পাঠক নিশ্চয়ই শিরোনাম দেখে হতচকিত হবেন; বিজ্ঞ পাঠকদের তাই হওয়ার কথা। কেননা এমন শিরোনামের ঘটনা পরিপূর্ণ সত্য হলেও, কোন বিশ্বাসী ব্যক্তি শতবার কছম করলেও, অনেকে যুক্তির খাতিরে বিশ্বাস করতে চাইবেনা। তার পরও আল্লাহ এমন কিছু উপমা দুনিয়াবাসীর জন্য প্রত্যক্ষ করান, যাতে সম্ভ্রমশীল মানুষ অধিকতর সচেতন হতে পারেন। আল্লাহর বলে দেওয়া কথা এবং বেঁধে দেওয়া গণ্ডি থেকে কেউ বাহিরে গেলে, কোন না কোন পর্যায়ে তাকে চরম হোঁচট খেতে হয়। সেই হোঁচট যেমনি হয় বিব্রতকর, তেমনি হয় বিপর্যয়কর ও অসম্মানজনক। তাই মূল বিষয় উপস্থাপনা করার আগে বিজ্ঞ পাঠকদেরকে সর্বপ্রথমে এই তথ্যগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তে আহবান করছি।
১৩ই এপ্রিল ২০০৫ সাল; চিলির ‘আন্তোফাগাস্তা হাসপাতালে’ এক বলিভিয়ান বালিকা সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। এই বালিকা তার পিতা-মাতার সাথে বলিভিয়া থেকে চিলিতে গমন করে। সেখানেই তার জন্মদাতা পিতার হাতে এই বালিকা ধর্ষিত হয়, ফলে বালিকা ৯ম বছরে গর্ভধারণ করে এবং ১০ম বছরে সেই শিশুর জন্ম দেয়; বিচারে পিতা-মাতার জেল দণ্ড হয়। আমেরিকার ইন্ডিয়ানা পোলিশে মাত্র ১০ বছর বয়সে এক বালিকা একজোড়া যমজ সন্তানের জন্ম দেয়। এতে সে পৃথিবীতে সর্বকনিষ্ঠ যমজ সন্তানের মা হিসেবে রেকর্ডভূক্ত হয়। বালিকার নাম গোপন রাখা হয় ও কার মাধ্যমে গর্ভধারণ করা হয়েছে সেটিও উদ্ধার করা যায়নি। ১৩ই জুলাই ১৯৮২ সালে আমেরিকার টেক্সাস রাজ্যের ‘হিরামান হাসলাপাতালে’, আরেক বালিকা মাত্র ১০ বছর বয়সে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। এর নামও গোপন থাকে, বালিকা কার দ্বারা গর্ভধারণ করে, তা অপ্রকাশিত থাকে।
মা মনে করেছিলেন মেয়ের মূত্রাশয়ের জটিল কোন সমস্যা হয়েছে। সিঙ্গাপুরের এই মহিলা মেয়েকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান, ডাক্তার যাবতীয় পরীক্ষা শেষে রিপোর্ট দেন, তার মেয়ে ইতিমধ্যে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা! মাত্র ৯ বছর বয়সে ২০০৪ সালে এই বালিকা একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়, এই অবুঝ বালিকা তার স্কুলেরই পরিচিত, স্কুলের গণ্ডিতে একজনের সংস্পর্শে এই বিপদে পড়ে।
ডিসেম্বর ২০০৫ সালে রুয়ান্ডার ‘বুটারে হাসপাতালে’, মাত্র ৯ বছর বয়সে এই বালিকাটি এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। এই বালিকা তাদের এক গৃহ ভৃত্যের প্ররোচনায় গর্ভধারণ করে। উল্লেখ্য এই বালিকার ৬ বছর বয়সে বুকের অংশে পরিবর্তন আসে এবং আট বছর বয়সে ঋতুবর্তী হয়। ডাক্তারেরা তার আগে রক্ষিত রিপোর্ট দেখে এই ঘোষণা দেন।
ডিসেম্বর ২০০৬ সালে দক্ষিণ আমেরিকার পেরু’র; লিমা হাসপাতালে, মাত্র সাড়ে আট বছর বয়সে এই বালিকাটি একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। বালিকার প্রতিবেশী দুই চাচাত ভাইয়ের মাধ্যমে এভাবে বিপদগ্রস্ত হয়।
১৯৩৪ সালে তদানীন্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের ইউক্রেনে মাত্র ৬ বছর বয়সে ‘লিজা’ নামের এই বালিকার পেটে সন্তান ধরা পড়ে। সোভিয়েত ডাক্তার সিজারিয়ান অপারেশনের ঝুঁকি নিতে রাজি ছিলেন না, কেননা রোগিনীর অবস্থা ঠিক সে সময় ভাল ছিলনা। ফলে তার পিতা-মাতা মেয়েকে ইউক্রেনের ‘ভ্লাডিভোস্টোক’ এলাকায়ে নিয়ে যান; সেখানেই তাকে প্রসব করানো হয়। এই কেসটি ডাক্তার যথাযথ নথিভুক্ত ও ভিডিওর মাধ্যমে ধারণ করেন। উল্লেখ্য লিজা নামের বালিকাটি তারই আপন দাদার হাতে মর্মান্তিক ভাবে যৌন নিপীড়নের মর্মান্তিক শিকার হয়ে গর্ভবতী হয়।
লিনা মেডিনা নামের এই বালিকাটি মাত্র ৫ বছর ৭ মাস বয়সে ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ মা হবার বিশ্ব রেকর্ড অর্জন করেন। পেরুর লিমা শহরের অধিবাসী পিতা-মাতা ভেবেছিলেন মেয়ের পেটে বৃহদাকারের টিউমার হয়েছে। টিউমার চিকিৎসার জন্য বাবা-মা যখন মেয়েকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান, ডাক্তার ঘোষণা দেন মেয়ে গর্ভবতী। ১৪ই মে ১৯৩৯ সালে লিনা মেডিনা সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। সিজারিয়ান ডাক্তার জিরাডোর নামে লিনার পুত্র সন্তানেরও নাম রাখা হয় ‘জিরাডো’। এই ঘটনায় লিনার পিতাকে সন্দেহ করা হয় এবং গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমাণের অভাবে সে জেল থেকে মুক্ত হয়ে যায়। উল্লেখ্য ৩ বছর বয়সে লিনার ঋতুস্রাব শুরু হয় এবং সাত মাস পরে আবার বন্ধ হয়ে যায়। ৫ বছর বয়সের পর পরই কোন এক সময় সে গর্ভধারণ করে। তখন অন্যান্য গর্ভবতী মায়েদের মত তার শরীরেও পরিবর্তন দেখা দেয়। সন্তান প্রসবের পরও তার চরিত্র থেকে শিশু সুলভ খাসিয়ত যায়নি। সেই বয়সী শিশুরা যা নিয়ে খেলতে চায়, সে তার থেকে ব্যতিক্রম ছিলনা। এমনকি সে তার সন্তান শিশু জিরাডোকে নিয়ে, শিশু সুলভ খেলায় মেতে উঠত। তাকে ‘বেবি ব্রাদার’ বলে আদর করত, তার সাথে শিশু খেলায় নিত্যদিন মেতে থাকত।
সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ! অনেক তথ্য থেকে মাত্র গুটিকয়েক তথ্য বেছে নিয়ে এখানে উদ্ধৃত করলাম। এখানে মাত্র ৫ বছর থেকে ১০ বছর পর্যন্ত হিসেবে গুলোর কয়েকটির উল্লেখ করেছি; আরো বহু উল্লেখ করা যেত। ১০ বছরের বাহিরের রেকর্ড প্রচুর রয়েছে, তাতেও কোন সন্দেহ নেই। রেকর্ডগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এসব বালিকারা খুবই আপনজন দ্বারা উৎপীড়িত হয়েছে, যাদেরকে কোন অবস্থাতেই কেউ সন্দেহ করবেনা। সেখানে যেমন জন্মদাতা পিতা রয়েছে, তেমনি নির্ভরযোগ্য দাদাও রয়েছে। বহু ঘটনায় মায়ের বন্ধু রয়েছে, সেভাবে পিতার বন্ধুও রয়েছে। বহু ঘটনায় চাচা কিংবা মামারা পর্যন্ত এসব ঘটনায় যুক্ত থেকেছেন। সাধারণত যেহেতু ১২ বছরের নীচের বালিকাদের মা হবার রেকর্ড খুবই কম, সে কারণে এসব অনেক ঘটনা লোক চক্ষুর অন্তরালে থেকে যায়। ছোট বাচ্চাদের মা হবার দুশ্চিন্তা থাকেনা বলেই, কখনও মতলবি মানুষেরা এই অপকর্ম করে পার পেয়ে যায়। সাধারণত এই বয়সী বাচ্চাদের একটু খাদ্য কিংবা খেলা সামগ্রীর লোভ দেখিয়ে সহজে ভুলিয়ে ফেলা যায় এবং তাদের মনের উপর প্রভাব বিস্তার করা যায়।
ইসলাম ছোট বাচ্চাদের জন্য একটি বয়সের সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছে। সাত বছর পর্যন্ত তাদের জন্য কোন পাপ লিখা হবেনা। কেননা মানব সন্তান সাত বছর পর্যন্ত কোন অপকর্ম সম্পর্কে জ্ঞান রাখেনা। সত্য এবং মিথ্যাকে পৃথক করতে পারেনা। কোন পাপ-পূণ্য বোধ তার হৃদয়ে থাকেনা। সেজন্য আল্লাহ তাদেরকে সাত বছর পর্যন্ত ফ্রি জীবনের সুযোগ দিয়েছেন। এই সাত বছরের মধ্যে কোন মানব শিশু মারা গেলে, সে হিন্দু কিংবা মুসলিম হোক; তার পরিপূর্ণ দায়দায়িত্ব আল্লাহর। অর্থাৎ তারা জান্নাতে থাবার সুযোগ লাভ করবে। এই সুযোগ পাপ পূর্ণের মর্যাদার ভিত্তিতে হবেনা, তার জন্য দেয়া জীবনের একটি ফ্রি অংশ ভোগ করার বয়সে মৃত্যুর কারণেই এটা প্রাপ্ত হবে। উপরে পরিসংখ্যানে সাত বছরের নীচের কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে; কিছু ৭ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত উল্লেখ করা হয়েছে। কথা হল ১০ বছর বয়সে শিশুরা পাপ করলেও, মহাপাপ করার মত বয়স তখনও তাদের হয়না। ইসলামে মহাপাপ করার বয়সও উল্লেখ করা আছে। তাই, এই শিশুরা দুনিয়ার মানুষের কদাকার দিকগুলো জানা, মানুষের ভাল-মন্দ পর্যালোচনা করার জ্ঞান তখনও তারা অর্জন করতে পারেনা। ফলে বড়দের প্রতিটি কথাকে তারা বিনা যুক্তিতে বিশ্বাস করে এবং তাদের কথামত চলতে পারাকে সঠিক ভাবে। বাচ্চাদের এই কোমলমতি স্বভাবকে কাজে লাগিয়েছে উপরের সকল ঘটনার হোতারা। অথচ বিপদগ্রস্থদের একটি বড় অংশের খবর কেউ কোনদিন প্রকাশিত হয়না।
বর্তমানে আমাদের দেশ এত কম বয়সে গর্ভধারণের রেকর্ড না থাকলেও, সেই অপকর্ম থেমে নেই। বিভিন্ন তথ্যে দেখা যাচ্ছে; কখনও আক্রমণকারী নিজের পরিচয় লুকিয়ে রাখার নিমিত্তে ভিকটিমকে হত্যা করে ফেলছে। এসব কন্যারা জানেনা কোন অপরাধে, কোন সম্পদ কেড়ে নিতে তাদের গলায় পাষণ্ড ব্যক্তিদের মজবুত আঙ্গুলগুলো কষে ধরে। একটু অনুনয় বিনয় করার সুযোগ টুকুও তারা পায়না, মাফ চেয়েও প্রাণ ভিক্ষার সুযোগ তৈরি হয়না। নিশ্চিত মৃত্যুই তাদের জন্য অবধারিত থাকে। দিনে দিনে এই সমাজ পঙ্কিলতার দিকে ডুবে যাচ্ছে এবং দিন দিন সেটার প্রকৃতি কদাকার থেকে ভয়াবহ হচ্ছে। যৌন নিপীড়নের আক্রমণে, বাংলাদেশে প্রতিবছর এভাবে বহু বালিকা মারা যায়। অনেকে ভয়ে কিংবা সামাজিক অবস্থা আরো খারাপ হবার ভয়ে, ভুলেও সেকথা মুখ থেকে বের করেনা। এই সমস্যাটি একটি সামাজিক ও নৈতিক সমস্যা। এটা কোনভাবেই রাজনৈতিক এবং আর্থিক সমস্যা নয়। আমাদের পচনশীল সমাজের এটি একটি কদাকার দিক; এর জন্য আমরা পরিপূর্ণ দায়ী। নৈতিকতায় চরম পচন ধরা; রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে আধুনিক বিশ্ব সভ্যতার দাবীদার আমেরিকায়, শুধু মাত্র রুচিবোধ পরিবর্তনের জন্য নিজের কন্যাকে ধর্ষণ করার যে রেকর্ড আছে, তা এখানে উল্লেখ করলে লেখার কলরব বহুগুণে বেড়ে যাবে। যেহেতু সেসব লিখা আমার উদ্দেশ্য নয়, তাই সেদিকে গেলাম না।
এগুলোর জন্য প্রথমে দায়ী বেলেল্লাপনা ও বেহায়াপনা। বর্তমানে নারীদেরকে বাণিজ্যিক পণ্য বানানো হয়েছে। তাদের শরীরের বাহারি ঢঙ, নানাবিধ পোজকে ব্যবসায়ের উপাদান বানানো হয়েছে। কিছু মানুষ নিজেদেরকে ডোন্ট মাইন্ড সম্প্রদায়ের বুদ্ধিজীবী বানিয়ে, নারীদেরকে চটকদার উপাদানে পরিবেশিত করছে। মনের অভ্যন্তরে নারীদের নিয়ে কিছু একটা মাইন্ড করে বলেই, জোর গলায় ডোন্ট মাইন্ড বুলি আওড়ায়। মুখে ডোন্ট মাইন্ড আর চোখে প্রবৃত্তির ক্ষুধা ধার করেই তারা নারীদের দলে দলে রাস্তায় নামিয়েছেন। বাণিজ্যিক লাভের আশায় ষ্টেজে নারীকে বিভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপনা করেছেন। আকর্ষণীয়, মোহনীয়, কমনীয় ভঙ্গিতে আঁটসাঁট পোশাকে নারীকে বিজ্ঞাপনের বিল বোর্ডে টাঙ্গিয়েছেন। এসব দেখে উঠতি বয়সী তরুণদের মনে আগুনের তীব্রতা উতরে পরে। পথে চলতে ফিরতে, কাজের ফাঁকে তারা ভাবার জন্য কিছু না পেলেও; নারী বাণিজ্যের এসব উপাদান চোখের সামনে দেখলে, তারা সারাক্ষণ এসব নিয়ে ভাবতে বাধ্য হয়! ফলে তাদের চিত্ত অশান্ত হয়ে উঠে। অশান্ত চিত্ত শান্ত করার একটাই উপায়, সেটা হল বিয়ে করা; যা চাওয়া মাত্র অর্জন করা সম্ভবপর নয়। তাই চিত্ত বাস্তবায়নে তাদের সামনের সমুদয় পথ যখন কঠিন ও দুর্গম হয় তখনই তারা আগ্রাসী হয়ে উঠে। এই আগ্রামী মনোবৃত্তি আইন-শৃঙ্খলার ডাণ্ডায় কোনদিন নিয়ন্ত্রিত হয়নি।
বর্তমান সমাজে রাস্তা-ঘাটে, হাটে-বাজারে, গ্রামে-শহরে, অফিস-আদালতে, স্কুল-কলেজে, রেডিও-টিভিতে, নাচে-গানে, অবসর-বিশ্রামে এমন একটি মুহূর্ত থাকেনা যেখানে যৌনতার আবেদন অনুপস্থিত থাকে। যে পেটের দায়ে মানুষ অমানুষে পরিণত হয়, সেই পেটের জন্য প্রতি ২৪ ঘণ্টায় মানুষ যতক্ষণ ধান্ধায় থাকে। বর্তমান সমাজে তার চেয়েও বেশী পরিমাণ সময়, মানুষকে প্রবৃত্তি ও চিত্ত নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। নতুন সংসারে একটি খাট জোগাড় করতে পারল তো তাদের দ্বিতীয় চাহিদা টিভির প্রতি। চেয়ার টেবিল, গৃহস্থালি সামগ্রী পরিপূর্ণ জোগাড় করার আগেই একটি ডিভিডি ক্রয় করা আরো বেশী অত্যাবশ্যক বস্তুতে পরিণত হয়েছে। অর্থাৎ মানুষ প্রবৃত্তির পূজারী হয়ে উঠেছে। মানুষের মানসিকতা থেকে নৈতিকতার গন্ধ কর্পূরের ন্যায় উবে গেছে। অনেকে ভাবেন, নৈতিকতা হল অসহায় মানুষের শেষ অবলম্বন! নৈতিকতা বিবর্জিত এই সমাজের ফল হচ্ছে উপরের ঘটনাগুলো। বর্তমানে আমরা যে সমাজে বাস করছি, উপরে বর্ণিত দেশগুলোতে তখন আমাদের এই সমাজের বর্তমান অবস্থায় বসবাস করত। আমরা এখন তাদের পুরানা মানে পৌঁছে গেছি এবং ওদিকে তাদের মান আরো খারাপ হয়েছে। আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস এর ন্যাশনাল ক্রাইম ভিকটিমাইজেশন সার্ভে ব্যুরো অব জাস্টিস এর ১৯৯৬ সালের রিপোর্টে জানায়; সেখানে প্রতিদিন ২৭১৩ জন অর্থাৎ প্রতি ৩২ সেকেন্ডে একজন নারী ধর্ষিত হয়। বর্তমানে সে দেশের অবস্থা কোন পর্যায়ে আছে; বোধশক্তিহীন মানুষও সে হিসেবে বের করতে পারবে। এগুলো হল নৈতিকতাহীন এক সমাজ ও রাষ্ট্রের কিছু দৃশ্যমান উদাহরণ। আমাদের সমাজ যেভাবে চলছে, অচিরেই আমরা তাদের উত্তরসূরি কিংবা বেহায়াপনায় তাদেরও টপকে যাবে।
একটু ভাবুন অভিভাবকদের কতটুকু মানসিক বিপর্যয়কর অবস্থায় ফেলে দেবে এসব ঘটনা! কতটুকু অসহায়ত্ব তাদের গ্রাস করতে পারে, পৃথিবীটা তাদের জন্য কতটুকু ছোট হতে পারে! এসব থেকে রেহাই পেতে উত্তরণের একটি মাত্র উপায় হল ধর্মীয় বিধি নিষেধ মেনে চলা। ইসলাম ধর্মে কিছু ব্যক্তিকে বিয়ের জন্য হালাল ও কিছুকে হারাম করা হয়েছে। সকলের সাথে মেলা মেশায় ধর্মীয় চিন্তাকে মনে রাখা উচিত। এসব ব্যাপারে ইসলাম খুবই কঠোর, কোন প্রকার নমনীয়তা সেখানে নাই। যারা এই গণ্ডির বাহিরে যায়; তাদের জন্য উপরের তিক্ত অভিজ্ঞতার ঝুঁকি থাকবেই। প্রতিটি বাবা মাকে তাদের কন্যা সন্তান পালনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। বাচ্চা যত ছোটই হোক, তাকে উলঙ্গ রাখার চিন্তা পরিহার করতে হবে, ইসলাম এটা শিক্ষা দেয়। কন্যা ছোট বলে, ভদ্র ছেলে বিবেচনায়, কারো সাথে একাকী থাকতে দেওয়া উচিত নয়। হোক তিনি মামা, চাচা, শিক্ষক, ওস্তাদ ইত্যাদি। এসবের কিছু উদাহরণ উপরে দেওয়া হয়েছে। তসলিমা নাসরিন প্রাইমারী স্কুলে যাবার পথে, খোদ স্কুল শিক্ষকের সাথে রিক্সায় যাবার পথে; কঠিন পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়েছেন তার কবিতার ভাষায়। অতঃপর তিনি শিক্ষকের উপর গোস্বা না হয়ে, তার সম্পূর্ণ দায় চাপিয়েছেন ইসলাম ধর্মের উপর! মেয়েদের ৩ বছর বয়স পার হলে পর, তার গোসল-বসন ইত্যাদি পরিবর্তনে মা যেন নিজ দায়িত্বে করেন। কষ্ট হলেও মায়েদের এ দায়িত্ব নিজেকে পালন করা উচিত। পারত পক্ষে এসব কাজ পুরুষকে দিয়ে না করানো উত্তম। উপরের উদাহরণে জানা শোনা মানুষ থেকে যদি এত সতর্ক থাকতে হয়, তাহলে বাহিরের মানুষ থেকে কতটুকু সতর্ক থাকবে হবে? এটা বুঝতে অতি বিজ্ঞতার দরকার নাই। এটার অর্থ পুরুষকে বিতর্কিত করা নয়, এটার উদ্দেশ্য বেশী সচেতন থাকা। ইসলাম ধর্মে জীবন চলন পদ্ধতি বিস্তৃতভাবে বর্ণনা করা আছে, সেভাবে চললে কারো উপদেশ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা নাই। স্ত্রী যদি তার গলার হার সংরক্ষণে কখনও স্বামী থেকেও সাবধান থাকে, তাহলে তার কন্যার হেফাজত তার চেয়েও বড় নয় কি? আফসোস! যে কন্যাকে সংরক্ষণ ও নিরাপদ রাখতে পিতা-মাতাকে কত বেশী চিন্তিত হতে হয়। সে কন্যা পরিণত বয়সে স্বেচ্ছায়, ডোন্ট মাইন্ডের বড়ি গিলে, স্বীয় বসনকে জাতির সামনে খুলে দেয়, তখন তার কপাল পোড়া ব্যতীত, অন্য কিছুই তার জন্য অবশিষ্ট থাকেনা।