somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুলকের ডায়রী এবং .. "রিমিতা "---শেষ পর্ব

২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পুলকের রুমমেট একদিন পুলকের সর্বক্ষনের সাথী বলে পরিচিত ওর ডায়রীটা ফাজলামি করে চুরি করে এবং যতটা সম্ভব পড়ে ফেলে,ব্যস যা ঘটার তাই হলো-পরের দিন ক্যাম্পাসে এসে সে রিমিতা সহ আরো অনেককেই জানালো,কিন্তু রিমিতা ওর কথায় পুরোপুরি বিশ্বাস না করায় পুলকের রুমমেট ডায়রীটা রিমিতাকে দিলো-প্রমান হিসেবে।রিমিতা কাউকে কিছু না বলেই ডায়রী নিয়ে বাসায় চলা গেলো।

রিমিতা দুদিন ধরে ডায়রীটাই পড়ে যাচ্ছে,ক্লাসেও যায়নি আর,অবাক এবং মুগ্ধ হয়ে ও শুধু পুলকের ভালোবাসা প্রকাশের ভাষাগুলোই পড়ে যাচ্ছিলো আনমনে।
ডায়রীর সব লেখাগুলো প্রকাশ সম্ভবনা বলে আমি কিছু লাইন এখানে শেয়ার করছি-
" তোমাকে পাবার ইচ্ছে আমার অনেক বার হয়েছিলো,কিন্তু চাইবার দুঃসাহস করার মত সাধ্য আমার নেই,হয়ত কখনো হবেওনা,আসলে আমি তোমাকে পেতে চাইওনা,কারন তোমাকে হয়ত আমি তোমার মত করে রাখতে পারবোনা কখনোই।নিজেকে নিজের কাছেই খুব ছোট মনে হয় যখন ভাবি আমি কোন দুঃসাহসে তোমাকে ভালোবাসলাম"।
"আমি চাইনা কখনো কেউ জানুন আমি তোমাকে ভালোবাসি,হয়ত এটা জানলেও তোমার সম্মানে আঘাত লাগতে পারে,এটা ভেবে যে -এমন একটা অযোগ্য ছেলে তোমাকে ভালোবাসে!!"
"আমার মত এত কুৎসিত একটা ছেলের ভেতরে এমন একটা মেয়েকে ভালোবাসার মত একটা মন দিয়ে আমাকে সারাজীবনের জন্যে লজ্জিত করে দিয়েছেন বিধাতা"
রিমিতা ডায়রীটা পড়ে নিজের চোখের পানি সামলে রাখতে পারেনি সেদিন আর,এত ভালো কি কেউ কাউকে বাসতে পারে!! ডায়রী পড়ার পর ৬টা দিন ও আর ক্যাম্পাসে যায়নি,ওর বিয়ের তারিখও ঘনিয়ে আসছে।বাবা মা অনেক খুশি ওর বিয়ে নিয়ে,এখনতো কিছু নতুন করে ভাবার সময়ও নেই,কি করবে ও ঐছেলেটার জন্যে,একদিনের মধ্যে ছেলেটা পুরোপুরিই ওর চিন্তশক্তিকে আচ্ছন্ন করে রেখছে শুধুমাত্র ডায়রীতে কিছু কলমের ভাষা লিখে।
একসপ্তাহ পরে রিম ক্যাম্পাসে গেলো,গিয়েই পুলকের খোঁজ করছিলো,কিন্তু কোথাও নেই পুলক,কারন ডায়রীটা রিমিতার হাতে পৌছে গেছে সেটা ও জানতে পেরেছে,সেদিনের পর থেকে নাকি পুলকও আর আসেনি ক্যাম্পাসে।হলেই নাকি চুপচাপ বসে থাকে,কারন এইকয়দিনে বন্ধুদের কাছ থেকে অলরেডী অপরিমেয় লাঞ্চনা ওর কপালে জুটেগেছে।
পরদিন সকালে উঠে রিমিতা বন্ধুদের নিয়ে হাজির পুলকের হলে,ওকে নিচে ডেকে আনা হলো,ও ঠিক মাথাটা নিচে নামিয়ে রেখেছিলো এমনভাবে যেনো রিমের সাথে ওর চোখ না মেলাতে হয়।সাংঘাতিক রকমের অপমান এখন তাকে সহ্য করতে হবে জেনে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে পুলক,রিমিতা বলল চলো আমার সাথে কাজ আছে ,সাথের সবাই একটু ভাবনায় পরে গেলো,কেউ কিছুই ভাবতে পারছেনা ,কারন রাগের মাথায় রিম কিযে করবে সেটা সবার ধারনার বাইরে ছিলো।
সেদিন রিম পুলককে জোড় করে নিয়ে কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে করেছিলো,পুলক কিছুতেই রাজী হচ্ছিলোনা,শেষ পর্যন্ত বিয়েটা হলো।পুলকের সাথে অবশ্য আমরাও খুব অবাক হয়েছিলাম রিমের কান্ড দেখে।
আসলে ভালোবাসা হয়ত এমনই,কখন কিভাবে কার মনে কার জন্যে জায়গা তৈরী হয়ে যায় তা কেউ জানেনা।মুখে একটা কথা না বলেও পুলক শেষ পর্যন্ত রিমিতার ভালোবাসা পেয়েই গেলো।
বাবা মা যদিও এটা মেনে নিতে পারেনি এবং আজ পর্যন্ত মেনেও নেয়নি বিয়েটা,তবু ওরা খুব কষ্ট করে হলেও নিজেদের একটা ছোট সংসার বানাতে সক্ষম হয়েছে।


সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো ,বিয়ের ঠিক তিন বছর পর্যন্তও বেকুব ছেলেটা রিমকে জানায়নি যে কিডনীটা গোপনে সে নিজেই রিমিতাকে দিয়েছিলো।রিম এব্যাপারে কিছুই জানতোনা,কারন পুলক ডায়রীতে এটা নিয়ে কোনো কথাও লিখেনি কোনোদিন।ওদের প্রথম সন্তানের জন্মের সময় যখন রিমকে হাসপাতালে নেয়া হয় তখন ওদের ফ্যামিলি ডাক্তার রিজভীর কাছ থেকে ব্যাপারটা জানতে পারে রিমিতা।
ওদের হ্যাপী ফ্যামিলি এখন ওদের বন্ধু মহলের আদর্শ জুটি,খুব ভালো আছে ওরা ,এখনো
মনে হয় যেনো জাস্ট মেরীড কাপল।


"শুধুমাত্র ভালোবাসা দিয়েই হয়ত ভালোবাসা পাওয়া সম্ভব"


৪৯টি মন্তব্য ৪৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×