somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রসংগ যুদ্ধাপরাধঃ এক অপরাধের বিচার দুইবার করা যায় না

১৫ ই জুলাই, ২০১০ রাত ৯:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকে যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবী করছেন তারা আইন সম্পর্কে কতটুকু ধারনা রাখেন আমি সন্দিহান। এই বিষয় টি তো অনেক আগেই মীমাংসিত এবং এর বিচার ও শেষ হয়ে গেছে। অনেকে শাস্তি ও পেয়েছে । এখন আবার এই বিচার চাওয়া কেন ? এক অপরাধের কি দুইবার বিচার করা যায় ? এইটাকি কোন সভ্য সমাজে শুনেছেন ? নাকি এইখানে বাংগালকে হাইকোর্ট দেখানো হচ্ছে এবং দেশে একটি গন্ডগোল লাগিয়ে দিয়ে অকার্যকর রাস্ট্রে পরিনর করার ষড়যন্ত্র চলছে এইটা ভেবে দেখার সময় এসেছে।

প্রথমত, আমাদের বুঝতে হবে যুদ্ধাপরাধী ও এর সহযোগী দুইটি ভিন্ন জিনিস এবং ৭১ এর পরের সরকার এই দুই বিষয়ের ই মীমাংসা করে গেছেন।

প্রথমে দেখি যুদ্ধাপরাধী কারা, ৭১ এর পরে মুজিব সরকার ১৯৫ জন পাকিস্থানি সেনা কে যুদ্ধাপরাধী হিসাবে চিহ্নিত করেন এবং বিচার করার সর্বত চেষ্টা করেন। কিন্তু নানান কারনে মুজিব সরকার এই বিচার করতে সক্ষম হন নি। বরং সিমলা চুক্তি ও ত্রিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে এই ১৯৫ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়। তখনি যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি মীমাংসিত হয়ে গেছে। এখন যদি আপনি আবার বলেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করব, তাহলে ভারত আর পাকিস্থানকে রাজি করতে হবে সিমলা চুক্তি বাতিল করতে। এইটা কখনো সম্ভব নয় কেননা এই চুক্তির অনেক বিষয় অলরেডি ইমপ্লিমেন্ট হয়ে গেছে। এই জন্য দরকার একটা টাইম মেশিন যারা যুদ্ধাপরাধীর বিচার চান , তাদের গবেষনা করা উচিত একটা টাইম মেশিন আবিস্কারের জন্য। আরো সমস্যা আছে, ইন্টারন্যাশনাল ল অনুযায়ি বাংলাদেশ ৭১ এর যুদ্ধে কোন পক্ষই নয় তাই বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল কোন আইনেই যুদ্ধাপরাধির বিচার করতে পারেনা। কেননা ইন্টারন্যাশনাল ল অনুযায়ী ৭১ এ যুদ্ধ হয়েছিল ভারত ও পাকিস্থানের মধ্যে এবং সেজন্যই পাকিস্থান ভারতের কাছে সারেন্ডার করে। বাংলাদেশের ওয়ারক্রাইম ট্রাইবুনাল গঠনের কোন লিগালিটি নেই।

সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে যারা অর্থাত আওয়ামীলীগ সরকার এই যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দিয়েছে , তারাই আজ আবার যুদ্ধাপরাধের বিচার চেয়ে দেশ অশান্ত করে তুলছে। এর চেয়ে বড় ভন্ডামি আর কি আছে? সুতরাং যুদ্ধাপরাধির বিষয়টি নিয়ে আর কথা বলে লাভ নেই।

এইবার আসুন দেখি যুদ্ধাপরাধের সহযোগী অর্থাত ৭১ এ রাজাকারদের কোন বিচার হয়েছে কিনা ? হ্যা এই বিচারটি ও করেছেন মুজিব সরকার। তারা দালাল আইন নামে একটি আইন করেন এবং এই আইনের অধীনে রাজাকারদের বিচার সম্পন্ন করেন। এই বিচারে অনেকের বিভিন্ন রকম শাস্তি হয়। পরবর্তিতে শেখ মুজিব সাধারন ক্ষমা ঘোষনা করেন এবং ৪ টি অপরাধ বাদে অন্যদের মুক্ত করেদেন। আরো পরে জিয়া দালাল আইন বাতিল করেন এবং সবাইকে মুক্ত করে দেন। এখন আপনি একজন কে বিচার করবেন, শাস্তি দিবেন তারপর ক্ষমা করে দিবেন, তারপর আবার বলবেন যে আমি তোমার আবার বিচার করবো, এইটা কি কোন মানসিক ভাবে সুস্থ মানুষ বলতে পারে ?

এখন আবার এই মিমাংসিত ইস্যুগুলি নিয়ে হই চই করা কেন ? এই ব্যাপার গুলি আমাদের চিন্তা করতে হবে। দেশের বিরুদ্ধে একটা গভীর ষড়যন্ত্র চলছে এইটা আমাদের বুঝতে হবে। আজকে সাধীনতার ৪০ বছর পরেও কেন নতুন প্রজম্মের মাঝে ঘৃনা ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে ? দুনিয়ার কোন দেশে কি এইটা হয় ? ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট সারকোজি নির্বাচিত হয়ে সবার আগে গেছেন জার্মানি। আজকে ইংল্যান্ডের শিশু বা নুতন প্রজম্মকে কি জার্মানকে ঘৃ্না করার ইতিহাস শিখানো হয়? আজকে আমরা এই ঘৃ্না ছড়াচ্ছি বলেই ২৮ এ অক্টোবরের মত ঘটনা ঘটছে যেখানে নতুন প্রজম্মেরি একজন আরেকজনকে পিটিয়ে হত্যা করে লাশের উপর নৃ্ত্য করছে ? আর এই দৃশ্য যখন সারা দুনিয়ার মানুষ দেখছে তখন বাংলাদেশকে তারা অসভ্য ও বর্বর দেশ হিসাবেই চিনছে।

সাধীনতাকে পজীটভ চোখে দেখতে হবে , মনে রাখতে হবে, এইটা ছিল মুক্তির জন্য যুদ্ধ। আর বাংলাদেশ কি মুক্তিপেয়েছে ? বাংলাদেশ তো দুনিয়ার সবচেয়ে গরীব দেশ। যেশিশুটি ডাস্টবিন থেকে খাবার কুড়িয়ে খাচ্ছে তার কাছে এই সাধীনতার কোন মুল্য নেই। তাই আগে আমাদের ইকোনোমিকালি ডেভেলাপ করতে হবে। তবেই রিয়েল সাধীনতা পাব।

৭১ এর অপরাধগুলোর বিচার তো অলরেডি হয়ে গেছে, এখন আর অইগুলি নিয়ে হা পিত্তেশ না করে আসুন দেশ গড়ার কথা বলি, আসুন দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করি।
২৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সত্যি বলছি, চাইবো না

লিখেছেন নওরিন হোসেন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:০৮



সত্যি বলছি, এভাবে আর চাইবো না।
ধূসর মরুর বুকের তপ্ত বালির শপথ ,
বালির গভীরে অবহেলায় লুকানো মৃত পথিকের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কি 'কিংস পার্টি' গঠনের চেষ্টা করছেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১০


শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামক সংগঠন টি রাজনৈতিক দল গঠন করবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছেই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্থান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্থান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×