প্রসঙ্গ- একাধিক (চার) বিয়ের বৈধতার বিরুদ্ধে ব্লগার এ আর 15 এর উদ্দেশ্যমূলক পোষ্টের জবাব দাখিল ও আলেম ওলামাদের ব্যঙ্গ করা এবং তার দৃষ্টি আকর্ষণ
আলেম-ওলামাদেরকে কাঠমোল্লা বা অন্যকোন নেতিবাচক বিশেষণে উপস্থাপন করা শরিয়তের সাথে ধৃষ্টতা ও চরম বেয়াদবির শামিল। হাদিসের কিতাব ‘মুসনাদে আহমদ’ এর ইলম অধ্যায়- ইলম ও উলামার মর্যাদা ও ফজিলত অনুচ্ছেদের ২ নং হাদিস – আনাস ইবন মালিক রা. হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, “রাসূল স. বলেছেন-জমিনের আলিমগণের উদাহরণ হচ্ছে আকাশে নক্ষত্ররাজির ন্যায়। এদের সাহায্যে জল ও স্থলের অন্ধকারের পথের দিশা পাওয়া যায়। আর যদি তারকারাজি নির্মিলিত হয়ে যায়, তবে পথ নির্দেশকদের পথভ্রষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।”
আমরা যারা ব্লগে নিজেদের পান্ডিত্য জাহির করি তাদের সকলকে প্রথমেই স্বীকার করতে হবে যে, আমরা কেউ মাদরাসা তথা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হতে জ্ঞানপ্রাপ্ত আলেম নই। আলেম না হয়ে ইসলামের কোন স্পর্শকাতর বিষয় নিয়েও কথা বলতে কিংবা লেখালেখি করতে আমাদের সংশয় ঘটে না-এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ যখন আমরা ধর্মীয় (পরিবর্তনশীল নয়) হুকুম-আহকামের বিষয়ে নিজের মতামতকে নিজের মতো করে ব্লগে তুলে ধরি। একথা সর্বজনবিধিত যে, ইসলামের কোন প্রতিষ্ঠিত হুকুম-আহকামই পরিবর্তন করা যায় না। কিন্তু একশ্রেনীর লোকজন যখন ইচ্ছাকৃতভাবে সঠিক ব্যাখ্যার বিরুদ্ধে গিয়ে বিপরীত ব্যাখ্যার অবতারণা করেন সেটা তখন চরম ধৃষ্ঠতার মধ্যেই পড়ে।
ইসলামে চার বিয়ে জায়েজ নাকি নাজায়েজ শিরোনামে ১৭ আগষ্ট ১২.৩৮ ইং তারিখে এমনই এক ব্লগ লিখেছেন প্রিয় ব্লগার জনাব এ আর ১৫। আমি জানিনা সেটা তিনি কোন উদ্দেশ্যে লিখেছেন। কলমে যা আসে তা লিখলেই সেটা শরিয়াতের মাসয়ালা হয়ে যায় না, মাসয়ালা সেটাই যেটা কিতাবে আছে এবং সর্বজন কর্র্তক গৃহীত। তিনি একাধিক (চার) বিয়ের বৈধতা রহিত হয়েছে এবং সূরা নিসার 3নং আয়াত দ্বারা ইয়াতিমদের মধ্যে হতে ০৪ জনকে বিয়ের করার কথা বলা হয়েছে মর্মে এবং শধুমাত্র ০১ টি বিয়েই বৈধ মর্মে তার লেখায় দাবি করেছেন কিন্তু কোন কিতাবে তা স্পষ্টাকারে লেখা আছে তার দলিল পেশ করেননি। দলিল পেশ না করে তিনি সেটা ভাল করেননি মর্মেও আমার কাছে প্রতিয়মান হচ্ছে।
ওদিকে মূল প্রেক্ষাপট বা সঠিক মর্ম অনুধাবন না করে অনেকেই লেখকের পক্ষে মন্তব্য করেছেন। মূল প্রোক্ষাপট বা সঠিক তথ্য না জেনে মিথ্যাকে সমর্থন করাও মিথ্যা বলার শামিল। “তাফসির তাওযিহুল কুরআন, কুরআনুল কারিম, তাফসির আহসানুল বয়ান, তাফসির ইবনে কাসির 2য় খন্ড, তাফসির তাইসিরুল কুরআন, বাংলা কুরান (দারুস সালাম) নামক কিতাবসমূহে সূরা নিসার 3নং আয়াতের যে অনুবাদ ও বিস্তারিত ব্যাখ্যা (পোষ্ট বড় হয়ে যাবে সেই আশঙ্কায় ব্যাখ্যা সমূহ লিখলাম না, আগ্রহীরা কিতাবসমূহ দেখে নিবেন, অবশ্য উক্ত পোষ্টের লেখক চ্যালেঞ্জ করলে দলিল প্রমাণ সহ হাজির হবো ইনশাআল্লাহ) করা হয়েছে তাতে শর্তসাপেক্ষে একজন পুরুষ মুসলমানকে চারটি পর্যন্ত বিবাহ করার যে অনুমোদন দেয়া হয়েছে তা অদ্যাবধি বলবৎ আছে এবং সূরা নিসায় চার বিয়ে ইয়াতিম মেয়েদেরকে নয় বরং ইয়াতিম ব্যতিত অন্য সাধারণ মেয়েদেরকে করার জন্য বলা হয়েছে মর্মে প্রতিয়মান হয়। আশা করি উক্ত পোষ্টের লেখক এখানে উল্লেখিত কিতাবসমূহ দেখে নিবেন এবং তার ভুল নিরসনে সচেষ্ট হয়ে ভবিষ্যতে ব্লগে শুদ্ধতার চর্চা অব্যাহত রাখবেন। আর সম্মানী ব্যক্তিবর্গকে অর্থাৎ আলেম-ওলামাদের সম্ভাষণের ব্যাপারে এবং আচরণের দিক থেকে যথার্থ শালীনতা বজায় রাখবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:২৭