এক সেনা যুদ্ধে যাবে। মা তার ব্যাগে খাবারদাবার গুছিয়ে দিচ্ছেন। ছেলের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে পরম স্নেহে বলছেন, ‘একটা একটা...মারবি, আর জিরিয়ে নিবি।’
ছেলের মুখ দিয়ে বেরিয়ে পড়ল কথাটা:
কিন্তু ওরা যদি আমাকে মারে?
বা রে, তোকে মারবে কেন? তুই ওদের কী ক্ষতি করেছিস?
পেছনে গুলি, সামনে হতাশা। এক রোহিঙ্গা পরিবারের ছবি।
গত বৃহস্পতিবার, এক রাতেই নিহত হলেন ৭৭ জন। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং অং সান সু চির ভাষায় এঁরা সবাই ‘জঙ্গি’। সরকারি অভিযোগ, এই ‘জঙ্গিরা’ পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ জনকে হত্যা করেছে। মিয়ানমারের ভাষ্য: ‘আমাদের বাহিনী’ তো কারও কোনো ক্ষতি করেনি! জাতীয়বাদী-সাম্প্রদায়িক ঘৃণাবাদীদের চোখে সব সময়ই ‘আমাদের বাহিনী সম্পূর্ণ নির্দোষ’।
যুগে যুগে শিকারি ও শিকারের নাম বদলে যায়। বাঙালি, কুর্দি, কাশ্মীরি, ইরাকি, আফগানি, ইয়াজিদি হত্যার পাশাপাশি মরছে রোহিঙ্গারাও। বর্মি সৈন্যরা একটা একটা নয়, দলে দলে রোহিঙ্গা মারছে আর জিরিয়ে নিচ্ছে। অঢেল সময় তাদের। রোহিঙ্গারাও সংখ্যায় তেমন বেশি নয়, মাত্র ২২ লাখ। এর ১১ লাখ আছে আরাকানে, বাকিরা বিভিন্ন দেশের অবহেলিত উদ্বাস্তু। মাতৃভূমি রাখাইনেই দেড় লাখ রোহিঙ্গাকে ঘরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে কাঁটাতারঘেরা ‘রিফিউজি ক্যাম্পে’ ঢোকানো হয়েছে।
আরাকানে তাদের বাঙালি বলে গালি দেওয়া হলেও বাঙালিদের রাষ্ট্রও তাদের চায় না। কোনো দেশই তাদের চায় না। জাতিসংঘের দেওয়া খেতাবে তারা পৃথিবীর সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠী। রোহিঙ্গাদের চেয়ে করুণ, লাঞ্ছিত ও আশাহীন শরণার্থীও খুব কম আছে। জন্মই তাদের অপরাধ। তাই জন্মের মতো তাদের দেশছাড়া করা হয়, মৃত্যু দিয়ে চলে জন্মের প্রায়শ্চিত্ত।
কফি আনান মিয়ানমার সফরে আছেন, ভারত ও বাংলাদেশ কিছু শরণার্থীকে ফেরত পাঠাতে যাচ্ছিল, সে সময় কেন এই ঘটনা? আনান কমিশন মিয়ানমারে গিয়েছে একগুচ্ছ সুপারিশসহ। রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে চলাফেরার স্বাধীনতাসহ অন্যান্য অধিকার দেওয়ার দাবি তাঁরা তুলেছেন। ঘটনার আগের তিন দিন কফি আনানের সফরই ছিল মিয়ানমারের প্রধান সংবাদ শিরোনাম। চতুর্থ দিন, ২৬ আগস্ট শুরু হলো রোহিঙ্গাদের জীবনে আরেকটি রক্তাক্ত দুর্যোগ। কিন্তু কেন ঠিক এখনই?
সব সহিংসতার আগেও যেমন, পরেও তেমন, রোহিঙ্গারা হিংসার মুখেই ছিল। গত কয়েক সপ্তাহে রাখাইনে ব্যাপক সামরিক সমাবেশ করা হয়। অবরোধে ফেলা হয় লাগাতার অনাহারের মুখে। ঘরে ঘরে তল্লাশির মধ্যে চলে নির্যাতন। এর মধ্যে এ হামলা যারাই করুক বা যারাই করাক, একে রোহিঙ্গা বিতাড়নের অজুহাত হিসেবে কাজে লাগিয়ে আনান কমিশনের চেষ্টাটাকে ভন্ডুল করে দিতে পেরেছে মিয়ানমার। প্রাণের ভয়ে পালাতে থাকা রোহিঙ্গাদের ওপর মেশিনগানের গুলি চালিয়ে তারা বোঝাতে চাইছে, যতবার ফেরার চেষ্টা করবে, ততবার গুলি চলবে। মেসেজ ক্লিয়ার অ্যান্ড আউট!
২০১২ সালের হত্যাকাণ্ডের সময় তখনকার মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন বলেছিলেন, ‘রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের জনগণ নয়, বিতাড়নই এ সমস্যার একমাত্র সমাধান।’ মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট থেরাভেদা বৌদ্ধ উগ্রপন্থীরা তাদের বিনাশ চায়। গৌতম বুদ্ধের মহান বাণী ‘বুদ্ধং শরণং গচ্ছামী’র শরণ তারা পায় না। গণতন্ত্রের মানসকন্যা অহিংস নেত্রী অং সান সু চিও রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে হিংসা প্রকাশে রাখঢাক রাখেন না। জাতিসংঘ বারবার জানাচ্ছে, রোহিঙ্গারা ভয়ংকর গণহত্যার হুমকির মুখে।
আরাকানের রোহিঙ্গাদের বাঙালি বা মুসলমান যা-ই বলা হোক না কেন, তারা কোনোভাবেই বহিরাগত নয়। বরং আধুনিক সময়ে, ১৭৮৫ সালে আরাকান দখলকারী বর্মিরাই বহিরাগত। মিয়ানমারের স্বাধীনতা আন্দোলনের পিতৃপুরুষেরা ঠিকঠাক জানতেন। বার্মার প্রথম প্রেসিডেন্ট উ নু রোহিঙ্গাদের আরাকানের অধিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। ১৯৪৭ সালে বার্মার প্রথম সংবিধান সভার নির্বাচনে তারা ভোট দিয়েছিল। ১৯৫১ সালে তারা পায় আরাকানের অধিবাসী হিসেবে পরিচয়পত্র। ১৯৫৯ সালে প্রধানমন্ত্রী উ বা রোহিঙ্গাদের আরাকানের জাতিগোষ্ঠী বলে অভিহিত করেন। ১৯৪৭ সালে স্বাধীন বার্মার প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম শাও সোয়ে থাইক বলেছিলেন, ‘রোহিঙ্গারা স্থানীয় আদিবাসী না হলে আমিও বহিরাগত।’ কিন্তু ১৯৬২ সালে সামরিক সরকারের প্রতিষ্ঠার দিন থেকেই শুরু হয় রোহিঙ্গাদের দুর্ভাগ্যের করুণ মহাকাব্য। ১৯৮২ সালে তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়, বন্ধ হয়ে যায় রোহিঙ্গা ভাষায় রেডিও অনুষ্ঠান প্রচার। শুরু হয় অপারেশন ড্রাগন কিং নামে রোহিঙ্গা বিতাড়ন কর্মসূচি।
কিন্তু এ অবস্থা দীর্ঘদিন চলতে পারে না। যাদের দেশও নাই বিদেশও নাই, মৃত্যু ছাড়া যাদের নিস্তার নাই, তারা ঘুরে দাঁড়াবেই। কেউ না কেউ তাদের রিক্রুট করবে। সিরিয়া থেকে বিতাড়িত আইএসও তক্কে তক্কে আছে। মিয়ানমার যে হারে উগ্র বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদী ঘৃণায় ভাসবে, সেই হারে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার ক্ষুব্ধ মুসলমানরাও ঘৃণা দিয়েই জবাব দিতে চাইবে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় হঠকারিতার জবাবে আসবে জঙ্গি হঠকারী যোদ্ধারা। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের প্রতি যে অন্ধঘৃণা দেখাচ্ছে, তা শেষবিচারে তাদেরই অন্ধ করে দেবে। এটা খুবই মর্মান্তিক, মিয়ানমারের বিবেক বলে পরিচিত অং সান সু চি অহিংসা ছেড়ে সে দেশের সামরিক বাহিনীর মদদপুষ্ট বৌদ্ধ বিন লাদেন নামে পরিচিত উগ্র ধর্মবাদী পুরোহিত অশিন বিরাথুর পথে চলেছেন। এই হিংসা ও প্রতিহিংসা কেবল মিয়ানমারের জন্যই নয়, ভারত-বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড সবার জন্যই বিপদ বয়ে আনতে পারে। তার আগেই শান্তি ও মানবতাকে সুযোগ দেওয়া উচিত।
ব্রিটিশরাই রোহিঙ্গাদের আরাকানে নিয়ে গিয়েছিল, কিংবা ১৯৪৭ সালের পর আরাকানকে তারা পাকিস্তানে নিতে চেয়েছিল; এ অভিযোগ মিয়ানমারের নৃতাত্ত্বিক-জাতীয়তাবাদীদের। কিছু লোক ব্রিটিশরা নিয়ে গিয়েছিল এবং বর্মিদের অত্যাচারের মুখে কিছু রোহিঙ্গা নেতা আরাকানকে তৎকালীন পাকিস্তানভুক্ত করার জন্য গণভোট দাবি করেছিলেন, এটা সত্য। তারা তো হত্যা-ঘৃণা-লুণ্ঠন চালায়নি কারও ওপর! সত্যের ওপর দিকে রয়েছে মিয়ানমারে প্রবল হয়ে ওঠা বর্ণবাদী জাতীয়তাবাদ। এর বিরুদ্ধেই কিন্তু লড়াই করছে মিয়ানমারের অ-বর্মি দশটি জাতিগোষ্ঠী। তাদেরও কি রোহিঙ্গাদের মতো ‘বহিরাগত’ বলা হবে?
বর্ণ ও ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদই দেশে দেশে অশান্তির কারণ। মিয়ানমারের জাতীয়তাবাদের মর্মে আছে বর্মি-বৌদ্ধ পরিচয়ের গর্ব। সব জাতিগোষ্ঠী ও নাগরিককে যদি মিয়ানমার সমান চোখে দেখত, তাহলে কারেনসহ রোহিঙ্গারাও অধিকার পেত। রোহিঙ্গাই হোক বা স্বদেশি পাহাড়িই হোক, ভিকটিমকে দোষারোপ না করে আমাদের তাই তাকাতে হবে সমস্যার গোড়ায়। মিয়ানমারে গণতন্ত্র আসেনি, এসেছে উগ্র বর্ণবাদী জাতীয়তাবাদ। আমাদের সীমান্তে তা নিয়মিত জন্ম দিচ্ছে দুঃসংবাদ।
সর্বশেষ সংবাদঃ
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অভিযানরত নিরাপত্তাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষে গতকাল শুক্রবার এক দিনেই নিহত হয়েছে ৭১ জন, যাদের মধ্যে ৫৯ জনই রোহিঙ্গা মুসলিম, অবশিষ্ট ১২ জন নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য। গত বছর অক্টোবরে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নিধন অভিযানের পর বছর না ঘুরতেই আবারো রোহিঙ্গা নিধন শুরু করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গতকালের হামলা শুরু হতেই সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছে শত শত রোহিঙ্গা।
মিয়ানমারের আরাকান রাজ্য বর্তমানে যার নাম রাখাইন রাখা হয়েছে সেখান থেকে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর হত্যা-নির্যাতন শুরু হয় সত্তরের শতকের শেষ দিকে। মিয়ানমারের নিরাপত্তাবাহিনী ও চরমপন্থী বৌদ্ধদের জুলুম-নির্যাতনে সেখান থেকে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে। এখনো প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা রাখাইনে জুলুম-নির্যাতনের মধ্যে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বাস করছে। রোহিঙ্গাদের বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠী বলে গণ্য করছে জাতিসঙ্ঘসহ বিভিন্ন সংস্থা। কিন্তু এত কিছুর পরও মিয়ানমার সরকারের আচরণের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। তাদের ওপর নির্যাতনের নতুন নতুন খড়গাঘাত দিন দিন বাড়ছে।
গত বছর সেনাবাহিনীর দমন অভিযানে অন্তত ৮০ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আর গত কয়েক বছরের দাঙ্গায় রাখাইন ও পাশের কাচিন রাজ্যে এক লাখ ২০ হাজারের মতো লোক উদ্বাস্তু হয়েছে, যাদের প্রায় সবাই রোহিঙ্গা মুসলিম। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা প্রায় ১১ লাখ। এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না দেশটির সরকার। ভোটাধিকারসহ সব নাগরিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে তাদের। প্রতিনিয়ত চলছে একের পর এক দমন-পীড়ন।
উগ্র বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মাধ্যমে যে রোহিঙ্গাবিরোধী দাঙ্গা শুরু করা হয় সেই সূত্র ধরে দেশটির রাষ্ট্রীয় বাহিনী নির্যাতনের স্টিমরোলার পাঁচ দশক ধরে অব্যাহত রয়েছে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে। সেনাবাহিনী পাঠিয়ে নিজ দেশের জনগণের ওপর এমন নিধন অভিযান ইতিহাসে বিরল। রোহিঙ্গাদের বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী। দশকের পর দশক ধরেই চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের এ ঘটনা। মিয়ানমারের ১৩৫টি আদিবাসী জাতিগত গ্রুপের তথ্য সরকারি খাতায় লিপিবদ্ধ করেছে, সেখানে রোহিঙ্গাদের স্থান হয়নি। তারা শত শত বছর ধরে বংশ পরম্পরায় মিয়ানমারে বাস করে এলেও কর্তৃপক্ষ তাদের অবৈধ অভিবাসী বিবেচনা করে।
মিয়ানমারে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিতে কাজ করে উগ্র বৌদ্ধদের অনেকগুলো গ্রুপ। ২০১৫ সালে মিয়ানমার সেন্টার ফর রেসপনসিবল বিজনেসের এক জরিপে দেখা যায়, অনলাইনে ঘৃণাসংবলিত যেসব পোস্ট দেয়া হয় তার ৯০ ভাগই মুসলিমদের টার্গেট করে দেয়া। সামান্য অজুহাতেও এখানে মুসলিমদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে উগ্র বৌদ্ধরা। ইয়াঙ্গুনে বোরকা পরা এক মুসলিম নারী দ্য ইকোনমিস্টের সাংবাদিককে জানান, ‘আমাদের সাথে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকের মতো আচরণ করা হচ্ছে। আমাদেরকে খুবই সতর্ক থাকতে হয়। একটি সাধারণ ঘটনাও দাঙ্গায় পরিণত হতে পারে।’
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, রাখাইনে ৪ জুলাই একটি নৌকা কেনা নিয়ে তর্কের একপর্যায়ে একদল বৌদ্ধ এক রোহিঙ্গাকে হত্যা করেছে। মুসলিমদের বাড়িঘর, মসজিদ ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ওপর সাম্প্রতিক সময়েও অনেক হামলা হয়েছে। ২০১২ সালে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত নির্যাতন চালানো হয়। এতে প্রায় ২০০ জন নিহত হয়। আর গত বছরের তাণ্ডবে তো সরাসরিই ভূমিকা রেখেছে দেশটির সেনাবাহিনী।
জাতিসঙ্ঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার গ্রুপ বলছে, সৈন্যরা ভয়াবহ মাত্রায় ধর্ষণ, খুন ও রোহিঙ্গাদের গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে আতঙ্কজনক পরিবেশ সৃষ্টি করে। জাতিসঙ্ঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বাধীন কমিশন মনে করে, সৈন্য পাঠিয়ে নয়, দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে আন্তরিক হওয়া উচিত মিয়ানমার সরকারের। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে অনেক দিন ধরেই কোনো সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক, ত্রাণকর্মী এমনকি কূটনীতিকদেরও যেতে দিচ্ছে না মিয়ানমার সরকার। জাতিসঙ্ঘ ওই এলাকায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার তদন্তে আগ্রহী হলেও মিয়ানমার তাদের সহায়তা করছে না।
মিয়ানমার জনসংখ্যার প্রায় ৯০ ভাগ বৌদ্ধ। সন্ন্যাসীত্বপ্রাপ্ত বা সঙ্ঘের সদস্য হওয়াটা দেশটিতে বেশ জনপ্রিয়। তাদের প্রায় পাঁচ লাখ তথা জনসংখ্যার প্রায় ১ শতাংশই সন্ন্যাসী। রোহিঙ্গাবিরোধী দাঙ্গার সূত্রপাত হয়েছে তাদের মাধ্যমেই। দেশটির রাজনীতিতেও এই সন্ন্যাসীদের ব্যাপক প্রভাব। কোনো সরকারই সন্ন্যাসীদের মতামতকে উপেক্ষা করতে পারে না। তাই তো সামরিক শাসন থেকে বেরিয়ে এলেও দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতি তথা রোহিঙ্গা মুসলিমদের অধিকার রক্ষার বিষয়ে কোনো অগ্রগতিই হচ্ছে না।
লেখা : ওয়াসিম ফারুক
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৭