- মানে?
- আরে ব্যাটা, এই সরকারের কথা কইতাছি।
সোহেলের মুখে এইটা শুনে অবাক হই। কারণ তারে আমি জানতাম বর্তমান সরকারে একজন ডাইর্হাড ফ্যান হিসেবে। রাজনীতিবিদের প্রতি তার চরম বিতৃষ্ণার কথাও আমার অজানা নয়।
তাহলে সরকারের বিরুদ্বে এমন ক্ষোভের কারণ কি? হিসাব কষে বের করার চেষ্টা করি। না-হিসাব মেলাতে পারি না। হাল ছেড়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করি
- তুই কি তাহলে রাজনীতিবিদের পক্ষে চলে গেলি?
- না। তবে এখন যারা ক্ষমতায় আছে ওরা তো রাজনীতিবিদের থাইক্যাও জগন্য।
- ক্যামনে কি? বুঝাইয়্যা কও।
- দেশের অর্থনীতির অবস্হাটা দেখ। জিনিস পত্রের দাম আগুন। বিদ্যুৎ আর গ্যাস সংকটে দেশ। দেশের রাজস্বের সিংহভাগ আসে প্রবাসীদের পাঠানো টাকায়। অথচ সেই প্রবাসে বাংলাদেশের শ্রমবাজার একে একে নষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে। দেশের এইসব সমস্যা সমাধানে সরকারের কোন কার্যকরী উদ্যোগ চোখে পড়ে না। দেইখ্যা মনে হয় এইগুলান নিয়া সরকারে কোন মাথা ব্যাথা নাই।
- হুমম।
- আসলে কি জানস- এদের বাসায় এসি, অফিসে এসি, চলাফেরা করে এসি গাড়িতে। জনগণের কষ্টে ভারি বাতাস এদের স্পর্শ করতে পারে না।
তারপরও মাইন্যা নিতাম। যদি দেখতাম, যে রাজনৈতিক গুনগত পরির্বতনের ঢোল বাজিয়ে উনারা ক্ষমতার চেয়ারে বসছে তার বাস্তবায়নে আন্তরিক। কাজের কাজ কিছু হইত্যাছে না। মাঝখান থেকে সাধারণ জনগণের জান শেষ।
- ইউনুস সাহেব তো সাধারণ গরিব দুঃখী লোক নিয়ে কাজ করেন। উনি রাজনীতি করলে হয়তো দেশের কিছু হতো। কেনো যে শেষ পর্যন্ত রাজনীতিতে আসলেন না।
- আরে! ঐ ব্যাটাতো পুরা সুবিধাবাদী। স্টান্টবাজ। নাইলে দেশের প্রাকৃতিক বিপর্যয়, অর্থনৈতিক বিপর্যয় এবং সম্প্রতি বিদেশে বাংলাদেশীদের যে সমস্যা - এইসব দুঃসময়ে তারে সাধারণ লোকের পাশে দেখা যেত। খালি পেটে দই খাওয়াইয়া যে পাবলিক দেশের নেতা হইতে চায় তারে নিয়া মাতামাতি কইরা সাময়িক শান্তি পাইলেও আখেরে কোন লাভ নাই।
ডঃ ইউনুস আমার অনেক প্রিয়। নোবেল পাওয়া পর পত্রিকায় ছাপা হওয়া উনার একটা রঙিন পোস্টার এখনো আমার ঘরে দেয়ালে লাগানো- পেছনে নীল আকাশ, উনি দুইহাত পাখির ডানার মতো মেলে আছেন। দেখে মনে হয় এক্ষুনি আকাশে উড়াল দেবেন। সোহেলকে উনার সর্ম্পকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে প্রসঙ্গ পাল্টাই।
- আচ্ছা..তুই তোর প্রিয় জেনারেলরে নিয়া কিছু বললি না? সবাইতো বলে সবকিছু চলে উনার বুদ্বিতে।
- দূর! ঐটাতো হো.মো'র চেয়ে অধম।............... ..। ..........।
তারপর সোহেল যা বলে এইগুলা আর লিখতেছি না। কারণ আপনারা ভাল করেই জানেন।
কষ্ঠ লাগে দূর্ভাগা এই দেশ মা আর তার সন্তানদের জন্য......
বার বার রাজনৈতিক আর অরাজনৈতিক শাসকগোষ্টির দূষ্টচক্রের হাতে এভাবে নির্যাতিত হতে দেখে।
প্রশ্ন জাগে মনে...সুদিন কি আদৌ কোনদিন আসবে?
লক্ষণ দেখে তো মনে হয় না।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০০৮ রাত ৯:৩৪