বলছিলাম আইএস এর কথা । আল কায়দার পরে আইএস । দুটাই আমেরিকা আর ইসরাইলের তৈরী । ইসলাম ধর্মের নামে অইসলামী কর্মকান্ড ইসলামী দেশ গুলিতে । আমেরিকা গংদের উদ্দেশ্য তেল আর কথিত ইসলাম রক্ষাকারীদের উদ্দেশ্য ক্ষমতা, ভিন্ন নামে ভিন্ন চরিত্রে আন্তপ্রকাশ ।
তো গত কয়েক দিন বাংলাদেশে আইএস তাদের আঞ্চলিক লোক পেয়েছে বলে জানান দিচ্ছে, এখন তারা হামলা করে খেলাফতি শাসন কায়েম করবে । এর আগেও আমরা শুনেছি আল কায়দা বাংলাদেশে কত কিছুই না করবে, অমুক মুফতির সঙ্গে বিন লাদেনের সাক্ষাত হয়েছে, তার নির্দেশে বাংলাদেশকে ইসলামী ভাবধারায় ভাসিয়ে দিবে । পরে দেখা গেল বাংলাদেশের জায়গায় বাংলাদেশ ঠিকই আছে কিন্তু ভেসে গেছে বিন লাদেন ও তার আল কায়দা ।
বাংলাদেশে আইএস এর ভয় দেখিয়ে কোন লাভ হবে বলে মনে হয় না । কারন আমাদের এখানে শিয়া সুন্নি ঝামেলা নাই । দেশের ৯০ ভাগ মুসলমান সুন্নি তরিকার । তা ছাড়া পীরতন্ত্র দাপটের সাথে বহমান রয়েছে ।আবার এই পীর বাবাদের একে অপরের সাথে সতীণের মত সর্ম্পক । তা ছাড়া ভিন্ন ভিন্ন তরিকায় মাদ্রাসা ব্যবসারও রমরমা অবস্থা ।এ অবস্থায় আইএস কোন তরিকা নিয়ে বাংলাদেশে খেলাফত প্রতিষ্ঠা করবে ? এক পীর বাবার সমর্থন দিলে অন্য বাবারা বিরোধীতা করবে ।তাই বাংলাদেশে কখনোই আল কায়দা, আইএস বা আমেরিকা, ইসরাইলের তৈরী কোন কথিত ইসলামী গ্রুপ দুই/চারটা পটকা ফাটানো ছাড়া আর কোন কিছুই করতে পারবে না অথবা করতে দিবে না ঐ ভিন্ন ভিন্ন তরিকার ধর্মীও লেবাসধারী ব্যবসায়ীরা ।
মধ্যপ্রচ্যের যে সব দেশে এক তরিকার মুসলমান বেশি রয়েছে সে সব দেশে দুই একটা ফটকা ফোটানোর আওয়াজ ছাড়া আর কোন ঝামেলাই নাই । আর যে সব দেশে শিয়া সুন্নি সমান সমান সেই সব দেশে ক্ষমতার লড়াই হচ্ছে ইসলাম ধর্মের নামে । যেমন সিরিয়ায় শিয়া সমথির্ত আসাদ সরকারকে হঠিয়ে সুন্নি সম্প্রদায়ের নেতারা ক্ষমতায় যেতে চাইছে আইএস নামে ।আর এই আইএসকে ফুলিয়ে ফাপিয়ে বড় করে প্রচার করচ্ছে ইহুদিদের পরিচালিত সিএনএন, বিবিসির মত সংবাদ মাধ্যম । আমারদেশ পত্রিকা যেভাবে প্রচার করে ছিল হেফাজতের জিহাদী লড়াইয়ের ক্ষমতার কথা, পরে দেখা গেল ঐ জিহাদী সৈনিকরা কান ধরে দলে দলে উঠবস করছে শাপলা চত্বরে ।
বর্তমান বিশ্বে আইএস বা তার অনুসারীরা কোন অবস্থাতেই ইসলামী শক্তি হতে পারে না । আমি এর আগেও অনেক বলেছি যে, দাড়ি আর টুপি পড়লেই মুসলিম হওয়া যায় না । দুই চার লাইন কোরআনের আয়াত বললাম আর খেলাফতের ডাক দিয়ে ক্ষমতায় চলে গিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করে ফেললাম, এমন নজির পৃথিবীর কোথাও নেই । নবী মোহাম্মদ (সাঃ) নিজেও প্রচার প্রচারনার মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছেন, পরে ইসলামী শাসন কায়েম করেছেন । মদিনায় প্রথম ইসলামী শাসন কায়েম হয়ে ছিল, নবী মোহাম্মদ (সাঃ)এর নেতৃত্বে । এখানে তিনি বোমা মেরে মেরে মক্কা থেকে এসে মদিনা দখল করে ইসলামী শাসন কায়েম করেননি ।মানুষকে বুঝিয়ে আল্লাহ পথে এনে, আল্লাহ আইন প্রতিষ্ঠা করেছেন ।
নবীজির ইন্তেকালের আড়াশ থেকে তিনশত বছরের মধ্যে ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা ব্যাক্তি ও গোত্র স্বার্থে এই পবিত্র ধর্মকে ভিন্ন ভিন্ন নামে ভাগ করতে থাকে ।মূলত মিশর থেকে আমদানি এই ধর্মীয় বিভাজন আমাদের এই উপমহাদেশ বিস্তার লাভ করে । শিয়া, সুন্নি ছাড়াও ওহাবী, তাবলীগি, কওমী, মওদুদী মতবাদ ভারতবর্ষে ধর্মীও ব্যধিতে রুপ নিয়েছে । এছাড়া পীরতন্ত্র তো রয়েছেই । এক আল্লাহ বিশ্বাসী আমরা মুসলমানেরা ভিন্ন ভিন্ন তরিকায় বিভক্ত হয়ে একে অন্যকে কাফের, মুততাদ, নাস্তিক বলতেও দ্বিধা করি না । ইসলাম ধর্মে নামে ক্ষমতা পাওয়ার লোভে মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের বোমা মেরে মারতে আমাদের বিবেকে এতটুকুও বাধে না ।
নবীজির জমানা থেকে যে ইহুদিরা মুসলমানদের প্রধান শত্রু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, আজ তারাই ক্ষমতার লোভে কিছু মুসলমানের বন্ধুতে পরিনত হয়েছে ।এর সর্বশেষ আপডেড আইএস । যত গর্জন তত বর্ষে না, এই প্রবাদের মতই আইএসও একদিন হারিয়ে যাবে আল কায়দার মত । অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে পবিত্র ইসলাম ধর্ম দুনিয়াতে আসেনি, আর এই ইসলাম ধর্মের অপব্যবহার করে কেউ টিকে থাকতে পারবেও না ।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৯