সাধারন যেকোন পাঠক ওটা পড়ার পর স্বভাবতই বলবে আসলেইতো! নিজেরা সব সময় ইহুদীর বিরুদ্বে কার্টুন আকঁ, যখন তোমাদের তোমাদের নবীর বিরুদ্বে কার্টুন ছাপা হলো তখন তোমরা তেলে বেগুনে ঝাঁপিয়ে পড়, এটাতো স্রেফ ভন্ডামি!
এটাকেই বলা হয় ইলুশান, এটা আপনাকে শুধু একটা সাইড বা একটা এঙ্গেল দেখেয়ি বুঝানো হয়েছে। অন্য সাইড বা অন্য এঙ্গেল গুলো না দেখিয়ে আপনাকে ভুল বুঝানো হয়েছে। এখানে আরব বা ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইহুদী/ ইসরাইলের দৃষ্টিভঙ্গিটা তুলে ধরা হয়নি, এটাকে একপেশে করা হয়েছে।
ইসরাইলের এঙ্গেলটা দেখুন, আমাদের কোন সমাধান নাই, তোমরা ফিলিস্তিনিরা কুকুরের মতো জীবন যাপন করবে, যাদের চলে যেতে মন চায় তারা চলে যাবে, আমরা দেখবো এই প্রসেসটা কোথায় যায়। Moshe Dayan (1915-1981) শ্যারন বলেছেন, ফিলিস্তিনিরা হচ্ছে তেলাপোকা। ফিলিস্তিনিরা দু পেয়ে জানোয়ার। ওয়ান গুড আরব ইস ডেড আরব। তাছাড়া এই ডকুমেন্টারীও দেখতে পারেন। রিল বেড আরবঃ হাউ হলিউড ভিলিফাই দিস পিপল
চীফ উনার পোষ্টে সেই চিরাচরিত ধর্ম বিষয়ে লিখলেন, তারপর লিখলেন, যেমন ধরুন বাংলাদেশে যখন ক্রমাগত হিন্দুদের ভারতের দালাল, মালাউন, দোজখের জ্বালানী, আল্লাহর দুশমন ইত্যাদি উপাধিতে ভুষিত করা হয়, স্বাভাবিকভাবেই ধর্ম সম্পর্কে একেবারে উদাসীন হিন্দু ছেলেটিও তার ধর্মকে আকড়ে ধরে। এবং মুসলিম সাম্পরদায়িকতার চাপে পরে ক্রমশ সেও পরিণত হয় একজন হিন্দু সাম্প্রদায়িক চরিত্রে। যেই হিন্দু ছেলেটি তার ধর্ম নিয়ে কখনই মাথা ঘামায় নি, শিব-গনেশ-কালী-দুর্গা এই সমস্ত হাস্যকর দেবদেবী নিয়ে সবসময় হাসি ঠাট্টাই করেছে, সেই ছেলেটিও তখন মুসলিম এবং ইসলামকে নিজের শত্রু ভাবতে শুরু করে দেয়, আশ্রয় খোঁজে ধর্মের ভেতরে এবং নিজের ধর্মকেই শ্রেষ্ট ভাবতে শুরু করে দেয়। তার এই সাম্প্রদায়িক ধর্মবাদী চিন্তা যখন ডাল পালা মেলে, তখন সৃষ্টি হয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মত ঘটনা।
হাতিটা আসলে ঘরের ভিতর। সাপ্রদায়িকতা নিয়ে লুব্দকের এই পোষ্ট দেখুন, ফেসবুকীয় নাস্তিকদের সাম্প্রদায়িকতা, প্রতিক্রিয়াশীলতা এবং বর্ণবাদিতা বাংলাদেশে নাস্তিকরা যেভাবে মুসলিমদের ধর্মগাধা, সব দোষের কারন, তাদের নবী, খোদা, কোরানকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে গালাগালি করছে। এতে যেই মুসলিম ছেলেটা তার ধর্ম নিয়ে মাথা ঘামাতোনা, হয়তো বছরে দুই ঈদের নামাজ পড়তো, বা জুমাবারে গিয়া নামাজ পইড়া চলে আসতো। সে এই নাস্তিক সাম্প্রদায়িকদের নিজের শত্রু ভাবতে শুরু করবেনা? এদের চরমপন্হার হেটরেডের কারনে সেই সহজ সরল মুসলিমটাকে সাম্প্রদায়িক বানিয়ে দিচ্ছেনা?
ডাঃ যাকির নায়েককে সবাই চেনে, উনাকে যে এই দাওয়াতের মাঠে এনেছে তিনি হলেন আহমেদ দীদাত। মাত্র ক্লাস সেভেন পড়ুয়া আহমেদ দীদাত ছিলেন উপরে বর্নিত মুসলিমদের একজন। মানে বাবা মা মুসলমান তাই সেও মুসলমান। পরবর্তীতে খ্রীষ্টান মিশনারীদের ক্রমাগত ইসলাম বিদ্বেষী অপপ্রচার দেখে মর্মাহত হন। খ্রীষ্টান মিশনারীদের ইসলাম বিদ্বেষী অপপ্রাচারের জবাব দিতে দিতে পরিনত হন আজকের আহমাদ দিদাতে। তৈরী করেন যাকির নায়িকের মতো অনেককে।
কোটেশান, কিন্তু বেশীরভাগ ইহুদী তাদের এত বছরের ধর্ম ত্যাগে রাজি না হওয়ায় পরবর্তীতে মুহাম্মদ ইহুদীদের উপরে বেজায় ক্ষিপ্ত ছিলেন এবং বেশকিছু হাদিসে তার ইহুদী বিদ্বেষ প্রকটভাবে দেখতে পাওয়া যায়। তিনি বলেন, "মুসলমান ও ইহুদীদের মাঝে যুদ্ধ না হওয়া পযর্ন্ত বিচারের দিন উপস্থিত হবে না। সে সময় ইহুদীরা পাথর ও গাছের আড়ালে লুকিয়ে থেকে যুদ্ধ করবে, আত্ম গোপন করবে। তখন পাথর ও গাছ বলবে হে মুসলিম, হে আল্লাহর বান্দা আমার আড়ালে ইহুদী লুকিয়ে আছে, তাকে হত্যা কর। এক মাত্র জারকাদ গাছ এমন কথা বলবে না।" ( মুসলিম শরীফ- হাদীস নং ৬৯৮৫)
ইহুদীদের তাদের অতিতে অনেক নবীকে হত্যাসহ অনেক নাফরমানী কাজের জন্যে ওদের অভিশপ্ত বলা হয়েছে। ইসলামে বাপের পাপের কারনে ছেলেকে হত্যা করা হয় না। ইহুদী হওয়ার কারনে নয়, ক্রিমিনাল হওয়ার কারনে হত্যা করা হবে।
ইহুদীরা যদি ভালই হয়, তাহলে সকলেই জায়োনিজম পরিহার করুক। ফিলিস্তিনিদের ওদের আবাসভূমি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। এরা কি তারা নয় যারা অন্যের আবাসভূমিকে হাতে তাওরাত দেখিয়ে নিজেদের দাবী করছে। এরা কি সেই ইহূদী নয় যারা ওদের লবি দিয়ে মার্কিন-ব্রিটিসদের ইরাক যুদ্বে টেনে এনে লক্ষ লক্ষ মুসলিমদের হত্যা করেছে। এরা কি সেই ইহূদী নয় যারা ওদের লবি দিয়ে এখন ইরান আক্রমনের পায়তারা করছে।
ওয়াজ মাহফিলে নাকি ইহুদীদের গালাগালি ও হত্যার উস্কানি দেওয়া হয় বলে ইউসুফ কারজাবীর ভিডিও লিংক দিলেন। গত ৬০ বছর ধরে এবং প্রতিনিয়ত ফিলিস্তিনিরা নিজেদের ঘরে মার খাচ্ছে বলেই ওরা ইহুদীদের বিরুদ্বে এইভাবে বলছে। ২০১০ এ পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যায় অনেক মানুষ মারা যাওয়ার খবরে অনেক বাংলাদেশী হেসেছিলো, তার কারনটা ছিলো আমাদের উপর ৭১ এর গনহত্যা। অনেকেই তখন খুশীতে পোস্ট দিয়েছেন। ধরেন হিটলার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বে পাকিদের উপর গনহত্যা চালিয়েছে, তাহলে আমরাও ৭১ এর কথা মনে করে হিটলারের উপর খুশী হতাম। তার প্রশংসা করতাম আমাদের উপর চালানো গনহত্যার কথা মনে রেখে।
উনার ইলুশান সৃষ্টির আরেক ভিড্যুতে দেখালেন মুসলিম শিশুদের কিভাবে ব্রেইনওয়াশ করানো হচ্ছে। কিন্তু ইসরাইল যে তাদের শিশুদের ব্রেইনওয়াশ করে তা উনার পোষ্টে নাই। ৭১ এ মা-বাপ হারানো বাঙ্গালী শিশুদের পাকিদের ঘৃনা করতে ব্রেইন ওয়াসের প্রয়োজন নেই। যে শিশুটি জন্মের পরই দেখছে নিজ দেশে সে পরাধীন। সকালে বিকেলে রাতে যেকোন সময় তাদের ঘরে ঢুকে তার মা-বাবা বা আত্বীয় স্বজনদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এ্যাপাচি হেলিকাপ্টারের গোলার আঘাতে ধ্বংস হওয়া তাদের বাড়ি ঘর। ধ্বংস হওয়া তার খেলার পুতুল। ইসরাইলী ট্যাংকে পাথর মারার অপরাধে! যারা ছোট্ট শিশুদের খুঁজে খুঁজে হত্যা করছে, এদের ব্রেইন ওয়াসের প্রয়োজন নেই।
এখানে ইসরাইলের শিশুদের দেখেন, ধর্মীয় টুপি/পোশাক পরে কিভাবে ফিলিস্তিনিদের উপর ঝাপিয়ে পড়ছে।
তারপার উনি নিয়ে এলেন হাজ আমিন আল হুসেইন কে, সে সমোয়ের আরবদের বিখ্যাত ধর্মীয় নেতা, জেরুজালেমের মুফতি সেই সময়ে সক্রিয় সহযোগীতা করেছিল হিটলারকে। ইসলামিস্টদের বিভিন্ন সময়ে নেয়া বিভিন্ন হঠকারী সিদ্ধান্তের বলি হতে হচ্ছে আজও ফিলিস্তিনের নিরীহ শিশু এবং নারীদেরঃ
আরেকটা মঘীয় ইলুশান। সবদোষ এখন চাপালো হাজ আমিনের ঘাড়ে।
জায়োনিস্টরা ফিলিস্তিনে আসার আগে এখানে মুসলিম, ইহুদী ও খ্রীষ্টানেরা শান্তিপূর্ন ভাবে বসবাস করতো। থিয়োডর হারল্জ যে মূলত সেক্যুলার, নাস্তিক সে মার্কসবাদ দ্বারা অনুপ্রানিত হয়ে জায়োনিসম শুরু করেন। সোস্যালিস্ট জায়োনিজম দেখতে পারেন এখানে। এই জায়োনিজমরাই ইসরাইল আন্দোলনের প্রবর্তক।
১৯১৭ সালে বেলফোর ঘোষনা অনুযায়ি ফিলিস্তিনে ইহুদে রাষ্ট্র হবে বলে ঘোষনা দেয় ব্রিটিস। তার পর ইউরোপ হতে দলে দলে আসতে ইহুদীরা। গঠন করে সন্ত্রাসী সংগঠন ইরগুন, স্টান্টগেন, হাগানাহ । হত্যা, লুন্ঠন ও উচ্ছেদ করতে থাকে ফিলিস্তিনিদের নিজেদের ভূমি হতে। হাজ্ব আমিন তখন আমার শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু এই মতে হিটলার হতে সাহায্য চেয়েছিলেন। এই সেই হিটলার যে ক্ষমতায় আসার পরপরই ইহুদী নিধন শুরু করে।
তারপরও টাইম ম্যাগজিন ১৯৩৮ সালে তাকে ম্যান অফ দ্যা ইয়ার ঘোষনা করে। স্টালিন তার সাথে বসে পোল্যান্ড দখলে চুক্তি করে। এখন কারো কোন দোষ নাই। কেস্ট বেটা হাজ্ব আমীনই চোর। হাজ্ব আমিন ফিলিস্তিনিদের কোন প্রতিনিধিও ছিলেন না, ছিলেন এক ইনডিভাইডুয়াল।
সময়ের অভাবে লিখতে পারছিনা, নইলে আরো অনেক এঙ্গেলে দেখানো যেতো। সবাই ইলুশান হতে বেচেঁ থাকুন।
ইহুদী-মুসলিম সম্পর্কঃ ব্রাটেন্ড রাসেলের এক লিখা পড়েছিলাম যে যুগে যুগে ইহুদীদের সবচেয়ে বেশী অধিকার দিয়েছে মুসলিমরা, কোথায় লিখেছেন তা মনে করতে পারছিনা, তবে জিউশ ভারচুয়াল লাইব্রেরীতে এটা তারাও স্বীকার করেছে। ক্রুসেড যুদ্বের পুরা যামানায় দেখতে পারেন মুসলিম রা ইহুদীদের কিভাবে সাহায্য করেছে। ইউরোপে খ্রীষ্টানদের হাতে মার খেয়ে মুসলিম দেশে এসে সস্তির নিশ্বাস ফেলতো এরা। মুসলিম শাসিত স্পেনে তাই হয়েছে ইহুদীদের গোল্ডেন এইজ, যা খ্রীষ্টান শাসিত ইউরোপে ওরা কল্পনাও করতে পারতোনা।
এরা কি সেই ইহুদী নয়, যারা মুসলিম শাসিত জেরুজালেমে মুক্ত ধর্মীয় উপসনা করতে পারতো, কিন্তু পারতোনা মুসলিমদের জেরুজালেম দখলের আগে বা ক্রুসেডের সময়। সময়ের পরিবর্তনে মুসলিমরা হয় দূর্বল আর এরা হয় সবল। এখন এরা মুসলিমদের ওদের মসজিদে নামাজ পড়তে দিচ্ছেনা জেরুজালেমে।
এরা কি সেই ইহুদী নয় যখন ওদের স্পেনিশ ইনকুইজেশনের সময় গনহারে হত্যা করা হচ্ছিলো মুসলিমদের পাশাপাশি, তখন তুর্কি সুলতান দ্বিতীয় বায়োজিদ জাহাজ পাঠিয়ে এদের উদ্বার করেছেন । উদ্বারের পর ওরা থাকতো মুসলিম দেশেই। মধ্যযুগের স্পেনে যখন গনহত্যা চলছিলো ইহুদীদের উপর তখন তুর্কি সুলতান বায়োজিদ এই ইহুদীদের স্পেন, পর্টুগাল হতে জাহাজে করে উদ্বার করে নিয়ে এসেছেন। সুলতান বায়োজিদ তখন ইহুদী নাকি মুসলিম সেই মূল্যায়ন করেন নি। তিনি ওদের বাচিঁয়েছেন। সেই ইহুদীরা তখন ছিলো দূর্বল।
এরা যখন সবল হয়, তখন দখল করে নেয় সেই জেরুজালেম। দখল করে নেয় ফিলিস্তিন গনহত্যা আর গন বিতাড়নের মাধ্যমে। গাজা শহরকে বানায় পৃথিবীর বৃহত্তম জেলখানা। সেই জেলখানার লোকদের জন্যে কিছু খাদ্যদ্রব্য ও ঔষুদ পত্র নিয়ে মাভি মারমারা জাহাজে করে এবার দূর্বল মুসলিমদের পক্ষ হতে সবল ইহুদীদের জেলখানা গাজায় আসতে চাইলো তুর্কি সুলতান বায়োজিদের উত্তরসূরি টুর্কিরা। এই সবল ইহুদীরা এদের তীরেই ঘেষতে দেইনি, তা আগেই ভয়ংকর আক্রমনে অনেক তুর্কিকে এরা হত্যা করে, বাকিদের বন্দী করে নিয়ে যায়।
আবদের হোসাইন, এক ইরানি মুসলিম যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বের সময় ফ্রান্সে হাজার হাজার ইহুদীকে হিটলারের হাত থেকে বাচিঁয়েছেন নিজের জীবন বাঁজি রেখে। সে পার্থক্য করেনি যে সে ইহুদি নাকি মুসলিম।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বের সময় হলোকাস্টে পুরা ইউরোপে কোথাও ঠাঁই ছিলোনা এই ইহুদীদের। শুধুমাত্র মুসলিম দেশ আলবেনিয়াতে এরা পেয়েছে সাহায্য সহযোগিতার হাত। আলবেনিয়ার মুসলিমরা বিভন্ন দেশ হতে বিতাড়িত এই ইহুদীদের নিজেদের ঘরে জায়গা দিয়েছেন। একই প্লেটে খাবার খাইয়েছেন। আলবেনিয়ার মুসলিমরা বলতো, আমরা এই দূর্বল ইহূদীদের বাচিঁয়েছি, আল্লাহ আমাদের প্রতিদান দিবেন।
আমরা মুসলিমরা এই ইহুদীদের সব সময় সাহায্য সহযোগিতা করেছি যখন এরা ছিলো দূর্বল। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে আমরা মুসলিমরা একটু ব্যাক ট্রাকে আছি, একটু বেকায়দায় আছি। আমাদের কিছু উত্তরসুরির উদাসিনতাই আমাদের আজ এই অবস্হা। আমরা এখন দেখছি সবল ইহুদীরা আমাদের সাথে কি করছে। ইহুদীরা আমাদের সাথে মেষ শাবক ও নেকড়ের খেলা খেলছে। তবে আলহামদুলিল্লাহ, আমাদের অনেক বড় স্পিরিচুয়াল পাওয়ার আছে, আমরা মেষ শাবক হবোনা, ইনশাল্লাহ। উই উইল কাম ব্যাক এগেইন।
সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছ
একটা রিলেটেড পোষ্টঃ মঘাচীপের দিনে দুপুরে ভেল্কিবাজি,
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৩:১৪