শাকিব অপু ষিদ্ধ নিষিদ্ধ ও আমাদের চলচ্চিত্র।
শাকিব খানকে আমরা সবাই চিনি। চিত্রনায়ক মান্নার মৃত্যুর পর শাকিব চলচ্চিত্র জগতের একমাত্র ভরসা। যা কিছু ছবি ব্যবসা করে তার মধ্যে বেশী ছবি থাকে শাকিবের। এর মধ্যে অনন্ত জলিল এসেছেন তিনি ব্যবসায়ী মানুষ। খুব বেশী সময় পান না। মাঝখান দিয়ে চঞ্চল চৌধুরীর কিছু ছবি সুপারহিট হয়ে যাচ্ছে। তবুও সবচে বেশীসংখ্যক হলে সারাবছর শাকিব খানের ছবিই চলে। ইমন পিছিয়ে পড়েছেন। নিরব ২/১টি ছবি করছেন বাপ্পি, সায়মন ভালো করছেন, আরেফিন শুভর ভালো সম্ভাবনা আছে।
এর মধ্যে শাকিব অপু নিয়ে একচোট হয়ে গেলো। সেগুলো আর না বলি। শাকিব অপুকে ভালোবেসে বিয়ে করেছেন। এটা ভালো দিক। কিন্তু অপু একা একা কলকাতা গিয়ে সন্তান জন্ম দিয়ে এসেছেন। এই সংবাদ। কোনো মানুষের ভাবমূর্তিকে ইতিবাচক প্রবাহে রাখতে পারে না। কিছু অবহেলা, কিছু মানসিক টর্চার এর ইঙ্গিত দিলেন অপু বিশ্বাস। ভবিষ্যতে এগুলো প্রকাশিত হবে যদি ঘটনা সত্য হয়। কিন্তু বর্তমানে কয়েকটি দৃষ্টিকটু বিষয় বাদ দিলে শাকিব খান পরিস্থিতি সামলে নিয়েছেন। ঘটনা এখন তার পক্ষেই ছিলো। মোটামোটি নিষিদ্ধ হওয়ার আগে পর্যন্ত। সম্প্রতি তিনি নিষিদ্ধ হয়েছেন। কেন হয়েছেন সেটা পরে বলছি।
শাকিব খানের অভিনয় দেখলে সত্যি হাসি পেতো। এতসুন্দর হ্যান্ডসাম এতো ইতিবাচক তার লুক। সে কিনা অভিনয় করে পুতুলের মতো। এর মধ্যে শাকিব খানের একটি হাস্যকর কান্নার দৃশ্যের ইমেজ ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এবং একটি বহুল প্রচলিত সংলাপ রয়েছে ‘‘তুই বোধহয় জানিসনা সুন্দরবনে শুধু বাঘ নয় সিংহও থাকে’’ এটাও ভাইরাল হয়েছে। মানুষ হেঁসে গড়াগড়ি খেয়েছে। ভাগ্য ভালো টাইম ম্যাগাজিনের লোকেরা হয়তো সুন্দরবনের বাঘ সিংহের কথা জানে না, জানলেও তারা হয়তো বাংলা ডায়লগ বুঝতে পারে না। আর পারলেও তারাতো আর বাংলা ছবি দেখেনা। নইলে এটা আন্তজাতিক মিডিয়াতে একটা আলোচিত বিষয় হতো। কারণ সুন্দরবনে সিংহের সন্ধান মিলেছে।
একটা ক্লাস ওয়ানের বাচ্চাও জানে সুন্দরবনে বাঘ থাকে না সিংহ থাকে। এই সংলাপ কোনো এক পরিচালক শাকিব খানকে দিয়ে ছবিতে বলালো। শাকিব খানও বীরদর্পে বলে গেল। সাথে সহশিল্পী ছিলেন মিশা সওদাগর। বুঝুন এদেশের পরিচালক কত অশিক্ষিত! যেদেশে এরকম অশিক্ষিত পরিচালক থাকে সেদেশে সুপার স্টার দৈনিক নিজেকে ১১৩ বার সুপারষ্টার বলবেনা তো কি বলবে? হাঁ শাকিব খান সমালোচিত হয়েছেন। নিজেকে বার বার সুপারস্টার দাবী করার কারণে।
শাকিবখানকে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ১৩টি সংগঠন নিষিদ্ধ করেছেন। পরিচালকদের উদ্দেশ্যে মানহানিকর বক্তব্য দেয়ার জন্য। শাকিব খানকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কোনো চলচ্চিত্রের শুটিং কিংবা ডাবিং না করার ঘোষণা দেয়া হলো। শাকিব খান বলেছেন এফডিসিতে আগের মতো কাজ নেই। অনেকে এখানে আসেন আড্ডা দিতে। আর বাংলাদেশের লোকেরা ভালো কাজ জানে না। শাকিব খান দাবি করেছেন। এটা বদিউল আলম খোকনের ষড়যন্ত্র। খোকনকে সিডিউল না দেয়ায় তিনি এটা করেছেন। হাস্যকর যুক্তি তিনি একা চলচ্চিত্রের ১৩টি সংগঠনকে ম্যানেজ করতে পারলেতো খানের সিডিউলও ম্যানেজ করতে পারতেন। হয়তো তার ভূমিকা ছিলো। কিন্তু এই লোকগুলোর দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বহিপ্রকাশও হতে পারে। তাদের কথা শুনে তাই মনে হয়।
যে দেশের পরিচালক এমন ডায়লগ লিখতে পারে তারা যে কাজ জানে না। তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। তবে সবাইকে ঢালাওভাবে বলাও ঠিক নয়। এদেশে অনেক ভালো পরিচালক ছিলেন। কিছু এখনো আছেন। এবং তরুনদের মধ্যে আরো অনেক তৈরী হচ্ছে। একটা কথা বলতে হয় শাকিব খানের নিজেরও অনেক উন্নতি হয়েছে এটা একটা ভালো দিক। তার অভিনয় এবং কান্না দুটোই উন্নতি হয়েছে। আর আনকোরা একশন দৃশ্যের জন্য তিনি আসলে কতটা দায়ী সেটাতো বুঝতে হবে। শিকারী ছবিতে শাকিব যে চেষ্টা করেছেন সেটা অন্য ছবিতে করেন না। নাকি অন্য পরিচালকরা তাকে ব্যবহার করতে পারেন না। আমারতো মনে তার কিছু কমতি থাকতে পারে। কিন্তু যোগ্য পরিচালক পেলে সেটা অনেকাংশে পুষিয়ে এতদিনে হয়তো আরো উন্নত কিছু আশা করা যেত। তবে স্বয়ং পরিচালক সমিতির সভাপতি বলেন- ‘‘এফআই মানিক, সোহানুর রহমান সোহানের মতো পরিচালককে সে বাড়ির নিচে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাড় করিয়ে রেখেছে। বাসার উপরে পর্যন্ত ওঠায়নি। এমনভাবে সে অপমান করেছে এই নামীদামী পরিচালকদের।’’ শাকিবের অহংকারী আর বেয়াদবী আচরণ এখন মুখে মুখে। এটা কাম্য ছিলো না।
আবার ইন্ডাস্ট্রিতে এই ধারণা প্রতিষ্ঠিত যে, শাকিব মানে হিট, প্রযোজকের পকেট ভারী আর কলাকুশরীদের পেট চলা। ফলে শাকিব খানের ধারণা তাকে ছাড়া ইন্ডাস্ট্রি অচল। ওইরকম অবস্থানে আমি থাকলে আমি কতটা নিয়ন্ত্রিত থাকতাম। জানি না কারণ আমিতো একজন বাঙালী। আমাদের জাতীয় চরিত্রতো এরকম। আমরা স্বঘোষিত সেরাদেশপ্রেমিক। আজ সমাজে যে নিজেকে যা বলছে সেটা মানুষ কয়জনকে বলছে আর নিজে নিজে কয়জন দাবী করছে। সেটা হিসেব করলে শাকিব খানের কোনো আচরনই অস্বাভাবিক মনে হবেনা। আরেকটা কথা হলো মানুষকে বড়ো হলে বিনয়ী হতে হয় উদ্ধত নয়। তাই একটু খারাপ লাগবেই।
শাকিব খান শত ঘটনার পর তার স্ত্রীকে মেনে নিয়েছে। এটা যেমন ইতিবাচক দিক। আরেকটা দিক হলো যারা তাকে গালাগাল দিয়েছেন তাদেরকে কোনো কটুবাক্য তিনি বলেন নি। তার এই আচরণটা ছিলো একজন বিচক্ষণ মানুষের। এই প্রশংসা তিনিই পেতে পারেন। অবশ্য একজন সেলিব্রেটি এটাই করতেন তিনি যে হোন না কেন? আরেকটা কথা হলো যতই ফিনিশিং দেয়া হোক এটা বুঝতেই হবে শাকিব অপু দুজনের মধ্যে বড়ো ধরনের কোনো অমিল, অমত বা দূরত্ব না থাকলে মিডিয়ার সামেন এসে স্বামীর নামে অভিযোগ কোনো মেয়ে করতে পারে না। ডালমে কুচ কালা হ্যায়। এখানে বিশাল প্রশ্নটি রয়ে গেলো। উত্তর হয়তো সময়মত জানা যাবে।
আরেকটা মত হলো শাকিব খানের কারণেই অন্যরা উঠতে পারছেনা। এই মত সম্ভবত ঠিক নয় যোগ্যতা থাকলে কাউকে ঠেকিয়ে রাখা যায়না। একথাও মানবো যোগ্যদের যোগ্যতা প্রমানের জন্য ভালো কাজও দরকার। শিকারী ছবিতে যে কাজ শাকিব দেখিয়েছেন। সেটাতেো বাংলাদেশের অন্য পরিচালকের ছবিতে দেখাতে পারতেন। কেন পারেন নি। এরকম ঘটনা আগেও হয়েছে। সত্যজিত এর ছবিতে যে কাজ ববিতা করেছেন সে কাজ অন্য কারো ছবিতে করতে পারতেন কি? সত্যজিতের উদাহরনটা সঠিক নাও হতে পারে। কিন্তু একজন শিক্ষিত প্রশিক্ষিত সৃজণশীল পরিচালক আর একজন গতানুগতিক নকলবাজ পরিচালকের কাজ এক হবে না। এটাতো মানতে হবে।
মজার ব্যাপার হলো যারা শাকিব খান আর অনন্ত জলিলের সমালোচনা করেন। তাদের কয়জন হলে গিয়ে ছবি দেখেন। যেসব দর্শক হলে গিয়ে ছবি দেখে তারাতো শাকিব খানকে সুপারষ্টার মনে করে। বা তাদের জন্য সত্যিই খান সুপার স্টার। অনেকে মনে করেন নকল সুপারষ্টার কারণ তার অনেককিছুই শাহরুখ খানের নকল। যেমন শাহরুখ খানের বাড়ির নাম মান্নত আর শাকিব খানের বাড়ির নাম জান্নাত।
পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, প্রথমে মিষ্টি কথা বলে ছবির কাজ হাতে নেয়। আর দুদিন শুটিং করেই গড়িমসি শুরু করে দেয়। এখন সে কোন ধরনের চুক্তিতেও সই করে না। সরকারের কর ফাঁকি দেয়। এভাবে পুরাই দুই নাম্বারি কাজ করে সে।কাজের মাঝে চাপ দিয়ে আরো বেশি টাকা আদায় করে। নইলে শিডিউল ঘাপলা করে দেয়। ছবির কাজ ৮০ শতাংশ শেষ কেরে ২০ ভাগ ঝুলিয়ে রাখে।
আসল কথায় আসি। সেটা হলো শাকিব খান নিজেকে সুপারস্টার প্রমানের জন্য কলকাতার বা যৌথ ছবিতে অভিনয় করেছেন। অবশ্যই অনেক কিছু দেখেছেন শিখেছেন। সেখানে কাজ বেশী হয়। ভারতের অন্যান্য জায়গা থেকে কাজ জানা লোকেরা এসে সেখানে কাজ করে। তারা কাজ শিখে আসে। ভারত ফিল্মের দুনিয়ায় এগিয়ে আছে এটা মেনে নিতেই হবে। আর আমাদের দেশে কাজযে কম হচ্ছে এটাও ঠিক। কিন্তু শাকিব খান কথাগুলো বলেছেন কলকাতায় তার কাজ করার যৌক্তিকতা প্রমাণ করার জন্য। কারণ তিনি বিদেশী শিল্পী আনার বিপক্ষে ছিলেন এখন নিজেই সে ধারা থেকে সরে এসেছেন। আবার শাকিব খানকে যদি আপনি একজন সুপারস্টার হিসেবে অথবা শিল্পী সমিতির সভাপতি ছিলেন সে হিসেবে তার কথার মূল্য আছে। সে মূল্য বিবেচনা করলে তার হয়তো এভাবে বলা ঠিক হয়নি। কিন্তু সেজন্য তাকে নিষিদ্ধ করা কতটা যুক্তিসঙ্গত এটা ভেবে দেখার অবকাশ আছে। তাও আবার সবাই মিলে। তার কথাটাই বড়ো হয়ে গেল। ইন্ডিাস্ট্রির স্বার্থ বড়ো হলো না। তাদের বক্তব্য তার কথাতেই এই শিল্পর ক্ষতি হয়েছে। তাহলে আমাদের স্টার সুপার ষ্টার, আমাদের সংশ্লিষ্ট সংগঠন কেউ যদি ইন্ডাস্ট্রির কথা ভেবে কথা না বলেন বা সিদ্ধান্ত না নেন। তাহলে কেন মিছে মিছি অন্যলোকের দোষ দেয়া আর ষড়যান্ত্রের গন্ধ খুজে বেড়ানো। আমরা প্রত্যেকেই ফ্রি ম্যাচিউরড। আমাদের আচরণ ম্যাচিউরড না হলে ইন্ডাস্ট্রি ম্যাচিউর হবে এ কথা কিভাবে আশা করা যায়। এরকম ছোট খাটো ভুল বিভিন্ন দেশের অভিনেতারা করতে পারে। মাঝে মধ্যে ভুল ভাল করতে পারে। কিন্তু কথায় কথায় নিষিদ্ধ করে দেয়া এই মানসিকতা আমরা কোথায় পেলাম। নকল করার সময় বিদেশী গান গল্প ফ্রেম ঠিকইতো করি। বিদেশীদের ভালো আচরণগুলো নকল করতে পারি না?
যারা শাকিব খানকে তার হেংলা কথাবার্তার জন্য বোকা ভাবেন আসলে তিনি ততটা নন মোটেই। তিনি যে অসম্মানসূচক আচরণ করেন এবং সস্তা কথাবার্তা বলেন এগুলো গোটা ইন্ডাস্ট্রির চিত্র। অবশ্য এটা না বলে তা আমাদের গোটা দেশের চিত্র বলাই ভালো। গোটা শিল্প কিংবা গোটা সমাজ উপরে উঠে গেলে বা ভালো অবস্থায় থাকলে এটা তিনি বলতে পারতেন না বা তার মনে এটা আসতো না। এবং সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো যেসব দর্শক গ্রামে বা শহরে হলে গিয়ে শাকিব খান বা তাদের প্রিয় নায়কের ছবি দেখেন। তারা কিন্তু শাকিবকে সমর্থন করেন। তারা শাকিবের সর্বশেষ আচরণ অপুকে মেনে নেয়া ইত্যাদি বিষয় ইতিবাচক ভাবে দেখেন। তাদের মত শাকিবের মতের সাথে মিল আছে। তাদের কথা বিয়ে হয়েছে সন্তান হয়েছে এবার তুমি সতী স্ত্রী ঘরে বসে থাকুক। আমাদের নায়ক সেতো নায়ক সেতো অনেক নায়িকার সাথে অভিনয় করবেই। এটা ভালো কি মন্দ সে আলোচনায় যাচ্ছি না। এটাই বাস্তবতা।
শাকিবখান বোকা নয় এই জন্য বললাম। অপু বিশ্বাসের সাথে ভুল বোঝাবোঝির পর। তিনি যে স্ত্রী সন্তানকে মেনে নিয়েছেন সেটা বোঝানোর জন্য সাংবাদিককে সাথে নিয়ে পহেলা বৈশাখে বউ বাচ্চাকে দেখতে গিয়েছেন। ভাই আপনি আপনার স্ত্রী সন্তানকে দেখতে যাবেন এটা সাংবাদিক ডেকে কাগজে দিয়ে পাবলিককে জানাতে হবে কেন? প্রিয় পাঠক আপনি বুঝে গেছেন যে এটা একটা খেলা। কিন্তু শাকিব ফ্যানের কাছে এটা অতি ইতিবাচক। তারা খুশি হয়েছে। আর এজন্য শাকিব খান তাদের জন্য সত্যি সুপারষ্টার। আর যারা জানেন সুন্দরবনে সিংহ থাকেনা। হয়তো তাদের জন্য শুধু স্টার।
যারা ফেসবুকে জুতাপেটা করেছেন সুপারস্টারকে তারা কিন্তু হলে গিয়ে খুব কমই শাকিব খানের ছবি দেখেন। হলের গরম আর ছারপোকার সিটে বসে ছবি দেখেন যেসব নিন্ম আয়ের স্বল্পশিক্ষিত মানুষেরা তারা কিন্তু অতোকিছু লিখেনা। তারা বেশীরভাগই স্ক্রল করে এবং লাইক দেয়। তারা যেসব ছবি দেখে সেগুলো তৈরী হয়। যাদের ছবি হিট হয় প্রযোজক তাদেরকেই টাকা দেন। মৃত্তিকামায়া আর হিট হলে সেরকম ছবি আরো তৈরী হতো শিক্ষিত পরিচালক আর রাজ্জাকের মতো শিক্ষিত ভদ্র নম্র আদর্শবান সুপারস্টার পেতো বাংলাদেশ। মনপুরা আর আয়নাবাজির মতো ছবি কখনোই শত শত হবেনা বছরে আর হলেও তখনো প্রতিটি ছবিই সুপারহিট হবে না। তবে অবশ্যই পরিস্থিতি বদলাবে এমনটা আশা করাই যায়।
সূতরাং কাউকে দোষারোপ করা এবং সমালোচনা করা মোটেই সুখকর নয়। আজকের সেই ‘‘সুন্দরবনের সিংহ’’ মার্কা পরিচালক আর স্বঘোষিত সুপারষ্টার তৈরী হয়েছে দর্শকরুচি ও টোটাল পরিস্থিতির উপর। এই সময়ের যা কিছু অর্জন তা এই অনেক কিছু না জানা কলাকুশলী আর দর্শকদের আর যা কিছ ব্যর্থতা তা কিন্তু সকলের। সফলতা তাদের যারা কাজ করেছেন আর বর্থতা তাদের যারা করেছেন এবং যারা করেননি। সবাই ভালো ছবি দেখতে হলে গেলে হয়তো এমনটা হতো না। একনায়ক নিয়ন্ত্রিত বাজারের কারণও কিন্তু একটাই। বারোশ যখন হল ছিলো। তখন একডজন জনপ্রিয় তারকা থাকলে হল যখন ৩০০ হয়ে যাবে তখন তারকাতো তিনজন হয়ে যাবে। অংকতো সেরকমই। বছরে যে কয়টা ভালো ছবি হয়। বছর শেষে যদি সে ছবিগুলো হিট তালিকায় থাকে তাহলে নিশ্চয় পরের বছর ছবির নাম তালিকা মান সব বদলে যাবে।
তাই যারা হলে গিয়ে ছবি না দেখে ইউটিউব থেকে বিশেষজ্ঞ মতামত দেন। তাদের জন্য এটা বেমানান। হয়তো তাদের বিশ্লষেন সত্যি, তাদের জাজমেন্ট ভালো কিন্তু তারাতো এই জগতের কেউ নন যারা সেই ছবি না দেখে জাজ করছেন। একটা যুক্তি হয়তো আছে কারণ এরমধ্যে কিছু লোক আছেন যারা ভালো ছবি পেলে হলে যাবেন। তাদের সংখ্যা মনে হয় খুব বেশী নয়। কারণ ভালো ছবিও হল থেকে তিনদিনে নেমে যাওয়ার রেকড আছে।
সূতরাং জরুরী নয়যে তাকে মতামত দিতে হবে। দেশে অনেক মানুষ আছে তারা ধর্ম কর্ম অথবা নিজের কাজ নিয়ে এতটাই ব্যস্ত যে, এসব নিয়ে মত দেয়ার কসরত নেই। আমি সে মানুষের সমালোচনাকে গুরুত্ব দিই যিনি গঠনমূলক সমালোচনা করেন এবং পাশাপাশি পরামর্শও দেন।
সমালোচনারও প্রয়োজন আছে। নইলে মূল্যায়ন হবেনা ভালো কাজ। আরেকটা কথা বলি- বস্তাপঁচা কাহিনী, হাস্যকর অভিনয় আর ভিডিও গেমের মতো কমপিউটার এনিমেশন মানুষকে দেখিয়ে ঠকাবেন না। তাদের পয়সাটা মাটি করে দেবেন না। তারা না হয় বুঝতে পারছেনা। যারা বানাচ্ছেন তারাতো বুঝতে পারছেন আপনারা তাদেরকে ঠকাচ্ছেন। দয়া করে এটা বন্ধ করুন। তাহলে চলচ্চিত্রের উন্নয়ন হবে। আর যদি আপনার বুঝতে না পারেন আপনারা কি করছেন। তাহলে আমার আর কিছু বলার নেই!
সর্বশেষ খবর হলো, শাকিব খান ক্ষমা চেয়েছেন। এ ব্যাপারে মধ্যস্থতা করেছেন চিত্রনায়ক আলমগীর। পুনশ্চ: বুবলিকে এই লেখার সাথে জড়ানো প্রাসঙ্গিক মনে হয়নি। তাই তার বিষয়ে কিছু লিখা গেলনা।
-জাহাঙ্গীর আলম শোভন
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০১৭ রাত ১১:৫২