দুদিন আগে ভোর রাতে খিলগাঁওয়ের রিয়াজবাগে একটি বাসায় আগুনে পুড়ে বড় ছেলেসহ এক দম্পতির নির্মম ভাবে নিহত হয়। নিহত সিরাজউল্লাহর দোতলার ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখা যায়, তিনটি শোয়ার ঘরের দুটির আংশিক মালপত্র পুড়ে গেছে। নিহত সিরাজউল্লাহর শোয়ার ঘরের সিলিং ফ্যান পুড়ে বাঁকা হয়ে গেছে। এই ঘরের খাট, তোশক, জাজিম, কাপড়চোপড় ও দরজা পুড়ে গেছে। জানালার কাচ সব উড়ে টুকরা টুকরা হয়ে পাশের টিনের ঘরের ওপর পড়েছে। সিরাজউল্লাহর ঘর থেকে বেরিয়ে ডাইনিং পেরিয়ে যেতে হয় ছেলে রাশিদুলের ঘরে। রাশিদুলের ঘরে গিটার-কম্পিউটার পুড়ে কুঁচকে গেছে। পুড়ে গেছে বসার কক্ষের বৈদ্যুতিক সুইচ বোর্ড, একটি টেবিল ও সোফার অংশবিশেষ।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অভিযান) মেজর মোহাম্মদ মাহবুব প্রথম আলোকে বলেন, টেলিভিশন বিস্ফোরিত হলে সিরাজ-ফাতেমা দম্পতির ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একই সময় আরেক কক্ষে কম্পিউটার বিস্ফোরিত হলে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বৈদ্যুতিক গোলযোগে এ ধরনের বিস্ফোরণ ঘটে।
সামরিক লোকেরা কি সব মাথামোটা হয় নাকি? পৃথিবীতে কোথাও শুনিনি যে, কম্পিউটার বা টিভি বিস্ফোরিত হয়ে আগুন লাগে! এসব যদি বিপদজনক বস্তু হত মার্কিন এয়ারলাইনসগুলো এসবের বিমানে বহন নিসিদ্ধ করতো!
টিভি বা পিসি ভোরাতে কেউ চালিয়ে রাখে নাকি?
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের বোম্ব ডিজপোজাল ইউনিটের এডিসি মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন একটি বিশ্বাসযোগ্য কথা বলেছেন -
কোন ফ্ল্যাট বাড়িতে আলো-বাতাস প্রবেশের ঘাটতি দেখা দিলে এক ধরনের দাহ্য গ্যাস জমা হতে থাকে। পরে কোন একসময় ইলেক্ট্রিক শর্ট সার্কিটে কোন ধরনের স্পার্কিং হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে থাকে।
এর আগে ২২শে মে রাজধানীর মুগদা পাড়ায় বাসাবাড়িতে রহস্যজনক বিস্ফোরণে একই পরিবারের চারজন অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। এঘটনারও কোন সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি।
এর আগে মিরপুরে আইন প্রতিমন্ত্রীর এক ভাগ্নে কথিত ল্যাপটপ বিস্ফোরণে মারা যান। তার কিছদিন আগে মোহাম্মদপুরে এক ব্যবসায়ী বাথরুমে সিগারেট ধরানোর পর বিকট বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। এসব দুর্ঘটনারও ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ মামুলি শর্টসার্কিটের দোহাই দিয়ে আর কোন তদন্ত করেন নি। নাগরিকদের কি ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে এ ধরনে কোন নির্দেশনাও ছিল না।
আমার নিজ ধারনা গত পড়শু খিলগায়ের অগ্নিকান্ডটি গ্যাস দুর্ঘটনা। বাথরুমের শুয়ারেজ লাইন থেকে আসা বায়োগ্যাস (মিথেন) যা সারারাত ধরে জমছিল ধিরে ধিরে, রাতে বৃষ্টির কারনে প্রায় সব জানালাই বন্ধ ছিল, ফ্রিজ অটো অন-অফ হওয়ার স্পার্কে জমেথাকা গ্যাস ইগনিশান হয়ে বিষ্ফোরিত হয়, এতে সব জানালার কাঁচ উড়ে গিয়েছিল, ঘরেও আগুন ধরে যায়।
সবার সাবধান ও সচেতন হওয়া উচিত।
খবরের লিঙ্ক
Click This Link
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:০৯