রাসেলের বনর্নাতত্বঃ বনর্র্না বলতে কোন বিষয় বা কোন কিছু সর্ম্পকে আলোচনা বা বিবরন দেওয়াকে বুঝান। আর এ আলোচননা বা বিবরন বিষয়ক মতবাদকে বলা হয় বনর্নাতত্ব।আমরা যখন কোন একটি বিষয় সম্পর্কে সুনিদৃষ্ট ও সুনিয়ন্ত্রিতভাবে জানি এবং সে জানার সাথে আরও জানি যে বিষয়টির সাথে প্রত্যক্ষভাবে পরিচিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই তখন আমরা সে জ্ঞানকে বনর্নামূলক জ্ঞানের উপর ভিত্তি করেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রাসেলের বনর্নাতত্ব।
রাসেলের মতে, ভাষার প্রকাশিত কোন ধারনা বা প্রত্যয়কে বলা হয় বনর্না । বনর্না হচ্ছে বিবরনমূঔশ শব্দ। বিবরনমূলক শব্দ দ্বারা আমরা কোন বাস্তব জিনিসের এক বা এশাধিক গুনাবলী বা বৈশিষ্ট্যকে কোন বৈশিষ্ট নয় যা কোন ব্যক্তি বস্তুকে নির্দেশ করে।
বনর্নাতত্বের লক্ষ্য উদ্দেশ্যঃ রাসেলের বনর্নাতত্বের উদ্দেশ্যকে মূলত দুই ভাগে ভাগকরা যায়।
১। অমূর্ত সত্তাকে পরিহার করা
২। বনর্নায় যে চধৎধ দেখা দেয় তা পরিহার ।
বনর্নাতত্বের শ্রেনী বিভাগঃ রাসেল তার ” Introduction to Mathematical Philosophy" গ্রন্থে বনর্নাতত্বকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন যথাঃ
ক। নিদৃষ্ট বনর্না
খ। অনিদৃষ্ট বনর্না
ক। নিদৃষ্ট বনর্নাঃ কোন ব্যক্তি বস্তু বা অন্য কোন কিছু সম্পর্কে নিদৃষ্ট ভাবে বা সুনিয়ন্ত্রত ভাবে যখন কোন কিছু বলা হয় কথন তাকে নিদৃষ্ট বনর্না বলা হয় । নিদৃষ্ট বনর্নার ক্ষেত্রে জগতের যা কিছু আছে তা নিদৃষ্ট। সেটা যদি মানুষ হয় তাহলে নিদৃষ্ট মানুষ অন্য কেহ নয়।
রাসেল নিদৃষ্ট বনর্নাকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন যথাঃ
১। অস্তিত্ববাচক নিদৃষ্ট বনর্না
২। অস্তিত্বহীন নিদৃষ্ট বনর্না।
১। অস্তিত্ববাচক নিদৃষ্ট বনর্নাঃ যেসব বিষয়ের অস্তিত্ব আছে এবং যার সম্পর্কে নিদৃষ্ট করে কোন বনর্না দেওয়া হয় তাকে অস্তিত্ববাচক নিদৃষ্ট বনর্না বলা হয়।
২। অস্তিত্বহীন নিদৃষ্ট বনর্নাঃ যেসব বিষয়ের অস্তিত্ব ইেন এবং যার সম্পর্কে নিদৃষ্ট করে কোন বনর্না দেওয়া যায়না তাকে অস্তিত্বহীন নিদৃষ্ট বনর্না বলে। নিদৃষ্ট বনর্নাকে প্রয়োগের দিক থেকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় যথাঃ
১। মূখ্য প্রয়োগ
২। গৌন প্রয়োগ
১। মূখ্য প্রয়োগঃ যে সব নিদৃষ্ট বনর্নায় মূখ্য বিষয়কে অস্কিকার করা হয় না তাকে মূখ্য প্রয়োগ সম্বলিত নিদৃষ্ট বনর্না বলা হয়। যেমন ঃ শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রি হয় দয়ালু, আবার শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রি দয়ালু নয়। এটাও মূখ্য প্রয়োগ কেননা এখানে বনর্নার মূল বিষয় শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রিকে অস্বিকার করা হয় নি।
২। গৌন প্রয়োগঃ যে নিদৃষ্ট বনর্নায় আমরা যদি স¤পূর্ন বিষয়েকে অস্বিকার করি তাকে গৌন প্রয়োগ সম্বলিত নিদৃষ্ট বনর্না বলা হয়। যেমন একটা কোন ঘটনা নয় যে শ্রীলংকার প্রথানমন্ত্রি দয়ালু, এখানে ঘটনার মূল বিষয়কে অস্বীকার করা হয়েছে।
খ। অনিদৃষ্ট বনর্নাঃ রাসেলের মতে, অনিদৃষ্ট বনর্নায় আমরা অনিদৃষ্টভাবে কোন কিছুর বনর্না দিয়ে থাকি যেমনঃ একজন মানুষ, একটি গাছ ইত্যাদি। কিন্তু রাসেল এগুলোকে অর্থহীন বলেছেন । কেননা একজন মানুষ বলতে কোন নিদৃষ্ট মানুষ বুঝায় না । আমরা দেখি দুলাল, জালাল, নামের বিভিন্ন মানুুষকে।
রাসেলের মতে, ”অনিদৃষ্ট বাক্যগুলোকে ঠিকভাবে বিশ্লেষন করলে দেখা যায় যে, এগুলোর মধ্যে এমন কোন উপাদান নেই যা শব্দগুচ্ছ দ্বারা নির্দেশিত। আর এজন্য ” A so and so ” জাতীয় কোন সত্তা না থাকা সত্তেও এ শ্রেনীর বচন গুলো তাৎপর্যপূর্ন হতে পারে।”
অনিদৃষ্ট বনর্না দুুপ্রকার যথাঃ
১। অস্তিত্ববাচক অনিদৃষ্ট বনর্নাও
২। অস্তিত্বহীন অনিদৃষ্ট বনর্না।
১। অস্তিত্ববাচক অনিদৃষ্ট বনর্নাঃ যার অস্তিত্বর বনর্না এ পৃথিবীতে বা জগতে রয়েছে তাকে অস্তিত্ববাচক অনিদৃষ্ট বনর্না বলে। যেমনঃ আমি একজন ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎত করেছি।
২। অস্তিত্বহীন অনিদৃষ্ট বনর্নাঃ যার অস্তিত্বের বনর্না এ জগতে নেই তাকে অস্তিত্বহীন অনিদৃষ্ট বনর্না বলে। যেমনঃ গোলাকার বর্গক্ষেত্র হয় সুন্দর।