এই বন্ধের বাজারে বাসে বেশ ভিড় হয়েছে, শিলিগুড়ি শহরের উপকণ্ঠে ভারতীয় সেনা বাহিনীর ব্যারাক, শেষ বিকেলে তাদের মারচিং চলছে, এখানে সেনাবাহিনির ছোট এয়ারপোর্ট আছে, সেখানে বেশ কটা টু সিটার প্লেন ও দেখা হল বাসে বসে, ব্যারাক পেরোতেই মহানন্দা স্যাঞ্চুয়ারি শুরু হল, জংগলের বুক চিরে হাইওয়ে, তার অপর দিয়ে বাস ছুটে চলেছে, রাস্তার দু পাশে উঁচু করে তারের বেড়া দেওয়া, বাস থেকে সোজা তাকালে মনে হয় রাস্তা টা গিয়ে সামনের পাহাড়ে ধাক্কা মারবে। দুরে সবুজ পাহাড়ের শ্রেণী, তার ফাঁকে ফাঁকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যাচ্ছে। সেবক রেল ব্রিজ পেরিয়ে আমরা হিমালয়ের তরাই অঞ্চলে প্রবেশ করলাম, সেবক ব্রিজের আগেই তিস্তা নদীর সাথে দেখা হয়ে গেল, তিস্তা নদী আমাদের ডান দিকে, ইতিমধ্যে সূর্য অস্ত গেছে, চাঁদের দেখা না পেলেও কোজাগরীর আগের রাতের জছনায় তিস্তার খাত, কাছে দূরের পাহাড় গুলো কে ভালই দেখা যাচ্ছে।মাঝে মাঝে পাহাড়ের গায়ে টিমটিমে হলদে আলোর মালা, অগুলা পাহাড়ি বস্তির আলো, একে সন্ধ্যে বেলা তার অপর হরতাল চলছে, চারপাশ থমথমে, জানিনা আমাদের কপালে কি আছে, লোহাপুল পেরোতেই তিস্তা আমাদের বাম দিকে চলে এল, নদীর পাড় ধরে বাস এগোতে লাগল। নদীর ওপারে সিকিম। ঘড়িতে তখন ৭ বেজে গেছে, গ্যাংটকে পৌঁছে হোটেল পাব কিনা সে চিন্তা করছি, এই আলো আধারি বন জংগলের মধ্য দিয়ে আরও কতক্ষণ যেতে হবে সেই নিয়ে চিন্তা করছি, অন্য সময় হয়ত ভাল লাগত, কিন্তু প্রায় ২৪ ঘণ্টা করে আমারা বাসে করে ঘুরছি, শরীর ও বিশ্রাম চাইছে। মেল্লির কাছে চেকপোস্ট পেরিয়ে সিকিমে প্রবেশ করলাম, একটু এগোতেই রংপো , এই রাস্তায় সিকিমের প্রথম শহর, দূর থেকে তার ঝলমলে চেহারা দেখে আমরা অবাক হয়ে গেলাম, এ কোন দেশে এলাম, চারপাশ পরিষ্কার রাস্তায় এত টুকু ময়লা নেই, চকচকে রাস্তা, সাজান দোকান পাট, এখানে বাস ১৫ মিনিট দাঁড়াবে, চা টিফিন খাওয়ার বিরতি, এর মধ্যে সিকিম পুলিশ এসে একপ্রস্থ চেকিং করল। চা , মোমো , পকরা দিয়ে সান্ধ্যকালীন জলখাবার সারলাম। সিকিমে মদ খুব সস্তা, রংপোতে পর পর অনেক গুলো মদের দোকান দেখলাম, অধিকাংশ ব্র্যান্ড ই অচেনা, ইচ্ছা থাকলেও কেনা হল না। ঠিক টাইমে বাস ছাড়ল.......আগের পর্ব ..সিকিমের উত্তর দিকে—পর্ব ২ ( কোলকাতা থেকে শিলিগুড়ি)
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৬