ছেলেবেলার দিন ফেলে এসে সবাই আমার মতো বড় হয়ে যায়,
জানিনা কজনে আমার মতো মিষ্টি সে পিছু ডাক শুনতে যে পায় !!
হুম!! দেখতে দেখতে ছেলেবেলা অনেক পেছনে ফেলে এসেছি। আমি ছিলাম একজন কন্যা, একজন স্ত্রী, এরপর এখন একজন মা। এই কন্যা হতে মা পর্যন্ত আসার পথটা খুব দ্রুত মনে হয় শেষ হয়ে গেলো। তখন জীবনের একরকম সৌন্দর্য ছিল,তখন ছিল আদর মাখা শৈশব, দুরন্ত কৈশোর আর উচ্ছলতাময় তারুণ্য।এখন আছে আমার কন্যার শৈশব, আমার তাকে বেড়ে উঠতে দেখার আনন্দ, স্বামীর সাথে ছোট ছোট খুনসুটি, আনন্দ ভাগাভাগি আর মাঝে মধ্যে টুকরো ঝগড়া।আছে মা হিসেবে দায়িত্ববোধ। আছে স্ত্রী হিসেবে চিন্তা আর নানান ধরনের দুশ্চিন্তা। কিন্তু দিনশেষে সবকিছু মিলিয়ে ভালোই তো আছি, আর ভালোথাকাটাই তো জরুরী।
একটা সময় ছিল যখন অনেক সময় নিয়ে, আয়েশ করে জোছনা দেখতাম। যাকে বলে জোছনা বিলাস করতাম। এখন কাজেকর্মে ব্যস্ততায় ঠিকমতো আকাশের দিকেও তাকানো হয়না। তবে ইচ্ছে করে মাঝেমাঝে কন্যার বাবার পাশে বসে কন্যাকে সাথে নিয়ে আয়েশ করে জোছনা দেখতে। চেষ্টা করেছি কয়েকবার কিন্তু আমার দুষ্টু পাখিটা যে অন্ধকারে বসতেই চায় না। কি আর করা, আমাদেরও জোছনা দেখা হয়ে ওঠে না।
কন্যার বাবা খেতে ভালোবাসে আর আমি রাঁধতে। ইচ্ছে করে তাকে সকল ভালো খাবার গুলো রেঁধে খাওয়াই, কিন্তু সময় যে বড় অসহায়!! চাকরিজীবন আর সংসারজীবন দুটোর মাঝে সমন্বয় করতে গিয়ে সবসময় ইচ্ছা করলেও সব পারিনা। যখন পারিনা তখন মনে মনে মন খারাপ হয়। তারপরেও, চেষ্টা করছি যতটুকু পারা যায় করতে।
কন্যার বাবাকে বলছি, তুমি কি জানো মাঝে মাঝে আমার কি ইচ্ছা হয়?? মাঝে মাঝে ইচ্ছা হয় তোমার সাথে অনেক গল্প করি। এমনি এমনি গল্প। গল্পের কোন শুরু থাকবে না, থাকবেনা কোন শেষ। গল্প করবো আর বাদাম খাবো। গল্প চলতেই থাকবে। হয়তো গল্প করতে করতে রাত শেষ হয় যাবে, কিন্তু মনে হবে যেন গল্প শেষ হয়নি।
এবার যখন ঘুরতে গেলাম, বেশ ভালো লেগেছে। আসলে অনেক ভালো লেগেছে। কিন্তু কন্যার বাবাকে ভালো করে বেপারটা বলা হয়নি।তোমাকে ধন্যবাদ অনেক দিন পরে ঘুরতে নিয়ে যাবার জন্য। এবার ঘুরতে গিয়ে যেটা বুঝলাম, সেটা হল আমি আগের মত মজা করে ঘুরতে পারছিনা। সারাক্ষন খেয়াল রাখতে হচ্ছে মেয়েটার দিকে। কি ধরছে, কি করছে, কি খাচ্ছে ইত্যাদি ইত্যাদি। সবমিলিয়ে বুঝতে পারলাম, এবার কোন নব বিবাহিত দম্পতি বা উচ্ছল কোন তরুণী ঘুরতে যায়নি। এবার ঘুরতে গিয়েছিলো একজন মা। এই মা হবারও আলাদা একটা মজা আছে। অন্যরকম আনন্দ আর সুখ আছে।
একটা সময় বৃষ্টিতে ভিজতেও ভালো লাগতো।। এখন কেন যেন আর বৃষ্টিতে ভেজা হয়না। তবুও ইচ্ছে করে কখনো ঝুম বর্ষায় আমার ছোট্ট পরী আর তাঁর বাবাকে নিয়ে ভিজতে। হয়তো কখনো ভিজে সেই অভিজ্ঞতাও লিখে রাখবো।
তোমায় গান শোনাবো, ওগো দুখ জাগানিয়া, তোমায় গান শোনাবো। হুম!! গান গাইতে বেশ ভালো লাগে, ভালো লাগতো। ইদানিং গলার ঠাণ্ডার সমস্যার কারনে তো গান গাওয়াই হয়না। তবুও মনে হয়, যখন ঠিক হবে তখন পরী আর তাঁর বাবাকে নিয়ে আয়েশ করে গান গাইবো। কেমন হবে?? ভালো লাগুক আর নাই লাগুক আমার গানতো তাদের শুনতেই হবে। হাহাহা!!!
আর কি লিখা যায়?? না থাক, এখন আর না। পরে না হয় আবার লিখবো। আজ এ পর্যন্তই থাক।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৫৪