ইরাকে গত ৩ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে পরিচালিত সন্ত্রাসী হামলায় শহীদ হন ইরানের কুদস ফোর্সের অধিনায়ক লে. জেনারেল কাসেম সোলাইমানি, ইরাকের পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সের উপ-প্রধান আবু মাহদি আল-মুহান্দিস ও আরও আটজন সামরিক ব্যক্তি। ওই ঘটনার পর থেকেই ইরাকি নেতারা বলে আসছেন, তারা অন্য দেশগুলোর মধ্যে সংঘাতের ক্ষেত্রে পরিণত হতে রাজি নন।
কাসেম সোলাইমানির মত দ্বিতীয় কোন চালাক-চতুর, রণনিপুন ও সাহসী বীর-যোদ্ধা ইরানের মাটিতে আর কোন কালে জন্ম নিবে না—একথা নিশ্চিত। সত্যি কথা বলতে কি, কাসেম সোলাইমানির তূলনা সোলাইমানি নিজেই। একথা আগাগোড়া ভাল ভাবেই চিন্তা করে বিশ্ব-ত্রাস ট্রাম্প এ মহান বীরকে হত্যা করেছে।
সে যাই হোক, এখন সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয় হ’ল কিভাবে দূর-নিয়ন্ত্রিত একটিমাত্র ক্ষেপণাস্ত্র এত সঠিক ও নিখুত ভাবে কাসেম সোলাইমানির গাড়ী বহরকে নিমেষে ধ্বংস করে দিল! দূর-নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে একেবারে পিন-পয়েন্টে কি আঘাত হানা সম্ভব? এছাড়া সোলাইমানি কখন কি বিমানে কোন বিমান ঘাটিতে অবতরন করে আবার কোন গাড়ীতে সোয়ার হয়ে কোনদিকে যাত্রা করছেন—এসব তথ্য কি সেটেলাইট ক্যামেরা দিয়ে তৎক্ষণাৎ সংগ্রহ করে পর-মূহূর্তে ক্ষেপণাস্ত্র দাগ করে সোলাইমানি হত্যা করা সম্ভব? মোটেই না! নিঃসন্দেহে বলা যায়, সরিষার মধ্যে ভূত লুকিয়ে ছিল। অর্থাৎ ইরাকি বিমান বন্দর থেকে শুরু করে হত্যাস্থলি পর্যন্ত প্রশাসনিক ও সুরক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে ঘাতক ট্রাম্পের গুপ্তচর বাহিনী মজুত ছিল; যা ইরাকি প্রশাসন বুঝে উঠতে পারেনি বা কল্পনা ও করতে পারেনি। আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি সোলাইমানি বিশ্বাস-ঘাতকতার বলি হয়েছেন। আর সোলাইমানিকে আকাশ থেকে নিক্ষিপ্ত কোন অস্ত্র প্রয়োগ করে হত্যা করা হয়নি; বরং নির্দিষ্ট দূর থেকে ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপ যোগ্য অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
সোলাইমানির হত্যা লীলা পর্যালোচনা করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে এই ভেবে যে, আমেরিকা সাপ জানিয়ে দিয়েছে তারা ইরাক থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে না। অথচ নব-নির্বাচিত ইরাকি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুহাম্মাদ আলী আল হাকিম বলছেন, “ইরাকের মাটি ব্যবহার করে কোনো দেশে হামলার অনুমতি কেউ পাবে না।“ প্রসংগক্রমে উল্লেখ্য, সন্ত্রাসী আমেরিকা সোলাইমানি হত্যার অনুমতি কি নিয়েছিল?
মোদ্দা কথা, বর্তমান ইরাক প্রশাসন আমেরিকান হানাদার বাহিনীকে অবিলম্বে দেশ ছাড়তে বাধ্য করান; নচেৎ জেনে রাখুন বিশাল এক সীম-ঝাড়কে নিমেষে ধ্বংস করতে একটা হুতুমপাচাই যথেষ্ট। আরোও মনে রাখবেন আপনাদের পূর্বসূরীরা খাল কেটে কুম্ভীর এনেছে ইরাকে—গতিকে, পচা জিনিষ থেকে সুগন্ধ কিছু পাওয়ার আশা অমূলক। সোলাইমানির আত্মবলিদানকে অমর রাখতে; জীবন্ত এই শহীদের সুদূর প্রসারী স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে ইরাক থেকে সন্ত্রাসী হানাদার বাহিনী যে কোন ত্যাগের বিনিময়ে এক্ষণেই ইরাকের পবিত্র ভূমি থেকে খেদে পাঠানো সময়ের ডাক।
এম বি ফয়েজ,
রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগের শ্রোতা;
নগাও প্রধান ডাকঘর
নগাও, আসাম।
পিনঃ ৭৮২০০১ (ভারত)
মোবাইলঃ ৮৪৪৮৯১০৩৯৫
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৪৭