এখন বর্ষা কাল, মাছের প্রজনন কাল। অধিকাংশ দেশীয় মাছের ডিম ছাড়া, রেণু তৈরী ও পোনা মাছ বড় হওয়া সবই ঘটে এসমটাতে। মাছের বংশ বিস্তার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রয়েছে সরকারের বিভিন্ন আইন-কানুন। বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ স্বাদু পানির মৎস্য আধার কাপ্তাই লেক।প্রতি বছর কাপ্তাই লেকে এসময় অর্থাৎ বর্ষা ঋতুকে কেন্দ্র করে প্রায় তিন মাস মৎস্য আহরন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকে। কিন্তু চোর না শুনে ধর্মের কাহিনী। অগত্যা চোরকে ধর্মপালনে বাধ্য করতে হয়।
অনেক প্যাচাল পাড়লাম। আসুন এবার কাপ্তাই লেকে আমার ২৭/০৫/২০১৩ তারিখের একটি মোবাইল কোর্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করি।
মোবাইল কোর্টের উদ্দেশ্যে যাত্রা
এ জার্নি বাই বোট। তবে আনন্দ জার্নি নয়। অন ডিউটি। এ জার্নি ফর জব।
শুরুতে অভিযানের পরিকল্পনা। পরিকল্পনায় নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট, মৎস্য ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা (এম এম ইসলাম) ও বাংলাদেশ মৎস্য কর্পোরেশন এর কর্মকর্তা।
পুলিশ ভাইয়েরা নৌযানের ভেতরেই থাকেন। দূর থেকে আপনাদের ড্রেস দেখলেই অপরাধীরা পালাবে। আমাদের নিরাপত্তার প্রয়োজন হলে কেবল তখন আপনাদের একশন শুরু করবেন।
অবৈধ মৎস্য শিকারীদের অনুসন্ধান।
এইতো পেয়েছি। একেবারে হাতে নাতে ধরা।
কি ব্যাপার? আমাদের দেখে পালাচ্ছে কেন? ডাল মে কুছ কালা হে।
আচ্ছা, এই ব্যপার! জাল পানিতে ফেলেই পালানো হচ্ছে। ও ভাই, দাড়ান। আপনার জাল ফেলে যাচ্ছেনতো।
দেখেন ভাই, একেই বলে জেন্টলম্যান।জালগুলো আমাদের জন্য কি সুন্দর প্যাকেট করে রেখে গেছে। থ্যাংস জেলে ভাই।
কি দেখছেন আপনার? পানির বোতল? বোতলের নিচেই কিন্তু মাছ ধরার জাল।
কান টানলেই মাথা আসে। আর বোতল টানলে জাল।
বোতলের বিকল্প। ছোট এই ফোমের নিচেই মাছের জাল।
কি বিশ্বাস করলেন নাতো? দাড়ান পরিক্ষা করে দেখাই।
কি, দেখলেনতো? মিছা কিছু কি বললাম?
কাপ্তাই লেকের চারিদিকে কচুরিপানা। আমাদের চোখ ফাকি দিতে অবৈধ মাছ শিকারীরা বোতল/ফোমের পরিবর্তে জালে ব্যবহার করছে এই কচুরিপানা। দূর থেকে এমনকি কাছ থেকেও সনাক্ত করা খুব কঠিন।
কি, আবারো অবিশ্বাস? তবে হয়ে যাক চ্যালেঞ্জ।
হুম! কিছু বিঝা গেল?
দাড়ান, আর একটু ক্লিয়ার করি। কি, চেলেঞ্জে হেরে গেলেনতো?
মানুষ নিয়ে আর পারা যায় না। পরিবেশ নিয়ে কারো কোন চিন্তা নেই। দেখেন একটা জুতা পানিতে ফেলে রেখেছে। কিন্তু---- কেমন যেন সন্দেহ লাগছে !
ও মাই গড! জুতার ভেতরে বোতল লুকানো। আর তার নিচে জাল। ব্যাটাদের বুদ্ধি দেখেছেন? জিনিয়াস, রিয়েলি জিনিয়াস। আমাদের চোখ ফাঁকি দিতে একেবারে অভিনব পদ্ধতি।
সবাই নিশ্চই এতোক্ষন বোরিং হয়ে গেছেন। দাড়ান, কাপ্তাই লেকে একটা ছোট ঝর্ণা দেখাই। আমাদের কিন্তু কলা বেচা আর রথ দেখার মতো অবস্থা।
এই নেন, আর একটা ঝর্ণা।
রাঙ্গামাটি সদর থেকে যাত্রা করেছিলাম। এখন বরকল উপজেলায় প্রবেশ করছি।
এতো দেখছি কারেন্ট জাল।
ঝাঁকে ঝাঁকে জাটকা, কারেন্ট জালে আটকা। স্যরি, কাপ্তাই লেকে জাটকা নেই। এগুলো সবই চাপিলা মাছ।
আজ এ পর্যন্ত। আপনাদের বিরক্তি আর বাড়াতে চাচ্ছি না।
আমাদের পরবর্তী মোবাইল কোর্টের তারিখ ---- থুক্যু, ভুইল্লা গেছিলাম। এটাতো টপ সিক্রেট।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৬