বিঃদ্রঃ এই পোস্টটি কাউকে হেয় প্রতিপন্ন বা কটাক্ষ করার জন্য নয়।শুধুই ফান হিসেবে নেবেন।
নটরডেম কলেজে পড়াকালীন জীবনের ব্যাপ্তিকাল খুব বেশী না। তবে সে ক্ষণকালও জীবনে কিছু মজার স্মৃতি রেখে গেছে।সেগুলো শেয়ার করার জন্যই এই সিরিজের শুরু।
আজকের ঘটনা দুটোই বাংলা ক্লাসের।নটরডেমের বাংলা ডিপার্টমেন্টের একজন জনৈক শিক্ষক প্রায় সবার কাছেই কমবেশী জনপ্রিয়।আর জনপ্রিয়তার দ্বিতীয় কারন তিনি ভালোই পড়ান।তাহলে প্রথম কারন?প্রথম কারন তার পড়ানোর স্টাইল। তিনি পড়ানোর ফাকে ফাকে প্রায়ই কিছু সংগত অসংগত গরম কথা বলতেন। যার প্রধান লক্ষ্য এই বোরিং বাংলা পড়ানোর সময় সামান্য বিনোদন দিয়ে ছেলেপুলেদের মনযোগ ধরে রাখা। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সে বিনোদনটাকে ঠিক নির্মল বলা যেত না। তবে ও বয়সে ওরকম বিনোদন বেশীরভাগেরই ভালোই লাগত।এতক্ষনে নিশ্চই বুঝে ফেলেছেন কার কথা বলছি থাক নাম বলার দরকার নেই। আমাদের ফাষ্ট ইয়ারের মাঝামাঝি থেকে ঐ স্যার ক্লাস নেয়া শুরু করেন।কিন্তু সেকেন্ড ইয়ারের প্রথমদিকে আমরা আর স্যারকে পাইনি। তখন একেক দিন একেক জন শিক্ষক ক্লাস নিতেন।কেউই স্থায়ী হতে পারছিলেন না কারন কেউই পরিপূর্নভাবে ক্লাস কন্ট্রোল করতে পারতেন না।
এমতাবস্থায় একদিন এক নতুন শিক্ষককে ক্লাস নিতে পাঠানো হল।স্যার এসে নিজের পরিচয় দিলেন। এরপর "আমি তোমাদের উপোন্নেস পড়াব" ।স্যারের 'উপোন্নেস' শুনে পুরো ক্লাস হাসিতে ফেটে পড়ল।প্রথম ক্লাস, স্যার এম্নিতেই নারভাস তারউপর এই হাসিতে স্যার আরো নারভাস হয়ে গেলেন। তাড়াতাড়ি বই নিয়ে 'পদ্মা নদীর মাঝি' রিডিং পড়া শুরু করলেন। কিছুক্ষণ পর আবারো পুরো ক্লাসে হাসির ঢল কারন স্যার 'কুবের' কে তিন আলিফ টানসহ 'কুবিইইর' ডাকছেন।কিন্তু স্যার পড়েই গেলেন।এবং আস্তে আস্তে ক্লাসে মৃদু এবং মৃদু থেকে জোড়ালো গুঞ্জণ শুরু হতে লাগল। তখন স্যার অবস্থা বেগতিক দেখে ধমকা-ধমকি শুরু করলেন 'এই তোমরা থামো , তোমাদের কি লজ্জা-শরম কিছু নাই নাকি?এতো বলার পড়েও তোমরা কথা বলেই যাইতাছ।' এক ছেলে বলে উঠল 'স্যার লজ্জা তো নারীর ভূষণ' ।এই কথায় স্যার পুরা চুপ । এমন সময় পেছন থেকে আরেক ছেলে বলে বস্ল 'স্যারে লজ্জা পাইছে' ।যদিও আস্তে বলতে চাইছিল কিন্তু জোরে হয়ে গেল।আর সাথে সাথে পুরো ক্লাস হাসতে হাসতে গড়াগড়ি।
এইভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর আমরা আবার আগের স্যারকে ফেরত পেলাম।এখন স্যারের গরম কথার কিছু উদাহরণ দেই। স্যারের কথার সর্বোচ্চ তাপমাণ যদি ১০ আর গড় ৫-৬ হয় তাহলে আমি যে উদাহরণ গুলো দিব এগুলোর তাপমাণ ২-৩। স্যার তখন পদ্মানদীর মাঝি পড়ান। এই ঊপন্যাসের কিছু চরিত্র সম্পর্কে স্যারের উক্তি নিম্নরুপঃ
গণেশঃ এই ব্যাটা জানেই না কি দিয়ে কিভাবে কি করতে হয়। শুধু জানে বিয়া করলে বছর বছর বউয়ের ছেলে-মেয়ে হয়
কপিলাঃ এই বদ মেয়েটার কাপরের ফাক দিয়ে এটা-সেটা দেখা যেত
মালাঃ কুবেরের পঙ্গু স্ত্রী মালা।সে দাড়াতে পারে না, ঠিকভাবে বস্তে পারে না,কিন্তু শুতে পারে (এই কথায় স্যার নিজেই চোখ টিপেছিলেন)
উপন্যাসের শেষ দৃশ্যঃ কুবের চলে যাচ্ছে হোসেন মিয়ার দ্বীপে। কপিলা কাদো কাদো নয়নে বল্ল 'আমারে সঙ্গে নিবা?'।.............. কুবের কপিলাকে নৌকায় তুলে নিল।এরপর হেচ্কা টানে নিয়ে গেল ছইয়ের ভিতরে।দূর থেকে দেখা গেল নৌকাটি দুলছে
স্যারের এইরকম কথাবার্তার ফলে অনেকেই আগ্রহ নিয়ে স্যারের ক্লাস করলেও ৩-৪ জন করত না। ওরা স্যার আসার আগেই ক্লাস থেকে বেরিয়ে যেত। এমনি একদিন ওরা ক্লাস থেকে বের হতে গিয়ে স্যারের সামনে পরে গেল । স্যার ওদেরকে ডেকে ভেতরে নিয়ে এলেন.....
- কি! ক্লাস করবেনা?
-না স্যার
-কেন?
-এমনি স্যার
-ক্লাস ভালো লাগে না?
-
-এটেন্ডেন্সের দরকার নাই?
-আছে স্যার
-তাহলে ক্লাস করনা কেন?
-
-কথা বলনা কেন?
-স্যার আপনার ক্লাসে ওযু থাকে না
পুরা ক্লাস