ইদানীং আমি অদ্ভুত সব স্বপ্ন দেখতে পাই।
স্বনগুলো কেমন যেন ছাড়া ছাড়া।
একটার সাথে অন্যটার কোন মিল নেই।
হঠাত দেখি আকাশে উড়ে যাচ্ছে একটা সাদা ঈগল যার ডানার পালকগুলো ধুসর নীল।
আবারো দেখি গভীর সমুদ্রের বুকে পালতোলা নৌকা যাতে বোঝাই খাদ্যশস্য আর বেশ কিছুদিন চলার মত রসদ।
আমি স্বপ্নে দেখি জনশুন্য রাস্তা।
নির্জন বাজার।
শহরের পার্কের ফাঁকা বেঞ্চ।
রাস্তার পাশে পড়ে থাকা ফাউন্টেন পেন।
দড়িতে শুকাতে দেওয়া কিশোরীর জামা।
শার্টের গোটানো আস্তিন।
ভিখারীর ভিক্ষের থালা।
চায়ের দোকানে খালি পড়ে থাকা চায়ের কাপ।
গ্লাস বেয়ে উঠে আসা পিঁপড়ের সারি।
রাস্তার মোড়ে ট্রাফিকের খুঁটি।
ছিড়ে যাওয়া গিটারের তার।
দেয়ালে ফেলা পানের পিক।
রাস্তায় টানানো ওরসের ব্যানার।
খবরের কাগজে চাকরির বিজ্ঞাপন।
আকাশের বুকে জমে ওঠা কাল মেঘ।
ধোয়া ওঠা গরম ভাত।
বিছানার ময়লা চাদর।
কোন কৌতুহলী পাঠকের টেবিলে জমানো একরাশ নতুন বইয়ের সারি।
একটা শহরে জ়ীবন যাপনের জন্য যা যা দরকার তার সবই আমার চোখের সামনে ভাসে।
কিন্তু আমি কোন মানুষ দেখি না।
কেন দেখি না কে জানে?
আমার কেন যেন মনে হয় আমার এই স্বপ্নের শহরে কোন মানুষ থাকে না।
কিংবা কে জানে হয়তো থাকে, কিন্তু আমি দেখি না।
আবার এও হতে পারে যে এ শহরে যারা থাকে তারা হয়তো মানুষ নয়।
মানুষের বেশে ঘুরতে থাকা অশরীরী প্রেতাত্মা।
আসলে সত্যি কথা বলতে কি আমি আমার স্বপ্ন আর বাস্তবের মধ্যে ইদানীং খুব একটা পার্থক্য খুঁজে পাই না।
আমাদের আশে পাশে যারা ঘুরে বেড়ায় তারা কি আসলেই মানুষ?