রংপো থেকে গ্যাংটক এক ঘণ্টার রাস্তা, রাস্তার দুপাশে সুসজ্জিত বাড়ি, অধিকাংশ বাড়ির সামনে ফুলের বাগান , দেশি বিদেশি গাড়ি পার্ক করা রয়েছে। সিংতাম অবধি তিস্তা নদী আমাদের পাশে ছিল, সিংতাম থেকে একটা রাস্তা তিস্তার পাড় ধরে উত্তর সিকিমের দিকে গেছে অন্যটা গ্যাংটক যাচ্ছে। এখান থেকে রাস্তা বেশ খাড়াই, বাস যত এগোতে লাগলো ততই রাস্তার দুধারের জৌলুস বাড়তে লাগল।
গ্যাংটকে ঢুকলাম রাত ৯-৩০ টায়, অধিকাংশ দোকান বন্ধ হয়ে গেছে রাস্তায় লোকজন ও খুব কম, শহর এখন ঘুমিয়ে পড়েছে। বাস থেকে নামতেই বুঝলাম ঠাণ্ডা কাকে বলে, টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়ছে, তার মধ্যে হু হু করে হাওয়া বইছে।মনে হচ্ছে আমরা জমে যাচ্ছি। বাস স্টপেজের সামনেই হোটেল মান্দালা, ৩৫০ টাকায় হোটেলের দোতলায় ঘর পাওয়া গেল। ঘরে ঢুকে দেখি এ তো রাজ প্রাসাদের শয়নকক্ষ,সাথে বারান্দা, কল খুলতেই গরম জল, । গরম জলে শরীরের ধুলো ময়লা ধকল ধুয়ে, থুপ্পা দিয়ে ডিনার সেরে নরম বিছানা আর গরম ব্ল্যাংকেতে ঢুকতেই ঘুম এসে গেল।
ঘুমটা ভাঙ্গল রাত সারে তিনটে নাগাদ, বাথরুম সেরে আবার শুতে যাব, জানালার দিকে চোখ যেতেই দেখি অপার্থিব আলো, খানিকটা হকচকিয়ে গেলাম, এ আমি কি দেখছি। গায়ে চাদর জড়িয়ে বারান্দায় বেড়িয়ে দেখি পশ্চিমের দিকে ঢলে পড়া পূর্ণিমার আগের রাতে রূপোর থালার মত চাঁদ, তার আলোয় আলোকিত সপার্ষদ সহ কাঞ্চনজঙ্ঘা, নিস্তব্ধ রাত, আমার সামনে প্রকৃতি তার রূপ ঊজাড় করে দিয়েছে, আমি শীতের কাঁপুনি অবধি ভূলে গেছি, আধা ঘণ্টা বাদে ভাই এর ডাকে হুঁশ ফিরল। বিছানয় শুতেই আবার ঘুমের দেশে, পরদিন সকাল ৭ টা নাগাদ ঘুম ভাঙ্গল........................ আগের পর্ব সিকিমের উত্তর দিকে—পর্ব ৩ ( শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটক -১)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৩২