একটি সোস্যাল ট্যুরের গল্প
গত ১৮ মে ২১০৭ ভলানটিয়ার বাংলাদেশ এর ব্যাপারে ১৭ জন তরুন তরুনীর একটি দল গিয়ে পৌছায় প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। এই সময় শিপ চলেনা যেতে হয় নৌকা বা ট্রলারে। সব দোকানপাট এমনটি রিসোর্ট বন্ধ থাকে। রয়েছে যেকোনো মুহুর্তে সমুদ্র উত্তাল হওয়ার ভয়। সে ভয়কে উপেক্ষা করে মানবতার প্রেমিক ৫ নারী ও ১২ জন পুরুষ বৃহস্প্রতিবার দুপুরে প্রচন্ড গরম ও আর ঘনঘনে রোদের মধ্যে পা রাখেন নিরব দ্বীপে।
১৯ ও ২০ মে ২ দিনে ১৭ জন নারী পুরুষ দ্বীপের পূর্ব এবং পশ্চিম সৈকত পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালান। যে এলাকায় পর্যটকেরা বেশী চলাফেরা করেন এমন ২টি এলাকা তারা পরিষ্কার ও ময়লা অপসারণ করেন। ভোর ৪টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত চলে তাদের পরিচ্ছন্নতা অভিযান। প্রখর তাপের কারণে এর বেশী করা সম্ভব হয়না। প্রতিদিন বিকেলে বাজারে বসে তারা দ্বীপবাসীকে রক্তের গ্রুপ নির্নয় করতে সাহায্য করে। তিন দিনে দ্বীপের ৫শ লোক জানতে পারে তাদের রক্তেও গ্রুপ কি। মজার ব্যাপার হলো কয়েকশ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম সেন্টমার্টিন দ্বীপে কেউ রক্তের গ্রুপ ক্যাম্পিং করে। সর্বস্তরের জনতা প্রচন্ড গরমের মধ্যে উৎসব মুখর পরিবেশে এতে অংশ নেয়। এবং অসহ্য তাপমাত্রার মধ্যে ভলেনটিয়ার বাংলাদেশের কর্মীরা তাদেরকে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দেয়।
আমি (জাহাঙ্গীর আলম শোভন)ঐতিহাসিক এই কর্মসূচীতে নেতৃত্বে দিতে পেরে গর্ববোধ করছি। আমার সাথে আরো যারা ছিলেন-
১। জাহাঙ্গীর আলম শোভন
২। নজরুল ইসলাম
৩। শিপন কুমার
৪। আনিসুর রহমান সোহেল
৫। শাহাদাত হোসেন
৬। সুমন হোসন মুনা
৭। আবদুল্লাহ আল মামুন
৮। ইয়ামিন খান
৯। রকিবুল ইসলাম
১০। যুথী আক্তার
১১। ফাতেমা আক্তার সাথী
১৩। মাহবুবা রহমান মুক্তা
১৪। আফসার শাওন
১৫। সামির খান
১৬। তাসনিম মুস্তারিন
১৭। সাদিয়া তানিয়া
এছাড়া পর্যটকদের স্থানীয়ভাবে সহযোগিতা করেছেন স্তানীয় মেম্বার জনাব হাবিব খান। না পুরো দ্বীপ পরিষ্কার করা যায়নি। শুধুমাত্র ২ দিনে ২ কিলোমিটার জায়গা পরিষ্কার করা গেছে। আমাদের মত অল্প কিছু মানুষের পক্ষে নিজের খরচে দ্বীপে গিয়ে পুরো দ্বীপ পরিষ্কার করা সম্ভব ছিলো না। তার উপর রয়েছে প্লাস্টিক বর্জ দ্বীপ থেকে অপসারণ এর কাজ। আমরা চেয়েছি মুলত সচেতনতা তৈরী করতে।
আর একটা জিনিস আমাদের ভালো লেগেছে। দ্বীপের বেশীরভাগ লোকই তাদের রক্তের গ্রুপ জানে না। রক্ত নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথাও নেই। অথচ দেখলাম যে সেখান থেকে অনেকেই ঢাকায় চিকিৎসা নিতে আসে এবং তখন আমরা তাদেরকে রক্ত সংগ্রহ করে দিই। কিন্তু তাদের সাথে থাকা আত্মীয় স্বজন বা রোগীর ছেলে তারাও বিষয়টা নিয়ে সচেতন নয়। তারা তাদের রক্তের গ্রুপও জানে না।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০১৭ রাত ১০:৫৮