১০০০০০০০০০০০০০ টাকা (১ লাখ কোটি টাকা) । বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ এটা । বলতে ২ সেকেন্ড সময় না নিলেও টাকার অংকটা কিন্তু কল্পনার চেয়েও অনেক বেশি । অংকে লিখতে ১ এর পরে ১৩ টা শূন্য দিতে হয় । প্রায় ৪ টা পদ্মা সেতু তৈরি হয়ে যেত এই টাকায় । টাকা গুলো সব ১০০ টাকার বান্ডিলে পরিণত করে ; বান্ডিলগুলোর মোট উচ্চতা দাঁড়াবে ৫৫ টা আইফেল টাওয়ারের সমান । এ পরিমাণ টাকা ৫০০ টাকার নোট করলে পুরো ঢাকার শহরকে (৩০০ বর্গ কিমি) ২২ বার নোট গুলো দিয়ে ঢেকে ফেলা যাবে । ১০০ টাকার নোট করলে বাংলাদেশের ১০ ভাগের ৬ ভাগ ই মুরে দেয়া যাবে এই পরিমাণ টাকা দিয়ে । সরকারী হিসেবে বর্তমানে বাংলাদেশের মোট বেকার ২৬ লাখ ৩০ হাজার । এদের মধ্যে এই টাকাটা ভাগ করে দিলে প্রত্যেকে ৩৮ লাখ ২ হাজার ২শ ৮১ টাকা করে । বিশ্বাস হয় ? বর্তমান সরকার যখন ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসে তখন খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩৮ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। এই হিসাবে গত প্রায় ৮ বছরে প্রকৃত খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। বৃদ্ধির হার প্রায় ১৬৪ শতাংশ । এর বাইরে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে আরও ১৫ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনর্গঠন করা হয়েছে। এই সুবিধা পেয়েছে মূলত বড় খেলাপিরা । আর এসবের ভুক্তভুগি কারা ? খেলাপি ঋণের প্রতিযোগিতায় এশিয়া প্যাসিফিক দেশ গুলোর মধ্যে সবার উপরে বাংলাদেশ । আইএমএফের (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ) প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেবল এশিয়ায় নয়, সব দেশ মিলিয়েই বাংলাদেশের খেলাপি ঋণ সবচেয়ে বেশি। এ প্রতিযোগিতায় সরকারকে এগিয়ে যেতে সবচেয়ে বড় অবদান দেশের রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর । এদের দেয়া মোট ঋণের ২১ দশমিক ৪৬ শতাংশই খেলাপি ! এসব ছাইপাঁশ ভেবে মনটা মাঝে মাঝেই খারাপ হয়ে যায় । তবে একটু পরে ভাবি ; কি দরকার এত বড় বড় হিসাব করার ? দুবেলা খেয়ে বেঁচে আছি ; এখনও গুলি খেয়ে মরি নি ; এও বা কম কিসে ? দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে , পদ্মা সেতু সহ আরো কত শত উন্নয়ন হচ্ছে ! দেশ তো পিছিয়ে নেই ! সে এগিয়ে যাচ্ছে এক অদম্য গতিতে । ( ভয় হয় , সামনে পথে খাঁড়ি নেই তো ? )
তথ্য সুত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, ১৪ ও ১৯ মে ২০১৬ । ২০১৬-০১-০৬ এর দৈনিক মানবজমিন ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১২:৩১