http://www.priyo.com/2014/07/23/88422.html
আমার কাছে কিন্তু ব্যাপারটা একদমই সুড়সুড়ির মনে হয়নি। সুড়সুড়ির বই দরকার হলে এই সহজলভ্যতার যুগে ছেলেমেয়েরা এমনিতেই যোগাড় করে নিতে পারে। যখন সহজলভ্যতা ছিল না তখনও কিন্তু অসুবিধে হয়নি। অনেকের সংগ্রহেই এসব বই ছিল। বরং এমনও কিছু বই পাওয়া যেত; এবং সেগুলো এত অল্পবয়সীদের সংগ্রহে ছিল শুনে কিছুটা অবাকই হতে হয়েছে।
আর আমাদের যাদের এরকম সুযোগ হয়নি, তারাও কিন্তু ভেতর ভেতর একটা চেষ্টা করেছি। আমার বাবা বেশ বই পড়তেন। সেই বইয়ের একটিতে লেখা ছিল, “ভোরের দিকে উঠে পড়ল আহমদ মুসা, ডোনাও তার কাপড় ঠিকঠাক করে নিয়েছিল”। কিছুই নেই সেখানে। তবুও বারবার পড়তে ইচ্ছে করত লাইনটা।
যৌনতা খুব সহজাত প্রবৃত্তি। শিশু বয়স থেকেই আমাদের অজান্তেই, আমাদের মাঝে একটা Silent Sexual desire থাকে। তবে বয়স ভেদে সে desire এর ধরন আলাদা। এ বিষয়ে মনোবিজ্ঞানী সিগমণ্ড ফ্রয়েডের বয়স ভিত্তিক সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা আছে। কিন্তু আমাদের দেশে আমরা খুব লুকোছাপা করি এইসব নিয়ে। ‘আমার কোন যৌন অনুভূতি নেই’ এটাই যেন খুব ভাল ব্যাপার আর যাদের আছে তারা ভীষণ খারাপ ছেলেমেয়ে।
আমার পরিবারও এই ধারণার ব্যাতিক্রম ছিল না। তার ফলাফল হিসেবে আমার বড় হওয়ার সময়টাতে আমি কিছুটা বিভ্রান্ত হয়ে গেলাম। ভাবলাম, আমার নিশ্চয় কোন কঠিন অসুখ করেছে আর এ অসুখে আমি নিশ্চিত মারা যাব। কাঁদতে কাঁদতে যখন মাকে গিয়ে বললাম, আমার এত বড় অসুখ জেনেও মা দেখি আর হাসি থামাতে পারল না। স্কুলেও দেখেছি অনেক মেয়েকেই বেকায়দায় পড়তে। আগে থেকে যদি এরকম বিষয়ে ধারণা থাকে তাহলে পাবলিক প্লেসে আর হয়ত মেয়েগুলো ভয় পায় না, বিভ্রান্ত হয় না। তাছাড়া অনেক মেয়েদের পরিবারে মা থাকে না, ছেলেদের পরিবারে বাবা থাকে না, তাদের জন্য জানার ব্যাপারটি কিন্তু তখন খুব অসুবিধের হয়।
আমার ক্ষেত্রে মনে হয়েছে এটি খুব ভাল উদ্যোগ। তবে ভাষার ব্যাপারে আরেকটু সতর্ক আর সাবধান হওয়া যেত। নিশ্চয় প্রজনন স্বাস্থ্য এবং চাইল্ড সাইকোলজি নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের পরামর্শ নিয়ে বইটি আরও ভাল করা যেতে পারে।
আমার জ্ঞান কম। তবুও যা মনে এল বললাম। এখনও মা হয়নি। তবে হলে, আমার বাচ্চাদের নিশ্চয়ই আগে থেকে ধারণা দিয়ে রাখব। কারণ আমি চাইনা আমার মেয়েটা খুব ভয় পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে এসে বলুক মা আমার বোধহয় কঠিন অসুখ করেছে আর আমি শিগগির মারা যাব।