সময় বিকাল ৪টা
নেই কাজ তো ভেরেন্ডা ভাজ। আমার এখনকার কাজ হচ্ছে ভেরেন্ডা ভাজা। একটা রিকশা নিলাম। ধানমন্ডি লেকে যাব। ওখানে দেখার মত অনেক অপ্রাসঙ্গিক দৃশ্য পাওয়া যাবে।
রিকশা চালক মামা এক হাতে বিড়ি খাচ্ছেন আর একহাতে রিকশা চালাচ্ছে্ন।চরম স্টাইল। মামার বিড়ির গন্ধে আমার দুনিয়া অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। মামারে বললাম মামা, হাতের বিড়িটা দাও দুটান মেরে দেখি কেমন লাগে। মামা কিছুক্ষন ভ্যবাচেকা খেলেন মনে হয়।পরক্ষনেই মামা মাথা ঘুরিয়ে দাত খিচিয়ে একটা হাসি দিলেন।
মামার বিড়ি এখন আমার হাতে। আকিজ বিড়ি। অর্ধেকটা তিনি খেয়েছেন। বাকি অর্ধেকটা একান্তই আমার। বিড়ির উপর লেখা আছে, আকিজের এক নম্বর বিড়ি। চোখ বুজে দিলাম টান, আকিজের একনম্বর বিড়ির ফিলিংস বোঝা দরকার।
আমার মাথার ইন্টারাপ্ট হ্যান্ডালার গুলো এলোমেলো হয়ে গেল। ক্লক সাইকেল র্যনডম ভারিয়াবল এর মত মনে হচ্ছে। চোখের সামনে দেখি লাল-সবুজ LED বাতি গুলা জলে আর নেভে। এর পরের টান দেয়ার সাহস হল না।
মামারে বললাম, মামা চরম জিনিস তো। মামার কাছ থেকে আরও ২টা আকিজ বিড়ি নিয়ে রাখলাম। রুমে বসে এই জিনিস টেস্ট করা দরকার।
নিউমার্কেটে এসে চরম জ্যামে পড়লাম। খারাপ লাগছে না ।আজকে জ্যাম ভালোই লাগছে। কিন্তু মাথা কিঞ্ছিত গোলমাল মনে হচ্ছে। গতরাত্রে আবজাব সব স্বপ্ন দেখেছি।
স্বপ্নে দেখলাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে। স্বপ্নে তার দেখা পেয়ে বড়ই পুলক অনুভব করলাম। দেখি রবি ঠাকুর আমার কম্বল গায়ে জড়িয়ে বিছানায় শুয়ে আছেন। স্বপ্নের মধ্যেই ধাধায় পরে গেলাম। মনে মনে ভাবলাম শালা আমার দুই হাজার টাকা দামের কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে আছে। কিন্তু উঁনাকে তো আর বেশী কিছু বলাও যাচ্ছে না।
যা দেখছি তা সত্যি কিনা পরীক্ষা করার জন্য স্বপ্নের মধ্যেই গায়ে চিমটি কাটলাম। সমস্যা হল, আমি স্বপ্নের মধ্যে ব্যথাও পেলাম। সত্যি হোক আর মিথ্যা হোক, ওঁনার সাথে মোলাকাতের সুযোগ আর পাব না।
ভাবলাম, এই সুযোগে ওঁনার একটা ইন্টারভিউ নেয়া যাক।
আমি লম্বা একটা সালাম দিলাম ওঁনাকে।
সালামের জবাবে উঁনি বললেন, মরণ রে, তুহু মম শ্যাম সম! হতাশ হলাম, রবি বাবু কি গঞ্জিকা সেবন করেছেন নাকি।
তারপর উনি চোখ বন্ধ করে কিযেন ধ্যানে মগ্ন হলেন।
কিছুক্ষন পর রবিবাবু ধ্যান ভংগ করে উঠে বসলেন। খুব শান্ত ভঙ্গিতে তিনি বলতে লাগলেন,
তোমাদের পানে চাহিয়া বন্ধু,
আর আমি জাগিব না।
কোলাহল করি সারা দিনমান,
কারো ধ্যান আমি ভাঙ্গিব না।
মাথা মুন্ডু কিছুই বুঝলাম। আমার আবারও মনে হল, রবি বাবু কি গঞ্জিকা সেবন করেছেন নাকি?
আমার মনের কথা রবিবাবু মনে হয় বুঝতে পারলেন। তিনি হঠাৎ খেপে গেলেন। একটা ধারাল এন্টিকাটার নিয়ে তেড়ে আসলেন আমার দিকে।
ঠিক এইসময় স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল। কি ভয়ানোক ব্যাপার।
তারপর থেকেই মাথা গোলমাল। চোখের সামনে খালি মাগুর মাছ দেখতেছি। বড় বড় মাগুর মাছ।