somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হরতালে গাড়িতে আগুন দিতে ১৫ হাজার, ভাঙচুর ৫ হাজার টাকায়

১৯ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



হরতালে জমে উঠেছে কর্মী সাপ্লাই ব্যবসা। দেওয়া হচ্ছে অস্ত্র ভাড়াও। আর এসবের বিনিময়ে মোটা অংকের অর্থ কামাচ্ছেন কমিশনভোগী সাপ্লাইয়াররা।

বাংলানিউজের অনুসন্ধ‍ানে দেখা গেছে, রাজধানী ঢাকা তো বটেই, দেশের বিভিন্ন শহরে, এমনকি দেশের বাইরেও নগদ লোক ভাড়া করে জমিয়ে তোলা হচ্ছে হরতাল, বিক্ষোভ, মিছিল আর মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি।
রাজধানীতে ভাড়ায় নাশকতামূলক তৎপরতা চালায় এমন এক গ্রুপের প্রধান বজ্জাত হোসেন (ছদ্দনাম)বাংলানিউজকে জানান, গাড়ি পোড়াতে হলে ১৫ হাজার টাকা লাগে। ভাঙচুর হয় ৫ হাজারে। আর ঝটিকা মিছিলের জন্য দেওয়া হয় জনপ্রতি ১শ’ টাকা করে।

এসবের বাইরে কোন অস্ত্র নিয়ে কোন কর্মসূচিতে অংশ নিলে প্রতিটির জন্যই আছে নির্ধারিত ভাড়া।

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে প্রতিটি আগ্নেয়াস্ত্রের জন্য পাঁচ হাজার টাকা ভাড়া দেওয়া হয় বলে অভিযোগ আছে। এ শহরের মিছিলগুলোতে প্রায়শই যে তলোয়ার দেখা যায়, সেগুলোর জন্য ভাড়া দেওয়া হয় দু’হাজার টাকা করে।
লোক ও অস্ত্র ভাড়া করার এমন রাজনৈতিক সংস্কৃতি সম্প্রতি দেশের সীমানা ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিদেশেও।
ইদানিং নিউইয়র্কের মতো শহরেও আড়াইশ’ থেকে পৌনে তিনশ’ ডলারে রাজনৈতিক কর্মসূচির জন্য লোক ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে।

রামপুরা এলাকার এক গলিতে দাঁড়িয়ে গাড়ি পোড়াও-ভাঙচুর চক্রের নেতা বজ্জাত হোসেন জানান, রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় আয় রোজকার বেশ ভালই হচ্ছে তার। এ ব্যবসায় ‍বাকি কোন কারবার নেই। আগাম টাকা পেলে তবেই অপারেশনে যান তিনি ও তার গ্রুপ। তবে চুক্তি বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হলে ওই দিনই টাকা ফেরৎ দেন তিনি। ব্যবসা দু’নম্বর হলেও কথায় তিনি এক নম্বরই বটে।

৩৫ বছর বয়সী এই যুবক বিগত বিএনপি সরকারের সময়ে এ পেশায় নাম লেখান। এটাই নাকি তার এখন অন্যতম ব্যবসা। দীর্ঘদিন ধরে এ লাইনে থাকলেও কখনই ধরা পড়েন নি। এমনকি কোন মামলা হয় নি তার নামে।

বজ্জাত জানান, এ লাইনে যখন আসেন তখন তিনি ছিলেন ছাত্রদল কর্মী। দলীয় পদের জন্য লবিং করে ব্যর্থ হয়ে দল ছাড়েন।

রাজধানীর বনশ্রী এলাকার থাকেন তিনি। তবে তার নেটওয়ার্ট পুরো রাজধানী জুড়ে। হরতালের আগের দিন রোববারও(গতকাল)একটি গাড়ি পুড়িয়েছেন পল্টন এলাকায়।

এর টাকা কে দিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বড় ভাই দিয়েছে। নাম বল‍াটা ঝুঁকিপূর্ণ। ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই সে নাম প্রকাশ করবো না। ভবিষ্যতেও করবো না। কারণ দু’নম্বর ব্যবসায়, কথা এক নম্বর না হলে চলে না।”

কিভাবে গাড়ি পোড়ান এমন প্রশ্নের জবাবে বজ্জাত জানান, “আমরা সর্বোচ্চ ৬ জনের একটি গ্রুপ থাকি। সব সময় আমি নিজে স্পটে থাকি না। কাছাকাছি দূরত্বে অবস্থান করি। ওরা যাত্রী বেশে গাড়িতে উঠার জন্য হাত দেখিয়ে গাড়িটি থামায়। গাড়ি থামার পর দ্রুত উঠে আগুন দিয়ে নেমে পড়ে। এ ক্ষেত্রে বোতলে করে পেট্রোল বহন করা হয়।যাতে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে।”

তিনি জানান, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গাড়ির হেলপারের সঙ্গে আগেই যোগাযোগ থাকে। এ জন্য তাকেও টাকা দিতে হয় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা। আর মামলা হলেও তিনিই মামলা খরচ বহন করেন।

তবে ভাঙচুরের জন্য সাধারণত হেলপারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় না। তাদের রয়েছে সুদক্ষ কর্মী বাহিনী। যারা দ্রুত গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দিতে পারে।

এ ছাড়া ঝটিকা মিছিলের জন্য মাথাপিছু ১শ’ টাকা করে পান তিনি। ৩০ টাকা কমিশন রেখে কর্মীদের দেন ৭০ টাকা করে।

অভিযানের জন্য নির্দিষ্ট কোন এলাকা নেই। যখন যেখানে সুযোগ হয় সেখানেই মিশন পরিচালনা করেন। তবে বড় ভাইদের চাহিদাকে বিশেষ প্রাধান্য দিয়ে মিশন পরিচালনা করা হয় বলেও জানান বজ্জাত।

রাজধানীতে তার গ্রুপের মতো আরও অনেক গ্রুপ রয়েছে বলেও জানান বজ্জাত হোসেন।

কোটি টাকা মূল্যের গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দিতে খারাপ লাগে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কে সৎপথে বড়লোক হয়েছে! যারা গরীব মেরে বড়ালোক হয়েছে তাদের সম্পদ পোড়ালে দু:খ হবে কেন! বরং ভালই লাগে।”
তবে “মানুষ আহত হওয়ার কথা শুনলে খারাপ লাগে” জানিয়ে তিনি বলেন, “আমার কাছে দল কোন বিষয় নয়। যে আসে তারই কাজ করি।”
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×