বয়স্ক মা-বাবার আবদার রক্ষায় যদি তাদেরকে মাজারে, পীরের দরগায়, ওরসে নিয়ে যান তা হলে কিন্তু এটা মা-বাবার প্রতি ভালবাস প্রকাশ পাবে ঠিকই কিন্তু এই ভালবাসা রাসুলুল্লাহ ﷺ এর প্রতি ভালবাসাকে ছাপিয়ে যাবে। তাই তাদের বলুন,
-“আমি তোমাদের ভালবাসি। কিন্তু এগুলো শিরকী কাজ। আমি সন্তান হয়ে তোমাদের কি কোন শিরকী কাজে নিযে যেতে পারি বল?”
৪) তজবী দানা দিয়ে তাসবীহ গনন:
--------------------------
মা-বাবা ও ঘরের অন্যান্য আত্নীয়-স্বজনকে আজকেই বলুন,
-“তোমরা আজ হেই তাজ্বী দানা দিয়ে আর তাসবীহ গুনবে না।“ তারা হয়তো বলবে,
- “কেন কি হইছে বাজান? আমি এই তজবী দিয়ে তাসবীহ গুনি। তোর অসুবিধা কী?” তাদেরকে বিনয়ের সাথে বলুন,
-“দেখ বাবা!, জানো না হয়তো এই তজবী সুন্নতের বরখেলাফ। তিরমিজির হাদিসে আছে রসুলুল্লাহ ﷺ ডান হাতের অঙ্গুলে তাসবীহ গুনতেন তসবীহ দানাতে গুনলে শুধু জিকিরের সওয়াব পাবে আর ডান হাতের আঙ্গুলে গুনলে একাধারে সুন্নত অনুসরণের, জিকিরের সয়াব পাওয়া যাবে সাথে আঙ্গুলগুলো স্বাক্ষী দিবে, কিন্তু তসবিহ দানা স্বাক্ষী দিবে এমন কোন প্রমান সহীহ হাদসে পাওয়া যায় না।”
৫) বাসা বা মসজিদে মিলাদের অনুষ্ঠানঃ-
----------------------------
আপনি কি লক্ষ্য করেছেন সহীহ আক্বীদা গ্রহন করার পরও আপনার পরিবারের কেউ কেউ এখনও বাসায় বা মসজিদের মিলাদের অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। রাসুল ﷺ কে ভালবাসার দাবী কি ভুলে গেলেন? আপনার উপর ওয়াজিব হচ্ছে যখন সত্য জেনে গেলেন তখন আপনার পরিবারে এগুলো বন্ধের পদক্ষেপ নিতে হবে। বাঁধা দিন সকল প্রকার মিলাদের অনুষ্ঠান এবং এই জাতীয় দোআ দরুদের অনুষ্ঠানের।
৬) মায়ের হাতে তামার বালা/বাবার হাতে অষ্ট ধাতুর আংটি:
----------------------------------------
দেখুনতো আপনার বাবার আংগুলে কোন অষ্ট ধাতুর আংটি আছে কিনা। যদি থাকে তা আজই খুলে ফেলতে বলুন। আপনার আম্মার হাতে কোন বালা আছে কিনা দেখুন। থাকলে বলুন,
-“মা, তুমি বাত্ ভাল হবে মনে করে যে বালা পড়েছ তা আজ থেকে আর পড়তে পারবে না। মা এই জিনিস তুমি এখনই খুলে ফেল।” তিনি হয়তো বলবেন,
-“আমার বাতের ব্যাথার জন্য এটা পড়ি আর তুই বলছিস খুলে ফেলব? তুই কি বলিস?”
-“আমু তোমাকে আমি অনেক ভালবাসি, আর আরও বেশি ভালবাসি রাসুলুল্লাহ ﷺ কে। এই রকম বালা পড়তে রসুল ﷺ নিষেধ করেছেন। এগুলা পড়া শিরক। এই বালা তোমার বাত তো ভাল করবেই না বরং আরও বাড়াবে। রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন বাড়বে তাই বাড়বে। অবশ্যই বাড়বে।”
৭) শবে বরাতের হালুয়া-রুটিঃ
-----------------------
শবে বরাতের হালুয়া রুটির চল যদি এখনও আপনার পরিবারে চালু থাকে, এখনও যদি আপনার পরিবার শবে বরাতে বাড়িঘর আলোকিত করে থাকে তা হলে আপনার আম্মু-আব্বুর কাছে গিয়ে বলুন,
-“আম্মা আজকের দিনে তুমি কোন হালুয়া রুটি বানাবে না। কারন এটা বিদআত, এটা করলে তুমি গুনাহগার হবে।”
-“গুনাহ! হালুয়া, রুটি বানাইলে, মিসকিনরে দিলে আবার গুনাহ হয় নাকি?”
-“আম্মা এটা বিদআত। এই কাজের কোন শরীয়ার ভিত্তি নাই। নবী ﷺ, তাঁর সাহাবী, তাবেয়ী, তাবে-তাবেঈন কারো থেকেই এই কাজের কোন প্রমান নাই। এখন তুমি বলো এটা কি করা উচিত?”
-“তো আজকের দিনে আমি কি করবো?”
আপনি আপনার মা-বাবাকে শবে বরাতে সম্পর্কিত সহীহ ও জ্বাল-জঈফ হাদিসগুলো শুনান। কি করা উচিত আর কি করা উচিত না তার শিক্ষা দিন।
এই ধরনের আরও বহু বিদাতী বিষয় রয়েছে যেগুলো আপনি আপনার পরিবারে কারও মাঝে উপস্থিত আছে কিনা দেখুন। থাকলে সে সব বিষয় হতে তাদেরকে দূরে রাখার চেষ্ঠা করুন। নিচে আরও কিছু বিষয় উল্লেখ করলাম যেগুলোও বন্ধ করা উচিত। আর এভাবেই আমরা আমাদের মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন সকলের চাইতে রসুল ﷺ কে সবচাইতে বেশী ভালবাসতে পারবো।
আরও যেই সব বিষয়ের ব্যাপারে পরিবারের সদস্যদেরকে হেদায়েত দিবেন তা হলো:
-----------------------------------------------------
*) টাখনুর নীচে কাপড় না পড়া!
*) তাবিজ ব্যবহার না করা!
*) সহিহ হাদিস মান্য করা, জাল/জঈফ হাদিস পরিত্যাগ করা!
*) জন্মদিন, মৃত্যুদিন, চারদিন, চল্লিশা পৃভৃতি দিন পালন না করা!
*) হ্যাপি নিউ ইয়ার/পহেলা বৈশাখ ইত্যাদি পালন না করা!
*) গুরুজনদের কদমবুসি না করা!
*) ঘরের মহিলাদের পর্দার মধ্যে রাখা!
*) ঘরের টেলিভিশনের অশ্লীল চ্যানেল বন্ধ রাখা!
*) ঘরের পুরষুদেরকের দাড়ি শেভ করতে না দেওয়া।!
*) মাঝহাবী ভুল বিষয়গুলো বাদ দেওয়া!
*) ইমামদের অন্ধ তাকলীদ না করা!
মহান আল্লাহ্ আমাদের সঠিক দ্বীন বুঝার ও তা পালন করার তৌফিক দান করেন।
আমিন।