somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কল্প লোকের গল্প নয় - পাহাড়ের গল্প

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
শেষ কিস্তি:



গ্রাম জুড়ে সাজ সাজ রব। মেয়ে-ছেলে কি বুড়ি সকলেই নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত। গয়ালের মাংসে আজ হবে মহাভোজ। ততক্ষণে সাহেবের তাঁবু খাঁটানো হয়ে গেছে। তাঁবুর সামনেই গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠদের সাথে আড্ডায় ব্যস্ত সাহেব। কিছু তরুণ এসে একটি খেলা দেখার অনুরোধ করে। তিয়্যানওই সাহেবকে সেই খেলা দেখার কথা বলতেই সানন্দে রাজি হয়ে যান। গ্রামের মাঝখানটায় অনেকটা সমতল মাঠের মতো। চার কি পাঁচ ফুট লম্বা শক্ত একটি বাঁশের দুই প্রান্তে দুই যুবক দাঁড়িয়ে বাঁশের প্রান্তটি তাদের বাহুর নিচে শক্ত করে আটকিয়ে নেয়। তারপর কে কাকে ঠেলতে ঠেলতে মাটিতে ফেলতে পারে তার কসরত শুরু হয়। প্রথমে দ্বৈত লড়াই হলেও একটু পরেই বাঁশের একেক প্রান্তে আরও কয়েক জন জুটে যায়।  সে দেখবার মতো দৃশ্য, কেউ সহজে হার মানতে চায় না। একদল ঠেলে কিছুটা পিছনে নিয়ে যায় তো অপর দল শূন্যে তোলে মাটিতে ফেলতে চায়। কখনও কখনও লাফিয়ে লাফিয়ে নানা কায়দা করে মাটিতে ফেলার চেষ্টা চলে। সেই কসরত দেখে সাহেবসহ গ্রামের সকলেই হেঁসে গড়িয়ে পড়ে। এক সময় একটি দলের একজনের পা পিছলে যায় আর সুযোগ বুঝেই অপর দল তাদের সবাইকে মাটিতে ফেলে দেয়। সাহেব করতালি দিয়ে বিজয়ী দলকে অভিবাদন জানান এবং পরক্ষণেই নিজেই খেলায় অংশ নিবেন বলে মাঠে নেমে আসেন। একপাশে সাহেব ও সর্দারগণ অন্য পাশে বিজয়ী দল। সেকি লড়াই। সাহেব ততক্ষণে সে খেলায় কিছুটা ধাতস্ত হয়ে উঠেছেন। সব শেষে সাহেবদের হারিয়ে যুবকদের দলটি পুনরায় বিজয় ছিনিয়ে নেয়। সাহেব ধুলো ঝেড়ে ফেলে উঠে দাঁড়িয়ে জানতে চান এই খেলার নাম কি? এক সঙ্গে উত্তর আসে ‘আথো-আচকে’।

মধ্যাহ্ন শেষে বিকেল আসে। রান্নার আয়োজনও শেষের পথে। গ্রামের প্রান্তে বড় ঘরটাতে সাহেবসহ বয়োজ্যেষ্ঠরা কদুলি পত্রে আহারে বসেছেন। তরুণীরা একে একে পরিবেশন করছে নানা খাবার। ছেলে বুড়ো সকলের আহার শেষ হতে হতে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে। শুক্লা দশমির মৃদু জোছনার সাথে জ্বলে উঠে অনেকগুলো মশাল। হাড়ি ভরে চলে আসে ‘সিপাহ্’। নারী-পুরুষ সকলেই সেই পানীয়তে গলা ভেজায়। নানা অলঙ্কারে সেজে তরুণ-তরুণীরা শুরু করে নৃত্য-‘তাং-ন’। হাতে হাত ধরে সারিবদ্ধ হয়ে বাঁশি আর ঢোলের তালে নেচে চলে। চাঁদ ও মশালের সেই মায়াবী আলোতে তরুণ-তরুণীদের বাহু, কপোল ও ললাট সোনা রঙে চকচক করে।

এ গল্পের যেনো শেষ নেই। সাহেব গভীর রাতে তাঁবুতে ফিরে ডায়েরি খুলেন। না! এইসব দিনরাত্রিগুলো থেকে যাক অধরাই, কেবলি স্মৃতির পটেই থাকুক। কাগজে লিপিবদ্ধ হউক অন্য কিছু। তারপর পুরো গ্রাম ঢলে পড়ে ঘুমের দেশে কেবলি জেগে থাকে পাহাড়গুলো। তাদের বুঝি নিদ্রা নেই, দিবা কি রাত্রি  ভূমিপুত্রদের বুকে আগলে রাখে।গ্রাম জুড়ে সাজ সাজ রব। মেয়ে-ছেলে কি বুড়ি সকলেই নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত। গয়ালের মাংসে আজ হবে মহাভোজ। ততক্ষণে সাহেবের তাঁবু খাঁটানো হয়ে গেছে। তাঁবুর সামনেই গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠদের সাথে আড্ডায় ব্যস্ত সাহেব। কিছু তরুণ এসে একটি খেলা দেখার অনুরোধ করে। তিয়্যানওই সাহেবকে সেই খেলা দেখার কথা বলতেই সানন্দে রাজি হয়ে যান। গ্রামের মাঝখানটায় অনেকটা সমতল মাঠের মতো। চার কি পাঁচ ফুট লম্বা শক্ত একটি বাঁশের দুই প্রান্তে দুই যুবক দাঁড়িয়ে বাঁশের প্রান্তটি তাদের বাহুর নিচে শক্ত করে আটকিয়ে নেয়। তারপর কে কাকে ঠেলতে ঠেলতে মাটিতে ফেলতে পারে তার কসরত শুরু হয়। প্রথমে দ্বৈত লড়াই হলেও একটু পরেই বাঁশের একেক প্রান্তে আরও কয়েক জন জুটে যায়।  সে দেখবার মতো দৃশ্য, কেউ সহজে হার মানতে চায় না। একদল ঠেলে কিছুটা পিছনে নিয়ে যায় তো অপর দল শূন্যে তোলে মাটিতে ফেলতে চায়। কখনও কখনও লাফিয়ে লাফিয়ে নানা কায়দা করে মাটিতে ফেলার চেষ্টা চলে। সেই কসরত দেখে সাহেবসহ গ্রামের সকলেই হেঁসে গড়িয়ে পড়ে। এক সময় একটি দলের একজনের পা পিছলে যায় আর সুযোগ বুঝেই অপর দল তাদের সবাইকে মাটিতে ফেলে দেয়। সাহেব করতালি দিয়ে বিজয়ী দলকে অভিবাদন জানান এবং পরক্ষণেই নিজেই খেলায় অংশ নিবেন বলে মাঠে নেমে আসেন। একপাশে সাহেব ও সর্দারগণ অন্য পাশে বিজয়ী দল। সেকি লড়াই। সাহেব ততক্ষণে সে খেলায় কিছুটা ধাতস্ত হয়ে উঠেছেন। সব শেষে সাহেবদের হারিয়ে যুবকদের দলটি পুনরায় বিজয় ছিনিয়ে নেয়। সাহেব ধুলো ঝেড়ে ফেলে উঠে দাঁড়িয়ে জানতে চান এই খেলার নাম কি? এক সঙ্গে উত্তর আসে ‘আথো-আচকে’।

মধ্যাহ্ন শেষে বিকেল আসে। রান্নার আয়োজনও শেষের পথে। গ্রামের প্রান্তে বড় ঘরটাতে সাহেবসহ বয়োজ্যেষ্ঠরা কদুলি পত্রে আহারে বসেছেন। তরুণীরা একে একে পরিবেশন করছে নানা খাবার। ছেলে বুড়ো সকলের আহার শেষ হতে হতে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে। শুক্লা দশমির মৃদু জোছনার সাথে জ্বলে উঠে অনেকগুলো মশাল। হাড়ি ভরে চলে আসে ‘সিপাহ্’। নারী-পুরুষ সকলেই সেই পানীয়তে গলা ভেজায়। নানা অলঙ্কারে সেজে তরুণ-তরুণীরা শুরু করে নৃত্য-‘তাং-ন’। হাতে হাত ধরে সারিবদ্ধ হয়ে বাঁশি আর ঢোলের তালে নেচে চলে। চাঁদ ও মশালের সেই মায়াবী আলোতে তরুণ-তরুণীদের বাহু, কপোল ও ললাট সোনা রঙে চকচক করে।

এ গল্পের যেনো শেষ নেই। সাহেব গভীর রাতে তাঁবুতে ফিরে ডায়েরি খুলেন। না! এইসব দিনরাত্রিগুলো থেকে যাক অধরাই, কেবলি স্মৃতির পটেই থাকুক। কাগজে লিপিবদ্ধ হউক অন্য কিছু। তারপর পুরো গ্রাম ঢলে পড়ে ঘুমের দেশে কেবলি জেগে থাকে পাহাড়গুলো। তাদের বুঝি নিদ্রা নেই, দিবা কি রাত্রি  ভূমিপুত্রদের বুকে আগলে রাখে।

সমস্ত লেখাটি একসাথে পড়তে
কল্প লোকের গল্প নয়
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৩৮
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সত্যি বলছি, চাইবো না

লিখেছেন নওরিন হোসেন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:০৮



সত্যি বলছি, এভাবে আর চাইবো না।
ধূসর মরুর বুকের তপ্ত বালির শপথ ,
বালির গভীরে অবহেলায় লুকানো মৃত পথিকের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কি 'কিংস পার্টি' গঠনের চেষ্টা করছেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১০


শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামক সংগঠন টি রাজনৈতিক দল গঠন করবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছেই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্থান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্থান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×