somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যত দূর চোখ যায়, শুধু মানুষ আর মানুষ। মহাসমুদ্রের কেন্দ্রবিন্দু ছিল গতকালের শাহবাগ। পশ্চিমে কাঁটাবনের মোড়, পূর্বে মৎস্য ভবন, উত্তরে রূপসী বাংলা হোটেল আর দক্ষিণে টিএসসি ছাড়িয়ে গেছে জনতার সেই ঢল

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যত দূর চোখ যায়, শুধু মানুষ আর মানুষ। মহাসমুদ্রের কেন্দ্রবিন্দু ছিল গতকালের শাহবাগ। পশ্চিমে কাঁটাবনের মোড়, পূর্বে মৎস্য ভবন, উত্তরে রূপসী বাংলা হোটেল আর দক্ষিণে টিএসসি ছাড়িয়ে গেছে জনতার সেই ঢল

শাহবাগ স্কয়ারের ফেসবুক পেজ এ লাইক করে একাত্বতা প্রকাশ করুন।
এ যেন জাতির নবজাগরণ। যত দূর চোখ যায়, কেবল মানুষ আর মানুষ। লাখো জনতার এই মহাসমুদ্রের কেন্দ্রবিন্দু শাহবাগের ‘প্রজন্ম চত্বরের’ নবজাগরণ মঞ্চ। তবে পশ্চিমে কাঁটাবনের মোড়, পূর্বে মৎস্য ভবন, উত্তরে রূপসী বাংলা হোটেল আর দক্ষিণে টিএসসি ছাড়িয়ে গেছে জনতার সেই ঢল। সমবেত এই জনতার কণ্ঠে নানা স্লোগান, চোখেমুখে রাজপথে থাকার দৃপ্ত শপথ।
গতকাল শুক্রবার বেলা তিনটায় এই ছিল শাহবাগ ও আশপাশের এলাকার চিত্র। লাখো জনতা যখন চিৎকার করে সমবেত কণ্ঠে বলছিলেন ‘জয় বাংলা’, যখন বলছিলেন ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা’; ‘একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’; তখন মনে হচ্ছিল, এই বুঝি সত্যিই এক রণাঙ্গন। যেন প্রিয় স্বদেশকে হায়েনার হাত থেকে রক্ষার শপথ নিচ্ছেন জনতা।
কাদের মোল্লাসহ মানবতাবিরোধী সব অপরাধীর ফাঁসির দাবিতে গতকালের শাহবাগের মহাসমাবেশে যোগ দিতে এসেছিলেন এই জনতা। সবার একটাই কথা, ‘ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি’। বেলা তিনটায় পূর্বঘোষিত এই মহাসমাবেশ শুরু হলেও সকাল থেকেই শাহবাগ ও এর আশপাশের এলাকায় জনতার ঢল নামে।
বেলা তিনটায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে মহাসমাবেশ শুরু হয়। এ সময় উপস্থিত জনতা একাত্তরের হত্যাকারী আর ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন। এই মহাসমাবেশ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার দাবিও তোলা হয়। দাবি আদায়ে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার শপথ নেন উপস্থিত জনতা।
কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন সাজার রায় প্রত্যাখ্যান করে গত মঙ্গলবার বিকেলে শাহবাগ মোড়ে এই বিক্ষোভের সূচনা করে ব্লগার ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ফোরাম। এরপর বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এ আন্দোলনে যোগ দেন। মঙ্গলবারের পর সকাল পেরিয়ে দুপুর, দুপুর পেরিয়ে রাত, রাত পেরিয়ে আবার সকাল হয়েছে অনেকবার। কিন্তু আন্দোলনকারীদের তাতে কোনো ক্লান্তি নেই, কোনো ক্লান্তি নেই সাধারণ মানুষের। কোনো ক্লান্তি নেই বাংলাদেশের।
গন্তব্য শাহবাগ: গতকাল সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন জড়ো হতে শুরু করেন শাহবাগে। কয়েক দিন ধরে রাত জাগার ক্লান্তি ধুয়ে ফেলে ভোরের আলো ফোটার পরপরই প্রতিবাদী আন্দোলনের কর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে স্বাগত জানান আগতদের। সব মিলিয়ে সকাল থেকে আবার মুখরিত হয়ে ওঠে শাহবাগ।
ছাত্র ও যুবকদের এই মহাসমাবেশে যোগ দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা যোগ দেন। শিক্ষক-চিকিৎসক-প্রকৌশলী—সব শ্রেণী-পেশার মানুষ এসেছিলেন এই মহাসমাবেশে। নারী-পুরুষ-কিশোর-তরুণী-যুবক—সব বয়সের মানুষেরই সরব উপস্থিতি ছিল এই শাহবাগে। এমনকি যে শিশু হাঁটতে জানে না, সেও এসেছিল মা-বাবার কোলে চড়ে। এসেছিলেন অনেক মুক্তিযোদ্ধাও। বোন এসেছে ভাইয়ের হাত ধরে।
উপস্থিত জনতার একটাই দাবি, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি। আর তাই আগতদের অনেকেই সেসব দাবি লিখেছিলেন তাঁদের শরীরে। উপস্থিত অনেকের পরনেই ছিল লাল-সবুজের পোশাক, অনেকের কপালে লেখা ছিল—বাংলাদেশ।
রংপুর থেকে এই আন্দোলনে যোগ দিতে এসেছিলেন স্কুলশিক্ষিকা পঞ্চাশোর্ধ্ব বেবী চৌধুরী। সমাবেশ মঞ্চের কাছে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোনোভাবেই ঘরে বসে থাকতে পারছিলাম না। তাই রংপুর থেকে চলে এসেছি। এখন আমার অনেক শান্তি লাগছে।’
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শাহবাগে বাড়তে থাকে মানুষের অংশগ্রহণ। রাজধানী ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আসা মানুষের হাতে ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই’ লেখা প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার ছিল। মুক্তিযোদ্ধারা আসেন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের লাল পতাকা নিয়ে। প্রতিটি মিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রবেশ করলে আশপাশের সহযোদ্ধারা তাঁদের তুমুল করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানান।
সকালে শাহবাগ চত্বর থেকে বারডেম হাসপাতাল পর্যন্ত প্রায় ১০০ ফুট লম্বা তিনটি সাদা কাপড় বিছানো হয় রাজপথে। সেখানে হাজার হাজার মানুষ লিখছেন তাঁদের মনের কথা, মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার আকুলতার কথা। তাঁরা লিখছেন, ‘হয় আমাকে ফাঁসি দাও, নয়তো কাদের মোল্লাসহ সব রাজাকারকে।’ উদয়ন স্কুলের এক ছাত্র লিখেছে, ‘যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায় না শুনে বাড়ি ফিরে যাব না।’ ইস্কাটনের বাসিন্দা সাইফ তানভীর লিখেছেন, ‘কোথায় তোমার মুক্তিসেনা, কোথায় আছ তোমরা? জেগে ওঠো বাংলাদেশ।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের ছাত্রীরা মহাসমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন ঝাড়ু হাতে। তাঁরা প্রতীকী কুশপুত্তলিকা বানিয়ে ঝাড়ু দিয়ে পেটাচ্ছিলেন। চারুকলার শিক্ষার্থীরা সকাল থেকেই রং-তুলি হাতে ছড়িয়ে ছিলেন বিভিন্ন স্থানে। তাঁরা অনেকের কপালে-গালে এঁকে দিয়েছেন লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা। জাদুঘরের সামনে আলোকচিত্রীরা আন্দোলনের ছবির প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। সকাল থেকেই শাহবাগের কোথাও চলে গণসংগীত, কোথাও নাটক, আবার কোথাও বা যুদ্ধাপরাধীবিরোধী চিত্রাঙ্কন। বেলা দুইটার দিকে শাহবাগসহ আশপাশের গোটা এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
মহাসমাবেশ শুরু: শাহবাগে লাখো জনতার সরব উপস্থিতি। শাহবাগ মোড়ে একটি ছোট ট্রাকে তৈরি হয়েছে মূল মঞ্চ। সেখান থেকে চরমপত্র পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মহাসমাবেশ। চরমপত্র পড়ে শোনান ব্লগার শহীদুল ইসলাম। তবে আনুষ্ঠানিক মহাসমাবেশ শুরু হয় বেলা তিনটায়। খোলা ট্রাকে করা মঞ্চে হাজির হন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের নেতারা। সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, দেশের বরেণ্য শিল্পী, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও এসেছিলেন সমাবেশে।
বেলা তিনটায় সমবেত কণ্ঠে গাওয়া হয় জাতীয় সংগীত। লাখো মানুষ বুকে হাত দিয়ে গেয়ে ওঠে প্রাণের প্রিয় সংগীত: ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’। এ সময় সমাবেশস্থলে উপস্থিত অনেকেই কাঁদছিলেন। সব মিলিয়ে তৈরি হয় ভিন্ন এক আবহ।
জাতীয় সংগীতের পর কিছুক্ষণ স্লোগান চলে। এরপর শুরু হয় আনুষ্ঠানিক বক্তব্যের পালা। ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্র ফেডারেশনসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন। তাঁদের সবার একটাই কথা—এটি কোনো দলের আন্দোলন নয়, এটি জাতীয় আন্দোলন। মানবতাবিরোধীদের মৃত্যুদণ্ড না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।
মহাসমাবেশ চলাকালে মঞ্চের সামনে মুক্তিযোদ্ধা দাউদ খান এক হাতে স্টেনগান, আরেক হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবির প্ল্যাকার্ড গলায় ঝুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। মহাসমাবেশের ভেতরেই বসে ছিলেন জাফর ইকবাল। হঠাৎ আয়োজকেরা তাঁর নাম বললে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন জনতা। একপর্যায়ে তরুণেরা অনেকটা পাঁজাকোলা করেই তাঁকে মঞ্চে নিয়ে আসেন। বক্তব্য শুরু করতে এসে তিনি নিজেও জয় বাংলা স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। সমাবেশের মূল মঞ্চে প্রথমে অঞ্জন রায় এবং পরে মুক্তিযোদ্ধা ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফ সমাবেশ পরিচালনা করেন। সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত এ সমাবেশ চলে।
স্লোগানে মুখর শাহবাগ: নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ এসেছিলেন এই মহাসমাবেশে। তাঁরা কেবল সংহতিই প্রকাশ করেননি, তাঁদের বক্তব্যে উজ্জীবিত করেছেন তরুণদের। দিনভর শাহবাগে চলে নানা আয়োজন। কখনো প্রতিবাদী গান, কখনো আবৃত্তি। ক্ষণে ক্ষণে বক্তৃতা। তবে সবকিছু ছাড়িয়ে স্লোগানে মুখর ছিল শাহবাগ। লাখো কণ্ঠে উচ্চারিত এসব স্লোগান মনে হয়েছে জনতার মহাগর্জন।
‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা’; ‘একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’; ‘বীর বাঙালির হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’; ‘জামায়াত মারার হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’; ‘শিবির মারার হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’; ‘জামায়াতের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’; ‘সাম্প্রদায়িকতার আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’; ‘জ্বালো জ্বালো আগুন জ্বালো’; ‘পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা, পাকিস্তানেই ফিরে যা’; ‘লাখো শহীদ ডাক পাঠাল, সারা বাংলায় খবর দে, সারা বাংলা ঘেরাও করে জামায়াত-শিবির কবর দে’; ‘জামায়াত-শিবির রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’; ‘বাংলাদেশের মাটিতে জামায়াত-শিবিরের ঠাঁই নাই’; ‘আমাদের ধমনিতে শহীদের রক্ত, এই রক্ত কোনো দিনও বৃথা যেতে দেব না’; ‘আর কোনো দাবি নাই, রাজাকারের ফাঁসি চাই’; ‘জামায়াতে ইসলাম, মেড ইন পাকিস্তান’; ‘এসো ভাই এসো বোন, গড়ে তুলি আন্দোলন’—এসব স্লোগানে নতুন এক কাব্যের জন্ম হয় শাহবাগে। আর সব স্লোগানের শেষ ছিল: ‘জয় বাংলা’।
তুই রাজাকার, তুই রাজাকার: অসংখ্য স্লোগান উঠলেও শাহবাগের এখন সবচেয়ে বড় স্লোগান: তুই রাজাকার। নতুন এই স্লোগান এবং নতুন এক বর্ণমালা পুরো শাহবাগকে এখন উজ্জীবিত করে রেখেছে। গতকালের মহাসমাবেশে কিছুক্ষণ পরপরই এই স্লোগান চলছিল। বিশেষ করে লাকী যখন সমাবেশ মঞ্চে উঠে এই স্লোগান দেওয়া শুরু করেন, তখন পুরো সমাবেশ যেন নতুন প্রাণ পায়।
লাকী মাইকের এক পাশ থেকে শুরু করেন, ‘ক তে কাদের মোল্লা’। সমস্বরে হাজারো জনতা চিৎকার করে বলতে থাকেন: ‘তুই রাজাকার, তুই রাজাকার’। আবার মাইক থেকে বলা হয়, ‘ক তে কামারুজ্জামান’। সমস্বরে উত্তর: ‘তুই রাজাকার, তুই রাজাকার’। ‘গ তে গোলাম আযম’। সমস্বরে উত্তর: তুই রাজাকার, তুই রাজাকার। ‘স তে সাকা’। সমস্বরে উত্তর: তুই রাজাকার, তুই রাজাকার। ‘ম তে মুজাহিদ’। সমস্বরে উত্তর: ‘তুই রাজাকার, তুই রাজাকার’। ‘ন তে নিজামী’। সমস্বরে উত্তর: ‘তুই রাজাকার, তুই রাজাকার’। ‘স তে সাঈদী’। সমস্বরে উত্তর: ‘তুই রাজাকার, তুই রাজাকার’। জাফর ইকবাল নিজেও এই স্লোগান দিয়ে জনতাকে উজ্জীবিত করেন। এ সময় তিনি বলেন, একসময় এ দেশে তুই রাজাকার বলা যেত না। হুমায়ূন আহমেদ টিয়া পাখি দিয়ে এই স্লোগান শুরু করেছিলেন। এখন তিনি ওপর থেকে সব দেখছেন। লাখো শহীদ আর জাহানারা ইমামও সব দেখছেন।
মঞ্চ থেকে এ সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্যপদ খারিজেরও দাবি জানানো হয়।
শপথে শেষ: সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে শাহবাগের মহাসমাবেশের মঞ্চ থেকে উপস্থিত জনতাকে শপথ পাঠ করান ব্লগার ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক ইমরান এইচ সরকার। তিনি এ সময় বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। সারা দেশে জামায়াত-শিবিরকে প্রতিহত করার ঘোষণাও দেন তিনি। এ ছাড়া জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ এবং জামায়াতকে যারা সহায়তা করছে, তাদের প্রতিহত করার ঘোষণাও দেওয়া হয়। তাঁর শপথের পরই মহাসমাবেশের বক্তব্য পর্ব শেষ হয়।
এরপর আবারও শুরু হয় সাংস্কৃতিক পর্ব। চলে প্রতিবাদী গান ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। শাহবাগের এই মহাসমাবেশ শেষ করে সন্ধ্যায় শিশুপুত্রকে নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন রাহেলা বাবলী। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘সেই মিরপুর থেকে অনেক কষ্টে এসেছিলাম শাহবাগে। এখন তৃপ্তি নিয়ে বাড়ি ফিরছি।’
আন্দোলনের আরেক রাত: সন্ধ্যার পর আবারও সেই একই চিত্র। বিভিন্ন স্থানে চলছে স্লোগান। চলছে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। মোমবাতি আর মশালে সৃষ্টি হয়েছে অন্য এক আবহ। আন্দোলনকারী ক্ষুধার্ত মানুষদের খাওয়াতে অনেকেই বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে এসে দিয়ে যাচ্ছেন। অনেক বৃদ্ধ পরম মমতায় হাত বোলাচ্ছেন তরুণ আন্দোলনকারীদের। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হচ্ছে। কিন্তু শাহবাগের স্লোগান তখনো থামেনি। শাহবাগের আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাঁরা অপেক্ষায় আছেন নতুন এক বাংলাদেশের।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×