আপাতদৃষ্টিতে আমি বেশ সুখী একটা মানুষ। চারপাশের মানুষগুলোর ভীড়ে একটা মানুষ সুখী না অসুখী তা জানাটা খুব একটা কঠিন কিছু না। আগাগোড়া ভালোমতো পর্যবেক্ষণের পর যদি দেখা যায় প্রয়োজনের চেয়েও অতিরিক্ত কথা বলছে, তবে তাকে আপেক্ষিকভাবে সুখী হিসেবেই ধরে নেয়া যায়। অবশ্য উল্টোটাও ঘটতে পারে, খুব বেশি পরিমাণে নিঃসঙ্গ মানুষজনও পরিচিত কিংবা আংশিক পরিচিত কাউকে পেলে কথার স্রোত বইয়ে দেয়। তবে তাদের পরিমাণটা অতি সামান্য। ধরে নেয়া যায় শতকরা পনেরো থেকে বিশ ভাগ। বাকি নিঃসঙ্গ মানুষগুলো একাকীত্বে অভ্যস্ত হয়ে কথার থেকেও দূরে সরে যায়। তাই চুপচাপ মানুষগুলোকে তুলনামূলক অসুখী বলেই ধরে নেয়া যায়।
তাহলে সুখী মানুষের সন্ধান পেতে অধিক কথা বলা মানুষজন খুঁজে বের করা দরকার। যদিও ততটা দুঃসাধ্য কাজ নয় আবার খুব একটা সহজলভ্যও নয়।
পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি কথা বলে কারা জানেন তো? পাগলরা। এরা সারাক্ষণই কথা বলতে থাকে। যেখানেসেখানে বলে, যারতার সাথে বলে, কারণে-অকারণে বলে, সকাল-বিকাল-রাতে বলে, জেগে থাকলে বলে আবার ঘুমের মাঝেও বলে। এদের কাছে হাসির কোনো অভাব নেই, নেই আনন্দেরও অভাব। তারা ফুটপাতে শুয়ে থেকে আকাশের নক্ষত্র গুণে যেমন আনন্দ পায়, চৌরাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে ন্যাংটো হয়ে ট্রাফিক কন্ট্রোল করেও তেমনি আনন্দ পায়।
জগতের আসল সুখ এসে ধরা দেয় এ পাগলদের কাছেই।একবার কষ্ট করে কোনোভাবে পাগল হয়ে যেতে পারলেই হয়, জীবনে আর কোনো দুঃখকষ্টের বালাই থাকবে না। চারিদিকে শুধুই সুখ আর সুখ। এইসব ভেবেই আসলে পাগল হয়ে যেতে ইচ্ছে করে। একটা জীবন কাটিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা খুব একটা মন্দ না।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মার্চ, ২০২২ রাত ২:২৭