বঙ্গপোসাগরে ছোট খাট একটা শীপ নোঙর করে বসে অনুমতির অপেক্ষায়।প্রাচীন এক নিদর্শন উদ্ধার করে আনার জন্যই ফাইন্ডিং শীপের আগমন। ক্যাপট্যান গিয়ার নিজেও দিধান্বিত,আদৌ কি সেটা উদ্বার করা সম্ভব? হাজার বছরের আগের জনপদ পানির তলায়,কত টুকুই বা অক্ষত আছে?
দূর উপকূলের আভা পর্যন্ত নাই কোথাও।উপকূল আরো ৫০০ কিলো মিটার ভিতরে।তবে গিয়ার জানে হারানো ভুমিটি বেশি দূরে নয় ২০০ কিলোমিটারের মধ্যেই পড়বে।গত এক বছেররও বেশি সময় ধরে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছিল এই অভিযানের।
গিয়ার বেঞ্চিতে বসে সকালের রোদের উষনতা উপভোগ করতে থাকে, এলাকটি বিষুব অঞ্চলে হওয়ায় তেমন ঠান্ডা নয়,এই ধরনের এলাকাতে শীতের সকাল গুলো অবশ্যই বিশেষ কিছু।গিয়ার কফি খেতে খেতে প্রতিদিন প্রান ভরে উপভোগ করে সেটা।
দূর দিগন্তের দিকে হারানো শহরটির ছবি ভেসে উঠতে থাকে মনে।গত একবছরে এত তথ্য জানাগেছে ,গিয়ার মনে মনে ঐশহরের একজন ভাবাশুরু করেছে।
প্রাচীন কালে শহর হারিয়ে যেত,হঠাৎ করে।ভূমিকম্প নয় তো প্রাকিতিক জ্বলোস্বাস।এই হারানো শহরটিও প্রায় একই ধরনের নিয়তি নিয়ে বসেছিল,পার্থক্য ছিল সবাই জানত আগে থেকেই।
কিন্তু প্রকৃতি মনে হয় এই রকম পূর্বঅনুমিত ভবিষ্যত পছন্দ করে না। কে জানত এভাবে শহরটি হারিয়ে যাবে?
পৃথিবীর প্রথম ফিশন রিয়েক্টর বসানো হয়েছিল এই অঞ্চলে ।কারনটা পরিস্কার,প্রথমত শহরটি পানির নিচে চলে যাবে,আস্তে আস্তে পরিত্যক্ত হতে শুরু করে শহরটি।
আরেকটি কারন ছিল,দেশটির জনসংখ্যা।বিশাল জনসংখ্যার অন্যজায়গায় সরানোর একটি শর্ত ছিল এই ফিশন রিয়েক্টর টি বসানো।
ফিশন রিএক্টর যেন শপেবর হয়ে দাড়ঁলো এই এলাকার জন্য।পরিত্যক্ত শহরটি আবার জেগে উঠে।
প্ল্যানের উপর প্ল্যান হতে থাকে কিভাবে এই শহর টিকে রক্ষা করা যায়।বিশাল বিশাল প্রজেক্ট দাড়ঁকরানো হয় শহর রক্ষার জন্য।
এইটা অনেকটা নিশ্চিত হয়েগেছিল অবশিষ্ট শহরবাসীরা যে তাদেকে অন্তত উদবাস্তু হতে হবে না।
দিনটি পৃথিবীর ইতিহাসের এক ট্রেজেডি।
টাওন মেয়র,মঞ্চে দাড়িঁয়ে ঘোষনা দিলেন,আগামী দুইশ বছরেও এই শহরকে এক চুলও নড়াতে পারবে না প্রকৃতি.....
চারিদিকে হর্ষ ধ্বনি আর তালি,লোকজন শিস দিতে থাকে,আনন্দ ফূর্তিতে মেতে উঠে। কে জানত ঐদিনই শেষদিন!!!
কোন এক অজানা কারনে শক্তিশালী ফিশন রিয়েক্টরটি বিস্ফোরিত হয় ...কোটি ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় বস্মিভূত হয়ে যায় শহর।মূহুর্তের মধ্যে সব পানি আকাশে হারিয়ে যায়।ঘুমিয়ে থাকা বিপদ জাগিয়ে তুলে এই বিস্ফোরন।
ভূমিকম্প শুরু হয়ে যায় পুরো এলাকায়।
অনেকটা জাহাজের মত তলিয়ে যায় পুরো শহরটি মূর্তের মধ্যে।হিমালয় পর্যন্ত পৌওছে যায় ভূমির আন্দোলন।
গিয়ার আর কল্পনা করতে পারছে না সেই ধ্বংসলীলা।
মাইন্ড ডাইরীতে জামা করে রাখে চিন্ত গুলোকে ।কে জানে চিন্তাগুলোর সিমুলেশন থেকে জৈব নেটওয়ার্ক নতুন কিছু বের করে আনতে পারে।
ও হ্যা,মাইন্ড ডাইরীতে লোকেশন ট্যাগ তো দেয়া হয়নি ।
শহরটির নাম চট্টগ্রাম।
এক জন ক্রু এগিয়ে আসে...
ক্যাপটেন, গর্ডন অপেক্ষা করছে ভার্চুয়াল মিটিং এ
তাই তো মিটিং এর কথা ভুলেই গেছিলাম...
গিয়ার উঠে দাড়াঁল বেঞ্চি থেকে।
২
গিয়ার ভার্চুয়াল মিটিং এক্টিভ করল।
গর্ডনের অবয় ফুটে উঠতে থাকে ধীরে ধীরে।
-স্বাগতম, গর্ডন...বলল গিয়ার।
-অনেক ধন্যবাদ ।
-গিয়ার আমাদের মিশন স্ট্রেটিজি অনেকটা পরিবর্তন আনা হয়েছে।
-এখন পরিবর্তন?
-হুম,এটা অনেকটা পূর্বনিধারিতই ছিল।
-তুমি ভালো করে জান খুব গোপন একটা প্রজেক্ট এটা...
নিরাপত্তার জন্য অনেক কিছুই প্রকাশ করা যায় না আগে থেকে
-তাই বলে আমার সাথেও না?
-গিয়ার, বুঝতে পারছি। কিন্তু করার কিছু নাই।
-তো কি এখন মিশন অবজক্টিভ?
-একটা মানুষ কে খুঁজে বের করতে হবে।
-গর্ডন তুমি নিশ্চই আমার সাথে ফাইজলেমি করছ না।
-না,তা হবে কেন?
-তুমি নিশ্চই জীবত কোন মানুষের কথা বলছ না।
-অনেকটা তাই
দুই হাজার বছরেরে পুরোনো বিশেষ এক মানুষ কে প্রয়োজন আমাদের।
-তুমি কি মনে কর মানুষের শরীর স্টেইন লেস স্টিল দিয়ে তৈরী?
-ব্যাপারটা খুলেই বলি...
ফিশন বিস্ফোরন টি যখন হয়েছিল নিশান তখন একটা টিউবে ছিল।আমরা অনেক হিসাব নিকাশ করে দেখেছি টিউবটি অনেকটা নিরাপদ দুরত্বে ছিল বিস্ফোরনের জায়গা থেকে।তার চেয়ে বড় কথা টিউবটা একটা ৫কিলোমিটার টানেলের মধ্য ছিল সেই সময়।
নিশানের শরীর পাওয়া যাবের সম্ভাবনা ৬০%
-সেইজন্যই ডিএনএ ল্যাব টি দেয়া হয়েছিল?
-আমি আগেই বলেছি, মিশন অবজেক্টিভটা পূর্ব নির্ধারিতই ছিল।
নিশান কে খুঁজে পেতে যা দরকার,সবধরনের প্রযুক্তিই আছে জাহাজে।
-কিন্তু এই নিশান এত গুরুত্ব পূর্ন কেন?
-সেটা না হয় নিশানকে খুঁজে বের করার পরে বলি?
(চলবে....)
বি.দ্র. যখন গল্পটা লেখা শুরু করি তখন মাথায় ছিল যে,আগের কোন একটা সাই ফাইয়ের সিকুয়েল....কিন্তু সেটা করতে পারব কিনা জানি না
।কোন সাই ফাইয়ের সিকুয়েল সেটা আগে থেকে বলছিনা...হয়ত ঐ গল্পের সাথে মিলে যাবে নয়নতো আলাদা থাকবে।
©আজম
অন্যান্য সাই ফাই
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুলাই, ২০১০ বিকাল ৩:৫৪