"বীর বাঙালি, জবাব চাই"
- - - ফখরুল আমান ফয়সাল
তিস্তার পানি নিয়ে কাড়াকাড়ি চলছে, চলবে। সরকার/কূটনীতিবীদদের কাজ সেটা, তাদেরকে তাদের কাজ করতে দেই, শুধু মনে করিয়ে দিলে হবে যে আমরা এ ইস্যুতে সজাগ, সচেতন। এবার আসি আমাদের দায়িত্বের কথায় -
আমাদের যে নদী আছে, সেগুলার কি অবস্থা করে রেখেছি?
পঞ্চাশ/ষাটোর্ধ্ব কোনো দাদা-নানাকে জিজ্ঞেস করলে জানতে পারবেন একটি নদীরও ১০ ভাগের ১ ভাগ বেঁচে নেই। কারন আমাদের আত্মীয়-স্বজনরা দু'পাড় দখল করতে করতে নদীর ভেতরে পর্যন্ত চলে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে গালাগালিতো খুব করি তিস্তা চুক্তি করিয়ে আনতে পারছে না বলে, আর আমরা নিজেরাই নদী দখলের চুক্তি করে রেখেছি!
যেখানে অথই পানি ছিল, যে নদী ছিল শত প্রজাতীর মাছের আবাসস্থল সে নদীর বুকে ট্রাক চলে, সেখানে দখলদাররা বর্গা দেয়, চাষাবাদ হয়। এলাকার উন্নতির নামে, ব্যবসায়িক স্বার্থের জন্য স্থানীয় সরকার/প্রসাসনকে অনুরোধ করে/চাপে ফেলে ড্রেজিং করে নদীমুখ অবৈজ্ঞানিকভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে। ফলস্বরূপ নদী হয়ে গিয়েছে সরু খাল, নাম আছে শুধু ম্যাপে আর আছে ইতিহাসে। মজার ব্যাপার হচ্ছে কিছু কিছু নদীর উপর ব্রীজ আছে, কিন্তু সেগুলো ব্যবহার করার দরকার হয় না। কারন ব্রীজের নীচে পানি নাই, আছে বালু, একদিন সে বালুতে হবে মাছ চাষ।
বাকি নদীগুলোতে যে পরিমান পানি আছে তার প্রতিই বা কতটুকু যত্নবান আমরা? প্রতিটি জেলার/গ্রামের ময়লা-আবর্জনা কোথায় ফেলি? এইতো চোখের সামনে রয়েছে বুড়িগঙ্গা, পঁচে পঁচে মরছে, তাই না? নদীপথে মুন্সীগঞ্জ পাড় হবেন, কিন্তু ঢাকার সুঘ্রাণ আপনার পিছু ছাড়বে না। বুড়িগঙ্গার নাম হওয়া উচিৎ দুধগঙ্গা, কারন পানিতে যে ধবধবে সাদা ফেনা হয়, তা দুধের চেয়ে কম কিসে?
তাহলে কোন মুখে নদীর জন্য মায়াকান্না করি আমরা??
আমাদের নদী কে রক্ষা করবে? এক তিস্তার জন্য ভারতের দিকে হাঁ করে আছি, মমতা ব্যানার্জীকে দোষারোপ করছি, আরে উনিতো নিজ দেশের কথা ভাবছেন, আমরা কবে নিজেরটা ভাবতে শুরু করবো?
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:১৯