somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তাবলীগ নিয়ে বিভ্রান্তি - আমার কিছু কথা-পর্ব-০৩

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ দুপুর ২:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তাবলীগ নিয়ে বিভ্রান্তি - আমার কিছু কথা.. পর্ব-০১
তাবলীগ নিয়ে বিভ্রান্তি : আমার কিছু কথা- পর্ব- ০২

[এই লেখাটি আমার একটা দ্বায়বদ্ধতা। বা পুরাতন অসমাপ্ত ক্যাচালের সমাপ্তির প্রয়াস বলা যায়]

তাবলীগে সময় দেবার সময় একটা উদাহরন শুনে ছিলাম- কথাটা নিম্নরূপ-
ঈমান” হলো আগুন বা আগুনের বাহনের মত- যেমন একটা মোমবাতি নিয়ে যদি ঘরের বাইরে যান তাহলে অল্প বাতাসেই সেটা নিভে যেতে পারে- আবার বিপরীত হলো- যদি কোন খড়ের ঘরে সেই আগুনটি লাগে বা লাগিয়ে দেওয়া হয়? তাহলে বাতাস যত বাড়বে আগুন তত বাড়বে। সেইরূপে ঈমান কামাই করতে হলে এমন ঈমান কামাই কর যেটা সামান্য বাতাসে মোমবাতির মত নিভে না যায়- বরং বাতাস যত বেশী হবে ঈমান যেন তত শক্তিশালী হয়। আর সেই রকম ঈমান কামাই করতে হলে- হাতে কলমে ঈমান শিখতে হবে- এবং ময়দানে গিয়ে আত্মসমর্পন করে।

সম্পুরক আর একটা উদাহরন হলো- সার্কাস আমরা কমবেশী সবাই দেখেছি- আর এর একটি প্রায় কমন খেলা হলো- একটা বোর্ডের সামনে ঘেঁষে একজন লোক দাড়িয়ে- অপর একজন বোর্ড থেকে ৫/৬ হাত দুরত্বে দাঁড়িয়ে বোর্ডের সামনে দাঁড়ানো লোকটির চারদিকে চোখ বেঁধে ছুড়ি বা চাকু নিক্ষেপ করে। অব্যর্থ নিশানা... প্রতিটি চাকু-ই দাঁড়ানো লোকটির শরীর ঘেঁষে বোর্ডটিতে বিঁধে যায়।

এবার ছুড়ি নিক্ষেপকারী লোকটি যদি আপনাকে বলে?
- স্যার আপনিতো দেখলেন- আমি কেমন নিশানাবাজ- এবার আপনি এই বোর্ডটির সামনে একটু দাঁড়ান- ভয় নেই এবার আমি আমার চোখ খোলা রেখেই ছুড়ি নিক্ষেপ করব। আপনি যদি অধিক সাহসী হন তাহলে হয়ত যাবেন- কিন্তু অন্তরে থাকবে ধড়ফড়ি- দুর্বল হার্ডের মানুষ হলে?.... আর যদি সাহস কম থাকে? তাহলে হয়ত যাবেন-ই না। এমনকি আপনাকে জোড় করেও সেখানে নেওয়া যাবেনা। কারন আপনার মনে ‍"কিন্তু" নামক শব্দটি বারবার বলবে... যদি... লেগে যায়?
অপর পক্ষে সার্কাসের সহযোগী লোকটি? তার কাছে সেটা পানির মত সহজ। কারন সে এই কাজটি শত শত বার করে সেই যোগ্যতা কামাই করেছে- মনের "কিন্তু” দূর করেছে-

ঠিক তেমনি ঈমান শিক্ষা করার জন্য.. দুনিয়ার কোন শক্তির দ্বারা কিছু হয়না.. এই শিক্ষা অন্তরে বদ্ধমুল করার জন্য.. আমি দুনিয়ার মহাজ্ঞানী, মহাশক্তিশালী, মহা একজন হয়ে গেছি.. এই আমিত্ব আর “মহাত্ম” বড়ত্ব জ্ঞানীত্বের অহন্কার দূর করার জন্য – মাথায় হাড়ি, কাঁধে বিছানা, আর হালাল কিছু কামাই নিয়ে একদিন আপনজন, বন্ধু-বান্ধব ছেড়ে মনে মনে এই নিয়ত করে ঘর থেকে বের হতে হবে। ময়দানে যেতে হবে মনের ‍"কিন্তু" দূর করতে হবে। এই বলে যে- হে আল্লাহ্ .. আমি আমার আমিত্বকে বর্জন করে একদিনের জন্য হলেও- তোমার প্রকৃত পছন্দের রাস্তা চিনে পথ চলার জন্য বের হলোম। তুমি আমাকে সরল পথ দেখাও। তোমার সন্তুষ্টির পথে তুমি আমাকে পরিচালিত কর।

আপনি যদি প্রকৃত সত্য সন্ধানী হন.... তাহলে অনুভব করতে পারবেন মানব জীবনের মৌলিক প্রয়োজনের বিষয়- খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান এর প্রয়োজন মেটানোর জন্য মাথায় হাড়ি- পাতিল, বিচানাপত্র, নিয়ে ঘর থেকে বের হবার পর আপনার বন্ধুদের সামনে দিয়ে যখন হেঁটে যাবেন- আপনার সমস্ত লজ্জা আর জড়তা কাটানোর সাথে সাথে নিজের মনেই প্রশ্ন আসবে আমি কেন বের হলাম? মনে মনেই উত্তর পাবেন- ইমান এবং দ্বীন শিক্ষা"র জন্য" তখন আপনার মনই সাক্ষ্য দিবে আপনি আল্লাহর প্রিয় বান্ধা হয়ে গেছেন। (নিজস্ব মতামত)

যাক, আমার নিজস্ব মতামতের কথা নাহয় ই দিলাম (বাদ দিতে হবে কারন : আগের প্যারার শেষ কটা লাইন আমার নিজস্ব মতামত) হ্যাঁ যদি এসব কথা বাদ দেই তবে আরিফ সাহেবকে বলতে চাই- আপনি মানবেন কিনা জানিনা ”মানুষের সমস্ত জীবনটাই হলো- ছাত্র অবস্থায় কাটানোর জন্য- এটাই মুক্তির পথ। কারন শিক্ষানবীসদের জন্য সবই ক্ষমা” মৃত্যুর পর মানুষের শিক্ষানবীস অবস্থা শেষ। অতএব তাবলীগে সময় দিতে গেলে এই বিষয়টার শিক্ষা বুঝিয়ে দেয়া হয়, এবং প্রেকটিক্যাল বুঝানো ও হয় যে- আমি ছাত্র এবং শিখছি। অপরদিকে কোন মানুষ যখন মনে করবে- আমার শিক্ষা শেষ- তার অন্তরে অহন্কারের বীজ বপন সেখান থেকে শুরু।
যদি তাই.. না হত.. তবে অসাবধানতা বশত ও আপনার ( Abdullah Arif Muslim) এই ন্যাগেটিভ গুনাবলীর সাথে মুহাম্মদ (সঃ) এর চারিত্রিক বৈশিষ্টের তূলনা করার সাহস কারো হতনা। কিন্তু আপনি পেরেছেন। স্কিনসট :

যার ফলে রাগে- দুখে আমি আপনাকে ব্লক করে ছিলাম- কিছু বক্তব্যও ছিল। কিনতু মডারেশন বোধহয় এই ক্যাচালকে আর সামনে নিয়ে যেতে চায়নি। যার জন্য আমার পোষ্ট মুছে দিয়েছিল। কিন্তু উপরের স্ক্রিনসটটি রেখে দিয়ে ছিলাম।

যাক, বুখারীর প্রথম হাদিসটি তো পড়েছেন অবশ্যই- সমস্ত কর্মের (আমলের) ফল নিয়তের উপর নির্ভরশীল। বিতর্কের এক পর্যায়ে আপনি কসম করে বলেছেন- তাবলীগ ওয়ালাদের নিয়ত ১০০% সহীহ। আবার বলেছেন- তাবলীগ জামাতের কাজ বাতিল বাতিল বাতিল। তাহলে ? যদি আপনার বলা তাবলীগ ওয়ালাদের নিয়ত সহীহ্ কথাটাকে ধরে নেই তাহলে আমার প্রশ্ন হলো- বুখারীর প্রথম হাদিস অনুসারে / আর শিক্ষানবীন অবস্থার সূত্র অনুসারে এই সহীহ নিয়ত ওয়ালাদের যদি আল্লাহ্ নিরাশ না করেন- তাহলে আপনি নিরাশ করতে চাচ্ছেন কোন সাহসে? কোন অহন্কারে? আপনি কি হাদিন অমান্য করার দোষে দোষী হবেন না? অথবা আল্লাহর সিফত সম্পর্কে তহমতকারীর অপবাদ আপনার উপর প্রযোজ্য হবে না? নিয়ত যদি সহীহ হয় তাহলে ভুল শুদ্ধ সব চর্চা করতে করতেইতো মানুষ প্রকৃত সত্যের উপর অটল হয়।

সময় অনেক গড়িয়েছে- আপনার পুর্বের সকল বিতর্কে আপনার অবস্থানটি এখনও আমি পরিস্কার বুঝতে পারলামনা.. কারন এক সময় বললেন-"তাবলীগ ওয়ালাদের নিয়ত ১০০% সহীহ্" আবার বললেন- তাবলগি বাতিল বাতিল বাতিল। আমি এবং পাঠক কোনটাকে সঠিক ধরব বা ধরবে?

আর একটা প্রশ্ন ভাই... বলেনতো-- ঈমান শিক্ষার পথে, মানুষকে দ্বীনের দিকে ডাকার জন্য -কোন দলটির ত্যাগ সবচেয়ে বেশী? ইউটিউবে ভাষন রেকর্ডকারীদের? নাকি.. ব্লগে সমালোচনা কারীদের? নাকি হাড়ি-পাতিল, বিছানাপত্র নিয়ে কিছু সময়ের জন্য সংসার পরিজন ত্যাগ করে ইমান শিক্ষার জন্য মসজিদে মসজিদে অবস্থান করে নিজের ইমান আমল শিক্ষার সাথে সাথে অন্যদেরকে ইমান আমল শিক্ষার জন্য দাওয়াত দানকারীদের? জবাবটা দিলে খুশী হতাম...

-- কথা বেশী লম্বা হয়ে যাচ্ছে... আজ রাখলাম.. ব্লক ছেড়ে দিয়েছি.. তবে শরীর-স্বাস্থ্য ভালনা.. আল্লাহ্ যদি তৌফিক দেন- তাহলে হয়ত ভবিষ্যতে আরো কথা হবে। না হয়.. না.. কারন - এই পৃথিবীর সকল মানুষের মত আমিও একজন মুসাফির...


তাবলীগ নিয়ে বিভ্রান্তি : আমার কিছু কথা- পর্ব- ০৪ বা শেষ
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ১২:৩১
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×