এপ্রিল, ২০০৬ সাল
কুমিল্লা বেড়াতে গিয়েছিলাম এসএসসি দেবার পরপরই। কোন এক ভোরবেলায় আমাকে ডেকে দেওয়া হল ফজরের নামাজ পড়তে। যদিও আমি অভ্যস্ত ছিলাম না অত ভোরে উঠতে তবুও বাধ্য হয়ে উঠে পাশের মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করলাম। তারপর একজনের সাথে হাটে গেলাম বাজার করতে।
চট্টগ্রামে সাধারণত দেখি বিকেলবেলা হাট বসতে। সেই আমি খুব ভোরে বাজার দেখে হকচকিয়ে গেলাম!
টাটকা তরিতরকারি, পুকুরের মাছ, ফলমূল আর লম্বা লাইন দিয়ে গরুর দুধ বিক্রি হচ্ছিল। গ্রামের সাদামাটা একটি হাট। এই বিক্রেতারা বাজারে কয়টায় রওনা দিয়েছিল কে জানে।
কুমিল্লা গিয়ে একটা ব্যাপার জানতে পারলাম তা হল প্রত্যেকটা পরিবার প্রতিদিন আর কিছু না কিনুক দুধ কিনবেই। খুব যে সস্তা তাও কিন্তু নয়, এটা তাদের রীতি।
তখন আমার বয়েস ছিল সতের। কাঁচা রাস্তা ধরে বাজারে হেঁটে যাওয়া, বাজারের মিষ্টির দোকানে মিষ্টি খাওয়া-এসব কিছুই আজো ভুলতে পারিনি।
বাজারের ঠিক পাশেই বিশাল এক গাছের নিচে বহু পুরনো শ্মশানঘাট দেখে অনেকগুলো ভূতের গল্পের কথা মনে পড়ছিল। তবুও একবার ইচ্ছে হয়েছিল কাছে গিয়ে দেখে আসতে।
প্রায় দশ বছর পেরিয়ে গেল। আর যাওয়া হল না সেখানটায়। জানিনা বিদ্যুৎবিহীন ঐ গ্রামে রাতেরবেলায় এখনো জোনাকির আলো চোখে পরবে কিনা। এও জানিনা রাতে চলতে গিয়ে পথের উপর দিয়ে সরসর করে কোন সাপ হেঁটে যাবে কিনা।
আদিগন্ত ধানক্ষেত আর উঁচু উঁচু বসতভিটাগুলো অদ্ভুত ছিল দেখতে। শহর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে গড়া ছিল গ্রামগুলো।