ঘৃণ্য রাজাকার ছারছীনা শরীফের পীর মাওলানা শাহ মুহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ আজ পটল মোবারক তুলেছে। ওর মুখে থু থু মোবারক। এই রাজাকারের বাচ্চা রাজাকারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন পিরোজপুর-১ আসনের বর্তমান আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. মহিউদ্দিন মহারাজ (স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত হলেও তিনি আওয়ামী লীগ নেতা), সাবেক সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএমএ আউয়াল, সাবেক সংসদ সদস্য ও আ্ওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ মো. শাহ আলম, নেছারবাদ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হক, পৌর মেয়র মো. গোলাম কবির।
আওয়ামী লীগ নেতারা গলার রগ ফুলিয়ে ভাষণ দেন যে বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি এই দেশে রাজাকারদের প্রতিষ্ঠা করেছে। রাজাকারদের প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগের অবদানও কি কম? রাজাকারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করলে সেই রাজাকারকে সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠা করা হয় না? সেই রাজাকারকে সম্মান জানানো হয় না? আ্ওয়ামী লীগে তো মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রাজনীতিক অনেক আছেন, তারা কি তাদের দলের নেতাদের এই কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাবেন?
মাওলানা শাহ মুহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ’র পিতা আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ একাত্তরের কুখ্যাত রাজাকার এবং শান্তি কমিটির প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন। এই ঘৃণ্য রাজাকারের সহযোগিতায় পাকিস্তানি বাহিনী পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিসহ আশপাশের গ্রামে হত্যাযজ্ঞ, নারী ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন চালায়। ১৯৮০ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সমাজসেবায় এবং ১৯৮৫ সালে রাষ্ট্রপতি এরশাদ শিক্ষায় এই রাজাকারকে স্বাধীনতা পদক দেন। একজন স্বাধীনতাবিরোধী-গণহত্যার দোসর দু-বার স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন, ভাবা যায়!
এককালের কুখ্যাত খুনি, লুণ্ঠনকারী ও গণহত্যাকারী সুলতান মাহমুদ, বখতিয়ার খিলজী, তিতুমীর, হযরত শাহজালালরা সমাজে প্রতিষ্ঠা পেয়ে গেছে। সম্মানের উচ্চ আসনে তারা অধিষ্ঠিত। এরা কেউ সম্মানজনকভাবে সাহিত্যে স্থান পেয়েছে, কারো নামে কলেজ, কারো নামে বিমানবন্দর ও বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। অথচ এরা ছিলেন আধুনিক শিক্ষার বিরোধী! পশ্চিমবঙ্গে তিতুমীরের নামে ভাতা দেওয়া হয়। না, সেখানকার কোনো ইতিহাস সচেতন বুদ্ধিজীবী এর প্রতিবাদ করেননি।
আমাদের অনেক রাজাকার এরই মধ্যে সমাজে প্রতিষ্ঠা পেয়ে গেছে, সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে, বাকি রাজাকাররাও প্রতিষ্ঠা পেয়ে যাবে। বখতিয়ার, তিতুমীর, শাহজালালদের মতোই একদিন হয়ত পাঠ্যবইয়ে মুসলিম বীর হিসেবে স্থান করে নেবে গোলাম আযম, দেলোয়ার হোসেন সাঈদী, নিযামী, মুজাহিদ, মীর কাশিমরা। আর মুক্তিযোদ্ধারা হয়ত চিহ্নিত হবেন ইসলামবিরোধী কাফের হিসেবে!
আবারও রাজাকার শাহ মুহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ’র প্রতি একরাশ ঘৃণা। থু……..
ঢাকা
১৭ জুলাই, ২০২৪
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:৩২