প্রিয় অভিমানিনী,
আজ কোন ক্ষুদে বার্তা বা স্মার্টফোনের সিমকলে নয়। প্রিয় রঙের নীল খামে তোমাকে লেখা আমার প্রথম আর শেষ চিঠি- ইচ্ছে পূরণ করে নিলাম।
অভিমানিনী, কথা তুমি রাখনি। সেই স্বপ্নের সোনালি দুপুরে গায়ের গন্ধ শুকতে-শুকতে আমাকে কথা দিতে বলছিলে, ছেড়ে যেন না যাই। অভিমানিনী, আমিতো যাইনি। কত বসন্ত পার করলাম তোমায় নিয়ে। পাখির কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে দুইজন গেয়েছিলাম প্রণয়ের গান। গোধূলীতে বাবা-মার চোখ ফাঁকি দিয়ে চলে আসতে লেকের পারে গলা ধরে আড্ডা করতে।
অভিমানিনী, সেই বৈশেখে শাহবাগের পিচঢালা রাস্তায় শাড়ি পরে হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে বলেছিলে, ছেড়ে যাবে নাতো। বলেছিলাম, পাগলীটা, যাব না। আমি যাইনি। বর্ষায় পা মিলিয়ে দৌড়েছি দুজন বৃষ্টিতে ভিজে। সে-বার শরতে বসে কাব্য রচনা করেছিলাম। কাব্যগ্রন্থের নাম অভিমানিনী আর উতসর্গ পাত্রে তোমার নামটি বোল্ড করে লেখা।
অভিমানিনী, হেমন্তে তুমি যেই সন্তানের অস্তিত্বও নেই তার নাম রেখেছিলে "আফান" আর মেয়ে হলে আমার উপন্যাসের "শোভা"। শীতের রাতে কম্বল গায়ে বিয়ের পরের সংসার নিয়ে গল্প করতে। শীতের এক সকালে রেস্টুরেন্টের লম্বা সোফায় বসে তোমার ওড়না গায়ে জরিয়ে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কম্বলের উষ্ণতা অনুভব করেছিলাম।
অভিমানিনী, কত ঘুমিয়েছি তোমার কোলে বিশ্ববিদ্যালয়ের খালি ক্লাসরুমে। আজ রাতের পর থেকে তুমি ঘুমাবে অন্যের ঘরে। যাকে তুমি কোনদিন চেননি, জানো না।
এক গ্রীষ্মে এলে আরেক গ্রীষ্মে আয়োজন করে চলে গেলে। কে বল, আমাকে আগামী বসন্তে কোকিলের গান শোনাবে।
দোয়া করি সংসারে সুখী হও। আমার আজ একটি আবদার, তোমার বাসর রাতে যখন তোমার স্বামী তোমাকে স্পর্শ করে তোমাকে উত্তেজিত করে তুলবে তখন ভুল করেও তার স্পর্শে আমাকে খোঁজার চেষ্টা কোরো না। তোমার জন্য আমার দেয়া উপহার আমার, চশমাটা। আমি আর লেখব না। লেখব না কোন গল্প, কোন উপন্যাস, কোন কাব্য। আমার লেখায় আর থাকবেনা কোন স্বার্থপর সমন্বিত অভিমানিনী। অভিমানিনী- তোমার উপহার যত্নে রেখ।
ইতি,
তোমার প্রতিক্ষিত প্রেমিক
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:০২