প্রচলিত হাদীস তাফসীর ফিকহ কেন্দ্রিক ইসলাম মোতাবেক ফিকহী বিধান হলো স্ত্রীকে রাগের মাথায়ও যদি তালাক তালাক তালাক (অর্থ্যাৎ ৩ তালাক বলে) তাহলে তার সাথে তালাক হয়ে যাবে। রাগ দুষ্টামি, মজা, সিরিয়াস হয়ে, এরপরে ফোনে, চিঠিতে এমনকি এমনকি স্ত্রীর অনুপস্থিতে তালাক বললেও সেই তালাক ইফেক্টিভ হয়ে যায়।
অর্থাৎ কোন লোক যদি ধরেন বৌ এর সাথে ঝগড়া করলো আজকে রান্নায় তরকারিতে লবণ কম হইছে ক্যান, এটা নিয়ে ঝগড়াঝাঁটির এক পর্যায়ে স্ত্রীকে বলে বসলো তোরে আমি তালাক, তালাক, তালাক....৩ তালাক দিলাম ! তাইলে বউ তালাক হয়ে যাবে ! কিংবা বউয়ের অনুপস্থিতিতেও তালাক ঘোষণা করলেও সেটা তালাক হিসেবে গণ্য হবে।
কি মচৎকার সিস্টেম, তাই না !
এবারে এই কাজের সাথে তৎকালীন আরবীয় জাহেলিয়াতদের মিল খুঁজি চলেন
"যে নারী তার স্বামীর বিষয়ে আপনার সাথে বাদানুবাদ করছে এবং অভিযোগ পেশ করছে আল্লাহর দরবারে, আল্লাহ তার কথা শুনেছেন। আল্লাহ আপনাদের উভয়ের কথাবার্তা শুনেন। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু শুনেন, সবকিছু দেখেন। তোমাদের মধ্যে যারা তাদের স্ত্রীগণকে মাতা বলে ফেলে, তাদের স্ত্রীগণ তাদের মাতা নয়। তাদের মাতা কেবল তারাই, যারা তাদেরকে জন্মদান করেছে। তারা তো অসমীচীন ও ভিত্তিহীন কথাই বলে। নিশ্চয় আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল। যারা তাদের স্ত্রীগণকে মাতা বলে ফেলে, অতঃপর নিজেদের উক্তি প্রত্যাহার করে, তাদের কাফফারা এই একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একটি দাসকে মুক্তি দিবে। এটা তোমাদের জন্যে উপদেশ হবে। আল্লাহ খবর রাখেন তোমরা যা কর। যার এ সামর্থ্য নেই, সে একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একাদিক্রমে দুই মাস রোযা রাখবে। যে এতেও অক্ষম হয় সে ষাট জন মিসকীনকে আহার করাবে। এটা এজন্যে, যাতে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত শাস্তি। আর কাফেরদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণা দায়ক আযাব। [সুরা মুজাদালাহ - ৫৮:১-৪]"
তার মানে আরবীয় জাহেল সমাজ বউ ভাগানোর জন্য একটা প্রথা ব্যবহার করতো, বউরে মা ডাকতো ফলে বউ তালাক হয়ে গেছে ধরতো !! বয়স্ক ও অপছন্দনের বউকে তাড়ানোর জন্য কি মারাত্মক কূট বুদ্ধি ছিলো তাদের !
এবারে এই সিস্টেমের সাথে ফিকহী ও লাহোয়াল হাদীসের ইসলামের কম্পেয়ার করেন !
এখানেও রাগের মাথায়, দুষ্টামি করে, মজা করে, হাসতে হাসতে, ফোনে, চিঠিতে, শুয়ে বসে, দৌড়ের উপরে থেকে এমনকি স্ত্রীর অনুপস্থিতেও তালাক ৩ বার বললেই সব শেষ !
আসুন লাহোয়াল ফতোয়ার বিধান দেখে নিই
তালাকের ফিকাহ কেন্দ্রিক নিয়ম দেখে নিন
১) কেউ যদি স্বাভাবিক ভাবে শুয়ে শুয়ে তার স্ত্রীর ভাল গুণের কথা চিন্তা করে এবং কোন কারণ ছাড়াই হঠাৎ তালাক শব্দটি উচ্চারণ করে (তার স্ত্রী তার পাশেই ছিল)। তাহলে কি তালাক পতিত হবে?
২)তালাক দেওয়ার সময় কি বলতে হবে যে,আমি তোমাকে তালাক দিলাম নাকি স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে শুধু "তালাক" উচ্চারণ করলেই তালাক হয়ে যাবে?
৩)তালাক নিয়ে অধ্যেয়ন করার সময়, তার স্ত্রীর কথা স্মরণ করে তালাক শব্দটি উচ্চারণ করে, তাহলে কি তালাক হবে?
৪) স্ত্রীর সামনে শুধু তালাক শব্দটি মজার ছলে উচ্চারণ করলেও কি তালাক হবে?
৫) কেউ,যদি বলে সে জীবনে যত মেয়ে বিয়ে করবে সব তালাক তার ক্ষেত্রে বিধান কি হবে?
৬) স্ত্রীর অনুপস্থিতি একা রুমে নিজে নিজে স্ত্রীকে মুখে উচ্চারণ করে তালাক দিলে তালাক হবে? (স্ত্রী বাসায় ছিল না।)
(১) তালাক কাকে দিচ্ছে, সেই জিনিষটা উল্লেখ থাকতে হবে। চায় বাস্তবে উল্লেখ থাকুক বা মৌনভাবে উল্লেখ থাকুক। যাকে তালাক দেয়া হবে, তার দিকে তালাককে সম্বন্ধযুক্ত করতে হবে। সুতরাং
কেউ যদি স্বাভাবিক ভাবে শুয়ে শুয়ে তার স্ত্রীর ভাল গুণের কথা চিন্তা করে এবং কোন কারণ ছাড়াই হঠাৎ তালাক শব্দটি উচ্চারণ করে, তাহলে এদ্ধারা তার স্ত্রীর উপর কোনো প্রকার তালাক পতিত হবে না।
(২) স্ত্রীর দিকে তালাককে সম্বন্ধযুক্ত করতে হবে। চায় সরাসরি স্ত্রীর দিকে সম্বন্ধযুক্ত করা হোক বা পরিবেশ পরিস্থিতি একথা বুঝাক যে, তালাক স্ত্রীকেই দেয়া হচ্ছে, যেমন ঝগড়ার এক পর্যায়ে স্বামী কর্তৃক এমন বাক্য উচ্ছারণ হওয়া, তখন স্ত্রীর দিকে সরাসরি সম্বন্ধযুক্ত করার কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই। বরং তখন এমনিতেই তালাক পতিত হবে।
(৩) তালাক নিয়ে অধ্যেয়ন করার সময়, তার স্ত্রীর কথা স্মরণ করে তালাক শব্দটি উচ্চারণ করলে, তালাক পতিত হবে না। তবে ইচ্ছাকৃত স্ত্রীর কথা স্বরণ করে তালাক শব্দ বললে, তালাক পতিত হবে।
(৪) স্ত্রীর সামনে শুধু তালাক শব্দটি মজার ছলে উচ্চারণ করলে তালাক পতিত হবে।
(৫) তার নিয়তে যদি তিন তালাক থাকে, তাহলে সে আর কখনো বিয়ে করতে পারবে না। যখনই সে কোনো মেয়ে বিয়ে করবে, সে সাথে সাথেই তালাক প্রাপ্ত হয়ে যাবে। আর যদি নিয়তে এক তালাক থাকে, তাহলে বিয়ে করার সাথে সাথেই এক তালাক পতিত হবে। তবে সে উক্ত স্ত্রী ফিরিয়ে নিয়ে এসে তার সাথে সংসার করতে পারবে।
(৬) স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে একা একা তালাক উচ্ছারণ করলেও তালাক পতিত হবে। তালাক পতিত হওয়ার জন্য স্ত্রীর শ্রবণ শর্ত নয়।
যাই হোক, এই বিধান যে কতোটা অমানবিক তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কেননা সংসারে টুকিটাকি বাদানুবাদ বা মনোমালিন্য হতেই পারে, সেসময় রাগের মাথায় তালাক বলে ফেলা অস্বাভাবিক না। তো এরকম ক্ষেত্রে তালাকের মতো এতো বড় ব্যাপার যদি ঘটে যায় তাইলে তো সংসার করা লাগবে না আর !
যাই হোক, প্রচলিত বিধান তো আমরা জানি সবাই, উপরেও আলোচনা করলাম।
এবারে আল্লাহর কিতাবের বিধান দেখেন তালাকের।
তালাকের আলোচনা কোরআনের কয়েক জায়গায় আছে, যেমন সূরা বাকারার আয়াত ২২৫ থেকে ২৩২ পর্যন্ত, এবং তালাক নামে একটা আস্ত সূরা আছে, ৬৫ নাম্বার সূরা আত্ব তালাক।
এবারে আসুন কোরআন থেকে তালাকের আয়াতগুলো জেনে নিই,
আল্লাহ তোমাদের অর্থহীন শপথের জন্য তোমাদেরকে পাকড়াও করবেন না, কিন্তু তোমাদের অন্তরের সংকল্পের জন্য দায়ী করবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, সহনশীল। যারা তাদের স্ত্রীদের সাথে মিলিত না হওয়ার শপথ করবে তারা চার মাস অপেক্ষা করবে। অতঃপর তারা যদি ফিরিয়ে নেয়, তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আর যদি তারা তালাকের দৃঢ় ইচ্ছা করে নেয় তবে নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। এবং তালাক প্রাপ্তাগণ তিন ঋতু পর্যন্ত অপেক্ষা করবে; এবং যদি তারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে তাহলে আল্লাহ তাদের গর্ভে যা সৃষ্টি করেছেন তা গোপন করা তাদের পক্ষে বৈধ হবেনা; এবং এর মধ্যে যদি তারা সন্ধি কামনা করে তাহলে তাদের স্বামীই তাদেরকে প্রতিগ্রহণ করতে সমধিক স্বত্ববান; আর নারীদের উপর তাদের স্বামীদের যেরূপ স্বত্ব আছে, স্ত্রীদেরও তাদের পুরুষদের (স্বামীর) উপর তদনুরূপ ন্যায়সঙ্গত অধিকার আছে; এবং তাদের উপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে; আল্লাহ হচ্ছেন মহা পরাক্রান্ত, বিজ্ঞানময়। তালাক দু’বার। অতঃপর বিধি মোতাবেক রেখে দেবে কিংবা সুন্দরভাবে ছেড়ে দেবে। আর তোমাদের জন্য হালাল নয় যে, তোমরা তাদেরকে যা দিয়েছ, তা থেকে কিছু নিয়ে নেবে। তবে উভয়ে যদি আশঙ্কা করে যে, আল্লাহর সীমারেখায় তারা অবস্থান করতে পারবে না। সুতরাং তোমরা যদি আশঙ্কা কর যে, তারা আল্লাহর সীমারেখা কায়েম রাখতে পারবে না তাহলে স্ত্রী যা দিয়ে নিজকে মুক্ত করে নেবে তাতে কোন সমস্যা নেই। এটা আল্লাহর সীমারেখা। সুতরাং তোমরা তা লঙ্ঘন করো না। আর যে আল্লাহর সীমারেখাসমূহ লঙ্ঘন করে, বস্তুত তারাই যালিম। অতঃপর যদি সে তালাক প্রদান করে তাহলে এরপরে অন্য স্বামীর সাথে বিবাহিতা না হওয়া পর্যন্ত সে তার জন্য বৈধ হবেনা, অতঃপর সে তাকে তালাক প্রদান করলে যদি উভয়ে পরস্পর প্রত্যাবর্তিত হয় তাতে উভয়ের পক্ষে কোনই দোষ নেই, যদি আল্লাহর সীমারেখা বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। এবং এগুলিই আল্লাহর সীমাসমূহ, তিনি জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য এগুলি ব্যক্ত করে থাকেন। আর যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দেবে অতঃপর তারা তাদের ইদ্দতে পৌঁছে যাবে তখন হয়তো বিধি মোতাবেক তাদেরকে রেখে দেবে অথবা বিধি মোতাবেক তাদেরকে ছেড়ে দেবে। তবে তাদেরকে কষ্ট দিয়ে সীমালঙ্ঘনের উদ্দেশ্যে তাদেরকে আটকে রেখো না। আর যে তা করবে সে তো নিজের প্রতি যুলম করবে। আর তোমরা আল্লাহর আয়াতসমূহকে উপহাসরূপে গ্রহণ করো না। আর তোমরা স্মরণ কর তোমাদের উপর আল্লাহর নিআমত এবং তোমাদের উপর কিতাব ও হিকমত যা নাযিল করেছেন, যার মাধ্যমে তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন। আর আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ যে, নিশ্চয় আল্লাহ সব বিষয় সম্পর্কে সুপরিজ্ঞাত। আর যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দেবে অতঃপর তারা তাদের ইদ্দতে পৌঁছবে তখন তোমরা তাদেরকে বাধা দিয়ো না যে, তারা তাদের স্বামীদেরকে বিয়ে করবে যদি তারা পরস্পরে তাদের মধ্যে বিধি মোতাবেক সম্মত হয়। এটা উপদেশ তাকে দেয়া হচ্ছে, যে তোমাদের মধ্যে আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস রাখে। এটি তোমাদের জন্য অধিক শুদ্ধ ও অধিক পবিত্র। আর আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না। [সুরা বাকারা - ২:২২৫-২৩২]
সুতরাং তালাকের বিধানের ক্ষেত্রে কোরআন আমাদের বলছে,
* শুধু শুধু মুখে তালাক বলার কোন মূল্য নেই (২:২২৫)
* প্রাথমিকভাবে তালাকের ব্যাপারে অটল হয়ে তালাক ঘোষণা করলে সেই তালাকের সিদ্ধান্ত যাচাইয়ের জন্যে উভয়কে(স্বামী স্ত্রী) চার মাস অপেক্ষা করতে হবে (২:২২৬)। চার মাসের মধ্যে....
* যদি উভয়ের ভুল বুঝাবুঝি মিটে (মিমাংসা) যায় তবে বিবাহ অটুট থাকবে (২:২২৬)
* যদি তালাকের সিদ্ধান্তে উভয়ে অটল থাকে তাহলে প্রথম তালাক (২:২২৭)
*এবারে এরপরে, তালাক প্রাপ্তানারী তিন হায়েজকাল অপেক্ষা করবে (মাসিক বন্ধ হওয়া নারীদের ইদ্দাত তিন মাস ৬৫/৪), তিন রজচক্রের মধ্যে স্বামী স্ত্রী পুনরায় একত্রিত হতে চাইলে একত্রিত হওয়ার অধিকারী। নয়তো তালাক।(২:২২৮)
*গর্ভবতী নারীদের ইদ্দত সন্তান প্রসব কাল পর্যন্ত (৬৫:৪)।
এর মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক শেষ হলো। অর্থাৎ কোরআনের বিধান মতে তালাকের প্রক্রিয়া ন্যূন্যতম ৭ মাস আর গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে এটা আরো বেশী।
* ২:২২৬-২২৮ প্রক্রিয়াই দুই বার (২:২২৯) তালাকের পরেও স্ত্রী ফেরত নেওয়া যাবে (২:২৩১), কিন্ত তৃতীয়বার তালাক সম্পন্ন (২:২২৬-২২৮) হলে অন্যের সঙ্গে বিয়ে এবং পরবর্তী স্বামীর দ্বারা তালাক ব্যতিরেকে স্ত্রীকে পুনরায় গ্রহন করা যাবে না (২:২৩০) (২:২৩২)।
তাহলে ৭ মাস ব্যয় করে তালাক কার্যকর হওয়ার পরে ঐ নারী পুরুষ চাইলে আবারো বিয়ে করতে পারে। অর্থাৎ সামগ্রীকভাবে একই নারী পুরুষ একবার তালাক হলে পরবর্তীতে আবার বিয়ের শর্ত ছাড়াই একবারের জন্য পুনরায় বিয়ে করতে পারবে।
*বিবাহের পরে স্পর্শ(সহবাস) করার পূর্বে তালাকের মনস্থির করলে গননার তিন হায়েজকাল ইদ্দত নেই (৩৩:৪৯), শুধু অপেক্ষা করতে হবে অবকাশের চার মাস (২:২২৬)
অর্থাৎ নববিবাহিত দম্পত্তি যৌন সম্পর্ক স্থাপনের পূর্বেই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিলে শুধু অবকাশের ৪ মাস অপেক্ষার পরেই তালাক কার্যকর হবে, ৩ মাসিক পর্যন্ত অপেক্ষার দরকার নাই।
*বিধবা নারীদের সিদ্ধান্তের অবকাশ (২:২২৬) নেই,শুধুমাত্র চার মাস দশ দিন ইদ্দত (২:২৩৪) পালন করলেই সে নতুন বিয়ে করতে পারবে।
অর্থাৎ বিধবাদের শুধু ৩ মাসিক পরেই বিয়ের অনুমতি প্রাপ্ত হবে।
তালাক ব্যবস্থায় সাক্ষী আবশ্যিক (৬৫:২)।
সোজা কথায় একদম নরমাল সব হলেও তালাক কার্যকর হতে টোটাল ৭ মাস সময় ! এর মাঝেও যদি স্বামী স্ত্রী মিলে যায় তাইলে সব ঠিক !
তাহলে কোরআনের তালাকের সিস্টেমটা হলো AT A GLANCE
১. তালাকের ব্যাপারে মনস্থির করলে টানা ৪ মাস এই সিদ্ধান্তে অটল থেকে যৌনমিলন থেকে বিরত থাকতে হবে, এতে প্রথম তালাক কার্যকর হবে। যদি এর মধ্যে তারা বোঝাপড়া ও বিবাদ মিটিয়ে মিলে যায় তো প্রথম তালাক বাতিল
২, ৪ মাস পরেও মিলমিশ না হওয়ায় প্রথম তালাক হওয়ার পরে স্ত্রী ৩ মাসিক (Menstrual cycle) পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। এর মধ্যেও যদি তারা পরষ্পর আবারো বিবাদ ভুলে একত্রে থাকার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে তালাক বাতিল। যদি না করে তাহলে ৩ মাসিক শেষে ২য় তালাক কার্যকর হবে। তবে যদি স্ত্রী গর্ভবতী হয় তবে ২য় তালাক কার্যকরী হওয়ার সময় হলো সন্তান ভূমিষ্ট হওয়া পর্যন্ত। অর্থাৎ বাচ্চা জন্মাতে যতদিন লাগে ততদিন পর্যন্ত ২য় তালাক কার্যকরী হওয়ার সময়, এর মাঝেও মিলে যেতে চাইলে আবার সম্পর্ক ঠিক।
এই ২ ধাপে চূড়ান্ত সম্পর্কচ্ছেদ ঘটবে।
নারীরা কি তালাক দিতে পারবে ?
কোরআনের বিধান মতে নারীরাও তালাক নেওয়ার অধিকারী...
"" যদি কোন নারী স্বীয় স্বামীর পক্ষ থেকে অসদাচরণ কিংবা উপেক্ষার আশংকা করে, তবে পরস্পর কোন মীমাংসা করে নিলে তাদের উভয়ের কোন গোনাহ নাই। মীমাংসা উত্তম। মনের সামনে লোভ বিদ্যমান আছে। যদি তোমরা উত্তম কাজ কর এবং খোদাভীরু হও, তবে, আল্লাহ তোমাদের সব কাজের খবর রাখেন। [ সুরা নিসা:128 ]
এবারে ভাবেন, খাড়ার উপ্রে মোল্লাদের প্রবর্তিত ৩ তালাক, বনাম কোরআনের বোঝাপড়ার কি সুন্দর সিস্টেম !
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০২২ রাত ১১:১৫