(ইজরায়েলের জবানীতে)
৭ জানুয়ারি ২০০৯ পিতৃভূমির মাটিকে রক্ষার্থে নিয়োজিত ইসরায়েল সেনাবাহিনীর একদল যোদ্ধা আর্টিলারি , ট্যাংক আর হেলিকপ্টার সমন্বয়ে চালানো সাঁড়াশি আক্রমণে যখন গাজা ভূ-খন্ডের জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলটি গুড়িয়ে দেয় , বিশ্ববাসীর তীব্র প্রতিক্রিয়া সত্যিই হতাশ করে আমাদের । গাজার ঘরে ঘরে হামলা করে একজন দু'জনকে হত্যা করা সময়সাপেক্ষ আর ব্যায়বহুল , অথচ প্রাণভয়ে জাতিসংঘ স্কুলে আশ্রয় নেয়া শিশু , নারীদের উপর ১০ মিনিটের কম্ব্যাট অপারেশন মুক্তি দেয় ৪০ টি প্রাণকে , রক্ষা হয় অমুল্য সময় আর শ্রমের ।
বিশ্ববাসীর নির্বুদ্ধিতা সত্যিই ইজরায়েলকে হতাশ করে , ৪০ নারী শিশুর দলা পাকিয়ে যাওয়া দেহ , দেয়ালে ছিটকে যাওয়া মস্তিস্ক আর রক্তের ছোপ আর সাত শতাধিক প্রাণীর নিথর দেহ দেখে মানবতার নামে যে বিশ্ববাসী ডুকরে কেঁদে উঠে , তাদের আমরা মানসিক বিকাশ আমরা কামনা করি। যারা আমাদের অভিযুক্ত করে হিংস্রতা আর মানসিক বিকারগ্রস্থতার দায়ে , সেইসব অর্ধ উন্মাদদের আমরা অ্যাডাম স্যান্ডলারের সাম্প্রতিক সময়ের মুভি You Don’t Mess with the Zohan দেখতে পরামর্শ দেই। নির্মমতা আর নৃশংসতার মাঝেও কি করে হাস্যরসের অফুরন্ত ভান্ডার খুঁজে পাওয়া যেতে পারে সে শিক্ষা হয়ত কমেডিয়ান অ্যাডাম স্যান্ডলারই কেবল তাদের দিতে পারবেন ।
তারপরও যারা গোঁয়ার সেজে থাকেন , তাদেরকে আমরা দৃঢ় ভাষায় জানিয়ে দিই ......."স্কুল থেকে ইসরায়েলের উপর একটানা মর্টার নিক্ষেপ করা হচ্ছিল , আমরা জীবন রক্ষার্থেই কেবল একটা সতর্কতা অবলম্বন করেছি " । শব্দের গতি, এমনকি আলোর গতির সূত্রকেও অস্বীকার করে কয়েক মুহুর্তের মাঝেই আমাদের বিবৃতির প্রতিধ্বনি শোনা যায় প্রেসিডেন্ট বুশ আর প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনের কন্ঠে । অথচ , কিছু মানবপ্রেমী নির্বোধ তারপরও বিশ্বাস করতে চায় না ।
এতকিছুর পরও বিশ্ববাসী যদি গণহত্যার মাঝে কৌতুকপ্রদ কিছু খুঁজে পেতে সত্যি ব্যর্থ হয় ,তখন তারা জানতে চায় ১৯০০ সাল থেকে আজ অব্ধি কেন ফিলিস্তিনি জনগণ অপরিসীম ভীতি নিয়ে কেন আজও লড়ে যাচ্ছে ? হলোকস্টের চাইতেও নৃশংস গণহত্যা নিশ্চিত জেনেও কেন তারা ট্যাংকের গোলার সামনে বুক পেতে দিচ্ছে ?১৯১৭ থেকে শুরু হওয়া ইহুদী অভিবাসন ঠেকাতে ১৯২০ সালে কেন তারা মরিয়া হয়ে নিজ ভূমের অধিকার রক্ষায় দাঙ্গায় জড়িয়ে পড়ে ? প্রবল ক্ষতির শিকার হয়েও ১৯২৯ সালে কেন আরবদের মাঝে ইহুদী বিদ্বেষী দাঙ্গা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে? ১৯৩৬ থেকে ১৯৩৯ সালে ফিলিস্তিনিরা কেন আবার বিদ্রোহ সংগঠিত করে?
সেসব জিজ্ঞাসু ইসরায়েল দ্ব্যর্থহীনভাবে জানাতে চায়..............."ইজরায়েল তার লক্ষ্য অর্জনে কখনও লুকোছাপা করে না ।ইজরায়েল আজ তার জন্মের পর প্রথমবারের মত সত্য কথাগুলো প্রকাশ করবে ।"
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর স্বরুপে আত্মপ্রকাশ করতে খুব বেশি সময় লাগেনি আমাদের । ইতিহাসের পাতায় একবার চোখ বোলান , ২২ জুলাই , ১৯৪৬ এর কথা মনে পড়ে কি ? আমাদের মহান ইহুদী সন্ত্রাসীরা সেদিন আরবদের বেশ ধরে কিং ডেভিড হোটেলের বেজমেন্টে রাখা ছটি বোমার আঘাতে হোটেলটি ধুলোর সাথে মিশিয়ে দেয় ।৯১ টি ঝরে যাওয়া প্রাণ আর আহত ৪৬ জনের দায় এসে পড়ে নির্মোহ আরবদের উপর , অতঃপর এই অজুহাতে ফিলিস্তিনি আরবদের সমূলে কচুকাটা করার অঙ্গীকার করা হয় । সূচনা নাটকের এমন মধুর পরিসমাপ্তিও কি জিজ্ঞাসুদের স্বস্তি দেয় না ?
১৯৪৬ সালের মঞ্চায়িত নাটকের কথা যাদের অনেক পুরনো মনে হয় , তারা না হয় ২০০১ সালের ৯/১১ এর দিকেই চোখ ফেরান । আল-কায়েদার সেদিনের সন্ত্রাসী আক্রমন কি আমাদের হাতে মুসলিম সভ্যতা হত্যা আর দখলদারিত্বের অমোঘ অধিকার দেয়নি ? তারপরও কি স্কুলে আশ্রয় নেয়া সন্ত্রাসী শিশু আর নারী হত্যা আপনার কাছে অযৌক্তিক মনে হয় ?
মার্কিন , ব্রিটিশ আর পশ্চিমা রাষ্ট্রযন্ত্রের ইজরায়েলের কাছে নতজানু হতে দেখে যারা ভ্রু কুচকান , তাদেরকে আশ্বস্ত করে বলি ....... ইজরায়েল আপনাদের থেকে ভিন্ন কিছু ভাবে না । ইজরায়েল মার্কিন আর ব্রিটিশদের এহেন আচরণ দেখে ঠিক ততটাই করুণা করে , ঠিক যতটা সারা বিশ্বের বাকি মানুষগুলো দেখে ।
১৯১৭ সালের ব্রিটিশ লর্ড বেলফোরের ঘোষণায় ফিলিস্তিনে জড়ো হতে থাকে ইহূদীরা যে প্রবল বিশৃংখলার জন্ম দেয় , সেটার শিক্ষা ব্রিটেনকে পেতে ২২ বছর অপেক্ষা করতে হয় । ১৯৩৯ সালে নিজের স্বার্থেই ব্রিটেন বাধ্য হয় , ফিলিস্তিনে অবিভাসন নিষিদ্ধ করতে । ব্রিটেনের এই হঠকারিতার দাঁত ভাঙা জওয়াব দিতে ইহুদীরা প্রস্তুত হয় , কিন্তু মাঝের ৫ টি বছর তাদের সইতে হয় নাজি জার্মান আক্রোশের ধকল ।
ইজরায়েলকে অমান্য করার আস্পর্ধা দেখানো কতটা ভয়াবহ হতে পারে সে শিক্ষা ব্রিটেন পেয়ে যায় , ১৯৪৬ সালে ।জেরুজালেমের ব্রিটিশ প্রশাসনিক সেক্রেটারি জন শ' কে যখন ব্রিটিশ গোয়েন্দারা ইহুদি সূত্রগুলো থেকে সম্ভাব্য বোমাহামলার কথা জানালে , শ' ঔদ্ধত্মের সাথে জানান "আমি ইহূদীদের কাছে থেকে নির্দেশ পেতে আসিনি , আমি এখানকার প্রশাসক , আমি নির্দেশ দিতে এসেছি"।জন শ' এর এমন দাম্ভিক উচ্চারণের মূল্য সাথে সাথে ইজরায়েল পরিশোধ করে । ৯ মিনিটের ব্যবধানে ৩ টি ফোনকল অসংখ্য ব্রিটিশ নাগরিকসহ কিং ডেভিড হোটেলকে পরিণত করে মৃত্যু পুরীতে ।ইসরায়েলি প্রধামন্ত্রী মেনহাম বেগিনও কোন লুকোছাপার ভেতরে না গিয়ে যখন ঘোষণা করেন "ব্রিটেনকে ২৫ থেকে ২৭ মিনিট সময় দেয়া হয়েছিল", তারপরও ব্রিটেন একটি বারও প্রতিবাদের সাহস করে উঠে না , স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে ,সুর মেলায় জায়োনিস্ট সংগীতের তালে ।পুরো দোষটি ফেলা হয় আরবদের ঘাড়ে । একদিকে সদ্য বিশ্বযুদ্ধ জয়ী প্রবল প্রতাপশালী ব্রিটেন , অন্যদিকে জার্মান শিবিরগুলোতে জনসংখ্যার অর্ধেক হারিয়ে ফেলা ইহূদী । এরপরও কি আপনার সন্দেহ থাকে , কে কার দাস ?
ইসরায়েলের সামনে মার্কিনীদের ন্যূজ মেরুদন্ড দেখে যারা অবাক হয়ে যান , তার ইন্টারনেটে খুঁজে বের করুন ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েলি যুদ্ধ বিমানের বোমা আর টর্পেডোর আঘাতে ধ্বংস হয়ে যাওয়া মার্কিন বেসামরিক জাহাজ USS Liberty এর কথা । কোন আনুগত্য আর ভীতিতে মার্কিন নেভি এই শত বেসামরিক মার্কিন নাগরিকের ভূমধ্যসাগরের বুকে হারিয়ে যাবার ঘটনাকে ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে ফেলে সেটা বোধ করে বুঝতে কারও দেরী হবে না । এরপরও কি নির্লজ্জ মার্কিন পক্ষপাত আপনাদেরকে অবাক করে ?
জাতিসংঘের নির্বিকার ভূমিকায় যারা অবাক হয় , তাদেরকে ইজরায়েল জানাতে চায় , বিগত ৫০ বছরে কমপক্ষে ১০১ বার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ইসরায়েলের তীব্র নিন্দা করেছে । যারা এসব নিন্দা প্রস্তাবের পক্ষ বিপক্ষের শক্তি যাচাই করতে , তারা জানুক দু'একটি ব্যতিক্রম ছাড়া ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র সব রাষ্ট্রও বিবেকের তাড়নায় ইসরায়েলের বিপক্ষে ভোট দিয়ে বসে , ব্যতিক্রম ছাড়াই ১০১ টি প্রস্তাবেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অকৃত্রিম ভালবাসায় ইসরায়েলকে সঙ্গ দিয়ে যায় । সাধারণ পরিষদে ১৮৫-২ ভোটের অসংখ্য প্রস্তাবও সমূলে উৎপাটিত হয়ে যায় । মার্কিন ভেটোর জোরে মার্কিন ইসরাইলি ২ টি ভোট , ১৮৫ টি দেশের সুশীল বিবেককে কুপিয়ে হত্যা করতে পিছপা হয় না ।
ইরাক ইরানে আগ্রাসনের ভিত্তি খুঁজে যারা অহেতুক সময় অপচয় করে চলেন , ইসরায়েল তাদেরকে পারমাণবিক বোমামুক্ত মধ্যপ্রাচ্যের বদ্ধ সংকল্পের কথা বলে ।ইরাকের পারমাণবিক বোমার সম্ভাবনাকে অঙ্কুরে বিনষ্ট করতে ১৯৮১ সালে ইরাকের নিউক্লিয়র রিয়ক্টরগুলোর উপর ইসরায়েলি বিমান হামলার কথা কি বিশ্ববাসী ভুলে গেছে ? সন্দেহযুক্ত কোন দেশের পেছনে পোষা মার্কিনীদের লেলিয়ে দিয়ে কি করতে পারে ইসরায়েল , ২০০৩ থেকে ধ্বংসপ্রাপ্ত ইরাকীদের কে দেখেও কি কেউ শিক্ষা নেয় না ? ইরান তারপরও কোন সাহসে পারমানবিক শক্তিধর রাষ্ট্র হয়ে উঠার সাহস দেখায় ? ইরান জেনে রাখুক , পোষা মার্কিন সরকারের শরীরের জেঁকে বসা ইরাকী ক্ষতই কেবল তাদের এখনও বাঁচিয়ে রেখেছে , কিন্তু পোষা প্রাণীর উপর কেরল আস্থা রেখে ইসরায়েল বসে থাকে না ।
ইজরায়েল মনে করে , মধ্যপ্রাচ্যে তাদের কাছেই কেবল থাকবে পারমাণবিক বোমার অফুরন্ত ভান্ডার ।যারা ইসরায়েলের ক্ষমতা নিয়ে ,আর পারমাণবিক বোমামুক্ত মধ্যপ্রাচ্যের স্বপ্ন সত্যি সত্যি ধারণ করেন , সেই মানসিক প্রতিবন্ধীদের ইসরায়েল জানাতে চায় , ১৯৫৮ সালে ফ্রান্সের সহযোগিতায় ডিমোনায় ইসরায়েলের পারমাণবিক কার্যক্রমের সূচনা হয় । আর হ্যাঁ পারমাণবিক বোমার ভয় দেখিয়ে পৃথিবীকে কি করে সন্ত্রস্ত করতে হয় , প্রয়াত প্রধানমন্ত্রি বেন-গুরিয়ন আর গোল্ডামায়ারকে সে শিক্ষা শিখিয়ে যান ইসরায়েলের একান্ত অনুগত মার্কিন প্রেসিডেন্ট কেনেডী , নিক্সন আর লিন্ডন বি জনসন ।
ইসরায়েলের পারমাণবিক শক্তির ব্যাপ্তি নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলতে চান , তাদেরকে ইসরায়েল পরামর্শ দেয় সাবেক ইসরায়েলি পারমাণবিক কর্মকর্তা মোর্দেশাই ভানুনুর দিকে দৃষ্টি ফেরাতে । বিশ্বাসঘাতক এই কর্মকর্তা ৩০০ পারমাণবিক বোমা , নিক্ষেপণযোগ্য মিসাইলের ছবি তুলে ১৯৮৬ সালে লন্ডন টাইমসে ছাপিয়ে দেন । এহেন গুরুতর অপরাধে ভানুনুর জন্য কি দুর্বিপাক বয়ে এনেছিল সে প্রসংগটি ইসরায়েল খানিক পরেই তুলে ধরার ইচ্ছা রাখে ।
বিশ্বের যেসব দেশে ফিলিস্তিনের সমস্যাকে পাশ কাটিয়ে নিজের সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখার আনন্দে বিভোর , ইসরায়েল তাদেরকে জানাতে চায় , বিশ্ব মানচিত্রে কোন দেশের সার্বভৌমত্বের তোয়াক্কা ইসরায়েল করেনা ।
৬০ এর দশকের শুরুর কয়েকটি বছর নাজি জেনারেলদের খোঁজে আর্জেন্টিনা , ব্রাজিলে মোসাদের স্পেশাল ফোর্স যে অসংখ্য অভিযান পরিচালনা করেছিল , তার কোনটি সম্পর্কে কি ঐ দেশগুলোর সরকার অবগত ছিল ? ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোর অজান্তেই তাদের বিমানবন্দরগুলোতে বিমান নামিয়ে জার্মান জেনারেলদের অপহরণ করে নিয়ে আসার জন্য কারও অনুমতি ইসরায়েলের প্রয়োজন হয়নি । ১৯৭৬ সালে উগান্ডার কাম্পালায় হাইজ্যাক করে নিয়ে যাওয়া বিমানের ইসরায়েলি যাত্রীদের উদ্ধারে কাম্পালা বিমানবন্দরে রাতভর কমান্ডো অভিযানে কারও অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন ইসরায়েল বোধ করেনি । দেশদ্রোহী মার্দেশাই ভানুনুকে ব্রিটেন থেকে অপহরণ করে ইসরায়েলি বিমানে উড়িয়ে নেয়ার পরও ব্রিটেন সামান্যতম টেরও পায়নি । উল্টো আর্জেন্টিনা , ব্রাজিল , উগান্ডা আর ব্রিটেনের সার্বভৌমত্ব লংঘনের নালিশ আর কান্নায় ইজরায়েল অট্টহাসিই হেসেছে ।
যারা ইসরায়েলের দিকে ঢিল ছুঁড়ে মারে , সেইসব কসাই ফিলিস্তিনি জেনে রাখুক , বিপুল পশ্চিমা আর্থিক সহযোগিতা দূরে থাক , শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে উপঢৌকন হিসেবে বার্ষিক ৩০০ কোটি ডলারের অস্ত্রই পেয়ে থাকে ইসরায়েল । অংকটা বুঝতে অসুবিধা হলে তারা , পুরো আফ্রিকার ৫৫ টি দেশে সর্বমোট বার্ষিক মার্কিন সাহায্যের দিকে একবার চোখ বুলাক , তারপর দৃষ্টি নিবদ্ধ হোক আফ্রিকার মানচিত্রের দিকে , মহাদেশটির বিশালত্বে দিকে , আর ঠিক উপরে ডান কোণে খুঁজে বের করা হোক ক্ষুদ্রাকৃতি ইসরায়েলকে ।
যারা ৩০০০ বছরের পিতৃভূমির দাবীকে সত্যি ভেবে বিশ্বাস করে সেইসব লোকও জেনে রাখুক , এমন হাস্যকর যুক্তি কোন ইসরায়েলিও বিশ্বাস করে না । যদি তাই হত , তাহলে প্রাথমিক অবস্থায় ইহুদীদের আবাসস্থল হিসেবে উগান্ডা বা আর্জেন্টনার কথা বিবেচনা করা হত না । যদি তাই হত , ব্রিটেন নিউজিল্যান্ড ফিরিয়ে দিত মাওরি দের কাছে , যুক্তরাষ্ট্রে থাকত কেবল রেড ইন্ডিয়ান আর মাচুপিচু হত পেরুর রাজধানী ।
মানবতাবাদী বিশ্ববাসী ,
ইজরায়েল তোমাকে ভাবতে বলে .... বিশ্বের বুকে অসংখ্য মিডিয়া সাংবাদিক প্রাণ হারানোর পরেও কেন শুধু একজন ডানিয়েল পার্লের জন্য কান্না ঝরে , তার স্মৃতির উদ্দেশ্যেই কেন শুধু নির্মিত হয় হলিউডের "অ্যা মাইটি হার্ট" মুভি । গানস অব নাভারন , নাইট অব দ্যা জেনারেলস বা ব্রিজ অন দ্যা রিভার কাউয়াই এর মত মুভির বদলে কেনই বা এখন শুধু নির্মিত হয় শিন্ডলার্স লিস্ট , লাইফ ইজ বিউটিফুল , দ্যা পিয়ানিস্ট বা মিউনিখ? ফিলিস্তিনিদের মত নোংরা শ্বাপদের স্মৃতিতে নিবেদিত একটি সিনেমার নামও কি তোমরা বলতে পারবে ?
প্রতিটি ঢিলের আঘাতে ঝরে যাওয়া এক ফোটা ইসরায়েলি রক্তের বিনিময়ে মার্কিন মিডিয়ায় শুরু হওয়া মাতমের দিকে তাকাও , বিলিয়ন ডলারের সাহায্যের দিকে তাকাও । আরেকবার তাকাও তোমাদের ঔষধপত্রবিহীন হাসাপাতাল, খাদ্যবিহীন বিরান জনপদ , বিদ্যুতবিহীন লাশঘরের পচে গলে যাওয়া সন্ত্রাসীর লাশের দিকে ।
ভাবো , ভাবো , সম্ভবত এ ভাবনার পরিধি তোমার কাছে মহাবিশ্বের সৃষ্ট রহস্য থেকেও বেশি জটিল । কিন্তু ইসরায়েল জানে ........"মাইট ইজ রাইট" , তারপরও কি তোমরা আমাদের ইসরাইলীদের আত্মরক্ষার অধিকারকে অস্বীকার করবে ?