দুনীর্তি এমন পর্যায় যে কারো কোন কনফিডেন্ট নাই এই দেশ পরিচালনায়।তাই সোনা পিতল হচ্ছে আর কয়লা হাওয়া হচ্ছে মিডিয়ায় দৌলতে সরকার বুঝে উঠার আগেই দুর্নাম যা রটার তা আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে বিষাক্ত ধোয়ার ন্যায়। প্রবাদ বাক্যর ন্যায় চিলে কান নিয়েছে এখন চিলকে ধরো । দে দৌড় কয়েক মাঠ পেরিয়ে মনে হলো কান কোথায় ওটা ত মাথায় থাকার কথা দেখি হাত দিয়ে দেখে সব ঠিক আছে হুজুগে এত পরিশ্রম করা হলো ।
এবার আসল কথায় আসি । গত কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভোল্ট হতে সোনা লোহায় তামায় পিতলে পরিণত হয়ে গেছে বলে বিরাট এক সংবাদ প্রকাশিত হলো । সকলে এ দেশ রসাতলে যাচ্ছে সরকার দেশ বিক্রি করে ভাজা মুড়ি খাবে কত কি রসদার কথাবার্তা নিয়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় চলল । পত্রিকা টিভি চ্যানেল কত মধুর মধুর সংবাদা ঘন্টায় ঘন্টায় আপডেট দিতে থাকলেন । শেষ সার্বিক তথ্য তদন্ত শেষে জানা গেল ৯৬৩ কেজি স্বর্ণের মধ্যে মাত্র ৩ কেজি স্বর্ণে গড়মিল হয়েছে । কিন্তু সরকারের যা হবার তা আগেই মিডিয়া কাম সেরে দিয়েছে চোর বানিয়ে ।
এবার আসি চলমান ইস্যু কয়লা নিয়ে । প্রবাদ বাক্য কয়লা ধুয়লে যায় না ময়লা । তাই কত কিচ্ছা কাহিনী এখন দেখতে পাচ্ছি এই কয়লা নিয়ে । আজ সকালে ATN বাংলা চ্যানেলে মুন্নি সাহার সঞ্চালনায় পাওয়ার কথা অনুষ্ঠানে সাবেক পরিচালক পেট্রোবাংলার কিছু কথা শুনে মনে হলো আমরা চিলের পিছে ছুটায় অভ্যস্ত আর আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছি দুর্নীতি করতে করতে ।মানুষের বেচে থাকার জন্য ৫ টি মৌলিক চাহিদা থাকে তার মধ্যে অন্যতম খাদ্য । খাদ্যর অভাব হলে তখন অন্য কিছুর চিন্তা থাকে না আগে খাদ্য যোগাড় করি তারপর সেটা পরিষ্কার না অপরিষ্কার তখন বিচার করা যাবে । ঠিক তেমনি একটি দরিদ্র দেশ হতে উন্ননয়শীল দেশে পর্দাপণ করতে গিয়ে বর্তমান বাংলাদেশে অনেক কিছু চোখে পড়ছে এবং সেটা সমাধানও হচ্ছে এটা আমাদের খুবই পজেটিভ দিক । কারণ সমস্যা না হলে সমাধানের পথ খুজে পাওয়া যায় না শেখাও যায় না ।
সকালের অনুষ্ঠানটি দেখে যেটা মনে হলো বাংলাদেশ ব্যাংকের সোনা গায়েব বা লোহা তামা পিতলে পরিণত সংবাদের মত কয়লার সংবাদ টাও ভিত্তিহীন হবে কিন্তু ততক্ষণে সরকারের ইমেজের বারোটা বাজিয়ে ছাড়বে মিডিয়া । আর সরকারের দায়িত্বে থাকা দুর্নীতিবাজ আমলা মন্ত্রী এমপি গুলো । কারণ এরা কেউ কনফিডেন্ট নিয়ে কথা বলতে পারেন না যে, আমি দুর্নীতি করিনি । যে কেউ আঙুল তুলে দেখিয়ে যদি বলে আপনি চোর অমনি সে ভেবাচ্যাকা খেয়ে ফেলে কারণ সে কোন না কোন ক্ষেত্রে এ দেশে চুরি করেছে তাই তার মনের মাঝে খটকা লেগে থমকে যায় যে উনি কি কিছু জেনে ফেলল। আর যদি সৎ থাকতেন ঠাটিয়ে একখান চড় বসিয়ে বলতেন কোথায় চুরি করেছি প্রমাণ করে বলেন আমি চোর এর আগে নহে চোর শব্দ উচ্চারণ করা । সেই সৎ সাহস এই দেশের আমলা মন্ত্রী এমপিদের নেই তাই দেশের উন্নয়ন কাজ গুলো হুজুগে শব্দে বাধা গ্রস্ত করে সময়ক্ষেপন করা সহজ হচ্ছে ।
পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যানের বক্তব্য অনুযায় ১লক্ষ ৪২ হাজার টন কয়লা মোট উৎপাদনের ১.৪% ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে যা প্রতি বছর বছর রিপোর্ট করা দরকার ছিলো দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের কয়লা খনি এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে । তাহলে এই চুরি বা সরকারের দুর্নাম আসত না ।২০০৫ সালে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে বাণিজ্যিকভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়। এ পর্যন্ত ১৩ বছরে কয়লা উত্তোলন হয়েছে এক কোটি ২০ লাখ টন।
কয়লা/মাটি/বালু এগুলো পানি মিশ্রিত পদার্থ । এগুলো স্থান্তরের সময় ওজন পরিমাপ কম গতে থাকে । যেমন সকলে জানেন এক ট্রাক বালু যদি কোথাও আপনি ট্রাক হতে মাটিতে রাখেন তখন বালু ওখানে শুকাতে থাকবে , মাটিতে মিশতে থাকবে ,বাতাসেও উড়বে । পরবর্তী আবার গাড়িতে উঠানোর সময় কিছু বালু ঔ মাটিতে পড়ে থাকবে সম্পূর্ণ গুছিয়ে গাড়িতে তোলা যাবে না ফলে ৫০০ সেপ্টি বালু নামালে উঠানোর সময় নূন্যতম ১ সেপ্টি বালু অপচয় হয়ে ৪৯৯ সেপ্টি বালু গাড়িতে উঠল । এবার এমন যদি ৫ টি স্থান পরিবর্তন হয় তাহলে ৫ সেপ্টি বালু কমে গেল কিন্তু সরকারের খাতায় ত ৫০০ সেপ্টি ক্রয় দেখানো হলো । এটা প্রতি হিসাবে অপচয় ৫ সেপ্টি দেখানো না হলে এমন তের বছর বছর হিসাব করলে কয়েক লক্ষ হাজার সেপ্টি বালু অপচয় হবে এবং সেটা একত্রে সকলের চোখে পড়বে । কারণ হিসাবটা কত বছরের সেটা কেউ দেখছে না বরং চুরির হিসাবটা এ বছরের সেটা দেখছে সকলে । তদ্রুপ কয়লা খনি হতে হিসাব করে তোলায় হয় বাট প্রসেসিং সহ ব্যবহার পর্যন্ত যদি এমন অপচয় হতে থাকে আর সেটার হিসাব এই তের বছর পর করে একবারে ধরিয়ে দেওয়া হলো চুরি হিসাবে । আর চোরের দল সেটা যাচাই বাছাই না করেই নিজের দোষ চাপা দিতে পাগলের মত এর দোষ ওর দোষ হেন তেন পাগলের মত বকা বকি শুরু করল আসল তথ্য উৎঘাটন না করে । মূলত যে হিসাবটি এখন আসার সম্ভবনা আছে তা হলো কয়লা খনির সঠিক হিসাব রিপোর্ট সংরক্ষণ না করা ।
এই লিখাটি সরকারকে তুষ্ট করার জন্য নহে একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে বিভিন্ন বিশেজ্ঞদের তথ্য আলোচনা শুনে আমার মনে হলো এই সকল ঘটনার মধ্যে দিয়ে দেশ একদিন সর্বদিক দিয়ে প্রতিরোধ প্রতিরক্ষা দেওয়াল তৈরী ও স্বাবলম্বী হবে ঠেকা খেতে খেতে । তারজন্য প্রয়োজন আমাদের সততা আত্মবিশ্বাস নিয়ে কথা বলা । কেউ চোর বলল সঙ্গে সঙ্গে সেটা যাচাই বাছাই ছাড়াই মেনে নেওয়া সততার পরিচয় না । সরকারের দায়িত্বশীলদের আরো দায়িত্ববান হওয়া এখন সময়ের প্রয়োজন দেশকে এগিয়ে নিতে । কোন কান কথায় বিচলিত না হয়ে ।
মোঃ মাজেদুল হক
স্বাস্থ্যকর্মী
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:৩৯