চুরি গুম অপহরণ দেখে আমরা অভ্যস্ত। যতক্ষণ পর্যন্ত নিজের ক্ষতি না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত শান্ত থাকার নিয়ম কর্মজীবনের কষ্টার্জিত অবসর সময়টিকে বিসর্জন দিয়ে হাবিজাবি কিছু লিখি। তাও আবার চুরি হয় দেখে হতাশা লাগেই তো। অনেক দিন পর বিষয়টি চোখে পড়লো। সন্দেহপ্রবণ হয়ে না খুঁজলে হয়তো কখনও বুঝতে পারতাম না। সন্দেহটা কীভাবে সৃষ্টি হলো সেকথা পরে বলছি।
‘ঘোড়া ও ছাগল ’ নিয়ে আমার একটি লেখা সামুতে প্রকাশ করেছিলাম ২৩ মে ২০১৩ তারিখে। আজ বিস্মিত হয়ে দেখলাম, ডিসেম্বরের ১৭ তারিখে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড নামের একটি ফেইসবুক গ্রুপ লেখাটি প্রকাশ করেছে। সেখানে আমার নামও নেই! কবিতার আকৃতিতে হুবহু লেখাটি প্রকাশ করে তারা ‘লাইক’ পেয়েছে ৩১৭ জনের এবং শেয়ার হয়েছে ৮৯ বার । এসব চোরদেরকে প্রতিরোধ করার কোন পরামর্শ কি কারও জানা আছে?
এবার বলছি কীভাবে সন্দেহ সৃষ্টি হলো। আমার বিশ্বাস বিষয়টি সকলকে উপকৃত করবে। ‘হুইটম্যান’ এর কয়েকটি কবিতা আমি অনুবাদ করেছিলাম। বাংলায় হুইটম্যান’র কোন লেখা আছে কিনা জানার জন্য আজ ‘অনুসন্ধান’ দিয়ে দেখলাম, আমার অনূদিত কবিতাগুলো ‘ক্রন্দসি’ নামের একটি সাইট প্রকাশ করেছে। তাদেরকে আমি চিনিই না। ‘আমাদের-কথা ডট কম’ নামে আরেকটি সাইট আছে যারা নিয়মিতভাবে সামু’র গুরুত্বপূর্ণ পোস্টগুলো পুনঃপ্রকাশ করছে। জানিনা সামু’র সাথে তাদের কোন অংশিদারিত্ব আছে কি না।
দেখুন কয়েকটি দৃষ্টান্ত:
দৃষ্টান্ত ১: ক্রন্দসি নামের সাইটটিতে আমার অনুবাদ কবিতা
দৃষ্টান্ত ২: 24deshinews.com-এ অনুমোদনবিহীন প্রকাশ
দৃষ্টান্ত ৩: pipilika.com নামের একটি সাইটে আমার লেখা । (আপনার লেখাও থাকতে পারে!)
দৃষ্টান্ত ৪: আমাদের কথা ডট কমে অনুমোদনবিহীন লেখা প্রকাশ । আপনার লেখাটিও খুঁজুন
দৃষ্টান্ত ৫: আমাদের কথা ডট কমে আমার অনেক লেখা প্রকাশ করেছে। আমি তাদেরকে চিনি না। কেউ কি চেনেন?
কিছুদিন আগে সহব্লগার খেয়াঘাটের তদ্রুপ একটি দৃষ্টান্ত দেখেছিলাম। দেখে বিস্মিত হলেও ক্ষিপ্ত হই নি, কারণ বিষয়টি নিজের নয় তো কিন্তু আমি অত বড় লেখক নই। তবু নিজের হাবিজাবি লেখাটি অন্যের নামে প্রকাশিত হতে দেখলে কার ভালো লাগে? ব্লগারদের লেখার বুঝি কোন দাম নেই? (যথেষ্ট রাগও করতে পারি না, এজন্য রাগও আরও বেড়ে যায়!)
তাই সকলেরই নিজ লেখার ‘খোঁজ দ্য সার্চ’ করা উচিত। চোরের মার বড় গলা হবার কারণে দেখা যাবে যে, চোরই মৌলিক লেখক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন।
সহব্লগারদের প্রতি আমার পরামর্শ:
যদি মৌলিক লেখার মালিক হোন, তবে গুরুত্বপূর্ণ পোস্টগুলোর শিরোনাম নিয়ে গুগল-এ গিয়ে সার্চ দিন। আপনিও একই ফল পেতে পারেন। এসব বিষয়ে মৌলিক লেখকদের সচেতনতা না হলে লেখাচোরদেরকে প্রতিহত করা যাবে না।
সামুতে অধিকাংশ ব্লগার মৌলিক বিষয় নিয়ে লেখেন। তাদের আছে অগণিত সৃজনশীল লেখা। এসব লেখাকে বাঁচানোর জন্য সামু কর্তৃপক্ষেরও কিছু করার আছে কিনা আমার জানা নেই। যদি থাকে, তবে বিষয়টিতে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। ইন্টারনেটে লেখাচোরদেরকে থামানোর কোন উপায় থাকলে দয়া করে নিচে শেয়ার করুন। এটি সকলেরই উপকারে আসবে বলে আমার বিশ্বাস।