চেম্বারে বসে রুগী দেখছিলেন ডাঃ মেরামত আলী। দরজা ঠেলে শেষ রুগী ঢুকলেন তার চেম্বারে। হেলতে দুলতে কোন রকমে চেয়ার পর্যন্ত এসে ধপ করে বসে পড়লেন চেয়ারে। ডাঃ মেরামত আলী রুগীর দিকে ভাল করে তাকালেন, মাঝবয়সী একজন মানুষ, চুলগুলো উষ্কোখুষ্কো, জট পেকে গেছে জায়গায় জায়গায়, গালের এক দিকে বিশাল পোড়া দাগ, চোখ দুটো লালা হয়ে ফুলে আছে, মনে হচ্ছে যে কোন সময় টুপ করে বাইরে বেরিয়ে আসবে, শরীর শুকিয়ে কংকালসার, হাড্ডির উপর চামড়াটা কোন রকমে লেগে আছে। ডাক্তার সাহেব এবার ইতিহাস নেয়া শুরু করলেন।
-নাম কি?
-বাংলাদেশ
-এটা আবার কি ধরনের নাম?
-জ্বী, এইডাই আমার নাম
-বয়স কত?
-৪৪ বছর
-সমস্যা কি?
-জ্বর স্যার, জ্বরে গা পুইড়া যাইতাছে, খাইতে পারি না, ঘুমাইতে পারি না, মাথাডা মনে হয় ছিড়া পইড়া যাইব যে কোন সময়
-কতদিনের জ্বর?
-জ্বর তো স্যার লাইগাই আছে, বাড়ে আবার কমে। আমারে একটু ভাল কইরা দ্যাখেন স্যার, আমি শ্যাষ হইয়া গেলাম
ডাক্তার মেরামত সাহেব রুগীকে কিছুক্ষন টিপেটুপে দেখলেন, শেষে বললেন, আপনার তো টাইফয়েড হয়েছে মনে হচ্ছে।
-টাইফয়েড?
-জ্বী, দুই বেলা প্যারাসিটামল খান, জ্বর জারী সব ঠিক হয়ে যাবে
-এন্টিবায়োটিক লাগবে না স্যার?
-ঐ মিয়া, আপনি ডাক্তার নাকি? যান, বাড়ি গিয়া প্যারাসিটামল খান। দরকার হলে দুই বেলার জায়গায় ১০ বেলা খান, জ্বরের গুষ্ঠী শুদ্ধা উদ্ধার হয়ে যাবে।
-সত্যি বলছেন স্যার, এন্টিবায়োটিক লাগবে না?
ডাক্তার মেরামত আলী এইবার তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন, এন্টিবায়োটিক তোর ......মধ্যে দিয়া হান্দাই দিমু, বাইর হ চেম্বার থেইকা।
অবাক বাংলাদেশ কোনরকমে বের হয়ে আসলেন ডাক্তার সাহেবের চেম্বার থেকে। বাড়ি গিয়ে ১০ বেলা করে প্যারাসিটামল খেতে থাকলেন। তাতে অসুখের তো কোন উন্নতি হলই না, সাথে মাত্রাতিরিক্ত প্যারাসিটামল খেয়ে লিভার, কিডনী দুটোই বিকল হয়ে শেষমেষ আইসিইউ তে ভর্তি হলেন, এখন পাঞ্জা লড়ছেন মৃত্যুর সাথে।
বি:দ্রঃএই লেখাটার সাথে চিকিৎসা বা চিকিৎসক সম্পর্কিত কোন বিষয় জড়িত নয়