কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত কর্মচারী সিএইচসিপিদের সংগঠন, বাংলাদেশ সিএইচসিপি এসোশিয়েশন কেন্দ্রেীয় দাবী আদায় বাস্তবায়ন কমিটির ডাকে গত ২০ শে জানুয়ারী হতে কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ রেখে চাকুরী রাজস্বখাতে স্থানন্তরের দাবীতে অবস্থান কর্মসূচি সহ বর্তমান আমরণ অনশনে রয়েছেন দেশের প্রায় ১৪ হাজার কর্মচারী সিএইচসিপি ১ মাস যাবত । প্রথমে আন্দোলন শুরু করেন উপজেলা অফিস হতে জেলা অফিস সর্বশেষ ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাব এর সামনে অবস্থান ও অনশন করতে থাকেন। সর্বশেষ এখন কর্মীরা অবস্থান করছেন কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্প কার্যায়ের সামনে বিএমআরসি ভবন,মহাখালী,ঢাকা।
এই অনশনের ফলে ভেঙে পড়েছে গ্রামীণ স্বাস্থ্য সেবা । বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে উঠে আসছে সে সকল তথ্য চিত্র । গত কয়েকদিনের মিডিয়া সাক্ষাৎকারে সরকারের মন্ত্রী, কর্মকর্তার বক্তব্য এটা প্রতীয়মাণ যে কমিউনিটি ক্লিনিককে ট্রাস্টের আওতায় নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন সরকার। যা এই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য হবে চরম হুমকি স্বরুপ।
কমিউনিটি ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা ও তদারকি কার্যক্রম এখন বিদ্যমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে সম্পাদিত হচ্ছে। ট্রাস্টের অধীনে গেলে বিদ্যমান চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে পরতে পারে। বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টাফ যেমনঃ ট্রাস্টের কর্মী, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মী , এমআইএস, এনজিও কর্মী এবং স্থানীয় সরকার প্রতিনিধির সমন্বয়ে কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সমন্বয় ও সহযোগিতা ভেঙ্গে পড়তে পারে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মতো সুবিশাল কর্মকান্ড পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার জন্য বেতন ভাতাদি, প্রয়োজনীয় ঔষধ ও যন্ত্রপাতির নিরবিছন্ন সরবরাহের জন্য যে বার্ষিক আর্থিক ব্যয় (প্রায় ৭০০ হতে ৮০০ কোটি টাকা) এর সংস্থান এককভাবে ট্রাস্টের মাধ্যমে করা সম্ভবপর নয়। ফলশ্রুতিতে এ কার্যক্রমটির অগ্রগতি বাধাগ্রস্থ’ হবে।
সর্বোপরি অতীতের মতো সরকার পরিবর্তন বা অন্য কোন কারনে কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম মুখ থুবড়ে না পড়ে বা বন্ধ হয়ে না যায়, সেদিক বিবেচনায় কমিউনিটি ক্লিনিক ও এর কর্মীদের স্থায়ী বা রাজস্বকরণ এখন সময়ের দাবি। একনেক কর্তৃক অনুমোদিত বর্তমান সেক্টর প্রোগ্রামের পিআইপি’তে কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত কর্মীদের চাকুরী রাজস্বখাতে নেওয়ার জন্য সুনিদ্দিষ্টভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাই বাস্তবতার আলোকে কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমকে টেকসই করতে এবং জনকল্যাণে কমিউনিটি ক্লিনিকের ভুমিকা আরও শক্তিশালী করতে এ কার্যক্রমটিকে রাজস্বখাতে অন্তর্ভূক্তির কোন বিকল্প নেই।
কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন এবং বাস্তবায়ন বর্তমান সরকারের একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, কমিউনিটি ক্লিনিককে কেন্দ্র করে সিএইচসিপি ও তার তত্বাবধানে কমিউনিটি গ্রুপে ও কমিউনিটি সাপোর্ট গ্রপ সদস্য সহ প্রায় ১০ লক্ষ্য জনবল যার মধ্যে ১৩৫০০ জন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সরাসরি এ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। বাংলাদেশের দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ গ্রামীন জনগনের মধ্যে তাদের একটা অবস্থান এবং প্রভাব তৈরী হয়েছ্।
বর্তমানে কর্মরত সিএইচসিপিগণ মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী এবং তারা বর্তমান সরকারের সমর্থক একটি দক্ষ কর্মী বাহিনী, আগামী জাতীয় নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ সুতরাং সাধীনতার বিপক্ষের শক্তি বিশেষ করে বিএনপি জামাত জোট তাদেরকে লোভ লালসা, প্রলোভন, মিথ্যা আশ্বাস দেখিয়ে বিভ্রান্ত করতে পারে । সুতরাং আগামী নির্বাচনের পুর্বেই তাদেও ব্যাপারে একটা ইুতবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় বিবেচনা এবং সঠিক সিদ্ধান্ত জরুরী বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় মনে করে।
অনেকে মনে করেন যে এদেরকে জাতীয় করণ করলে তাদের মধ্যে কাজের গাফলতী আসবে কিন্তু‘ বাংলাদেশের অতীতের প্রায় ১৪ লক্ষ্য সরকারী কর্মকর্তা/ কর্মচারী তাদের কাজের মাধ্যমে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত ও মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত করতে যাচ্ছে সুতরাং আমাদের বিশ্বাস এ জনগোষ্টীকে যদি রাজস্ব খাতে আনা হয় তাহলে তারা ও তাদের হতাশা কাটিয়ে নব উদ্যেমে নিজেকে আত্বনিয়োগ করবে এবং তাদের মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæত আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে এসডিজি অর্জনে বিশাল অবদান রাখবে।
এই তরুণ মেধাবী আইটি এক্সপার্ট স্বাস্থ্যকর্মীদের রাজস্বখাতে স্থানন্তর না হলে কর্মীদের মাঝে নেমে আসবে হতাশা । কর্মের প্রতি সঠিকভাবে মনোনিবেশ করতে পারবে না জীবনের ভবিষৎত চিন্তা করে। অনেকে এই চাকুরী ছেড়ে অন্যত্র চলে যাবে ফলে সরকারের প্রশিক্ষিত জনবল হারাবে ক্ষতি হবে কোটি কোটি টাকা। তাই কর্মচারীদের রাজস্বখাতে স্থানন্তর হবে এই সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৫৬