সুইজারল্যান্ড দুনিয়ার অন্যতম চোস্ত দেশ; অনেক কারনেই ইহা বে-নজির। সম্পদ, সৌন্দর্য, সহবত, রাজনীতি, দেশনীতি ইত্যাদিকার বহুক্ষেত্রে দেশটি অনন্য। এত সব কিছুর মধ্যেও বোধকরি তাহাদের উৎপাদিত ঘড়ি জগত সেরা; দামেও অপ্রতিদ্বন্দ্বী, ৪/৫ লাখ টাকা দামের ঘড়ি ডালভাতের ন্যায় যেনতেন মোকামে শোভার পায়। আমিও সুইস ঘড়ির ভক্ত, ফিবার জেনেভা গমনে ঘড়ি ক্রয়োচ্ছা রুধিবে কে। বিশেষত: সস্তা দামের সোয়াচ ঘড়ি অজান্তেই হাতের কবজে গাথিয়া যায়।
বিষয়টি এবারে নিজেদের দেশেই ঘটছিল; সুইস মেড হাসপাতাল, কক্সবাজারের উখিয়ার জামতলিতে। রোহিঙ্গাদের স্বাস্হ্য সেবায় আমরা কিছু মধ্যস্থায়ী স্থাপনার দিকে মনযোগ দিয়াছি। তাহারা সহসা ফিরিবে এমন আলামতের মেঘ আকাশ ঢুডিয়া নিশানা পাওয়া যাইতেছে না। স্থায়ী হাসপাতাল করিলে মায়ানমার গোস্সা করে, অস্থায়ী হাসপাতালে কুল মান যায়; এমন দোটানায় স্থানান্তরযোগ্য মধ্যস্থায়ী prefabricated স্বাস্হ্য কেন্দ্র তৈয়ারীর উসখুস চলিতেছিল বেশ কাল যাবত। নিজের অর্থে পরের উপকার না করিবার খায়েসে, আমরা বিভিন্ন দাতাদিগের সহিত সংগত করিতে করিতে সুইস রেডক্রসের তলাশ পাইলাম। সুইস রেডক্রস বাংলাদেশ কর্তা বিহারের অমিতাভ শর্মার তত্বাবধান আর কলকাতার স্থপতির শান্তনু ভট্টাচার্যের কল্পনায় সুইস মেড Primary Health Centre পাহাড়ের কোলে শোভা পাইতেছে। গতকাল কক্সবাজার আসিয়া তাহা দেখিতে যাইয়া বেশ আমোদ-আহ্লাদ হইতেছে; কাদামাটি ঝোপঝাড়ের মধ্যেও এত সুন্দর একটি শক্ত পোক্ত কাঠামো হইতে পারে তাহা বিশ্বাস হইতেছিল না
আমাদের অন্যান্য হতদরিদ্র সেন্টারের তুলনায় ইহা প্রাসাদ বলিয়া ভ্রম হইতেছে। আগামী ২১ মার্চ উদ্বোধন হইতে যাওয়া এই কেন্দ্রটি কমিউনিটি ক্লিনিকের আদলে রোগী দেখা, প্রসবসেবা, পুষ্টি সেবা এবং মানষিক স্বাস্হ্য সেবা প্রদানে নিয়োজিত হইবে।
নিজস্ব পানি সরবরাহ, আধুনিক পয়নিস্কাশন, সৌরবিদ্যুতে সজ্জিত এই কেন্দ্রটি স্বাস্হ্য মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের চিন্তাভাবনা সফল অনুবাদ।
মূল লেখকঃ বে-নজির আহমেদ, স্বাস্থ্য পরামর্শক ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:১৪