প্রয়োজনই প্রয়োজনীয়তার সৃষ্টি করে
আমাদের ঝিনাইদহে চলমান কয়েকটি আন্দোলনের মাঝে উল্লেখ যোগ্য দুটি আন্দোলন নবগঙ্গা নদী দখল মুক্ত ও খনন কার্য করনের জন্য নবগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন এবং রেল পথের দাবীতে ।
নবগঙ্গার প্রয়োজনীয়তা আমার দৃষ্টিতে
ঝিনাইদহ শহরকে এখন সৌন্দর্য্য এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে নদীর কোন বিকল্প নেই । শহরের সকল বর্জ্য পানি এখন ড্রেন এর মাধ্যমে নদীতে ফেলানো হচ্ছে। এই নদী না থাকলে শহর হবে দুগর্ন্ধময় একটি শহরে পরিণত হবে । এছাড়াও এই ঝিনাইদের অস্তিত্বের সাথে মিশে আছে এই নবগঙ্গা নদী । এই নদীর কারণেই এই ঝিনাইদহ নামকরণ হয়েছে । তাহলে ঝিনাইদহের ইতিহাস রক্ষা করতে হলে নদীকে যাদুঘরে রাখলে ত আর আগামী প্রজম্ম এই শহরের প্রতি আন্তরিক ভালোবাসায় উদ্বুদ্ধ হবে না । তাই এই নদীর রক্ষা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব । এছাড়াও দেখুন এই নদীকে আমরা দখল মুক্ত করে খনন করতে পারলে এবং নদীর দুপাশ সুন্দর করে পাড় বেধে আমরা তৈরী করতে পারি উন্মুক্ত পার্ক । এক মনোরম পরিবেশে সকাল বিকাল আমাদের শহরের মানুষেরা নদীর কুল ধরে হাটতে ঘুরতে আড্ডা গল্প ভ্রমন করতে পারবে । যান্ত্রিক শহরের মানুষ পাবে একটি প্রাকৃতিক নৈসর্গিক পরিবেশ । নদীতে থাকবে ১২ মাস পানি ঘাটতি মিটবে আমিষ পুষ্টির । নদীর বুকে চলবে নৌকা শহরের সকল শ্রেণীর মানুষ আনন্দ উপভোগে করবে মনের আনন্দে ভ্রমণ । আর এই সকল আনন্দের মাঝে ঘটবে বিরাট এক পরিবর্তন আর সেটা হলো মানব সম্পদের যথাউপযুক্ত ব্যবহার । সৃষ্টি হবে কর্মসংসস্থানের এই নদীকে ঘিরে । নেশা সন্ত্রাস অপরাধ কমবে এই শহরের মাঝে এমন মনোরম পরিবেশ করতে পারলে সৃষ্টি সকলে হবে কর্মের প্রতি আকৃষ্ট । সর্বোপরি নবগঙ্গা এখন জনগুরুত্বপূর্ণ একটি প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে ঝিনাইদহ শহরের প্রেক্ষাপটে।তাই এই নদীকে রক্ষা করতে দলমত নির্বিশেষে সকল কে এক কাতারে এসে এই নদী রক্ষায় অংশগ্রহণ করা আশুপ্রয়োজন।
এবার আসি রেলপথ
রেলপথ বর্তমান সময়ে ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বাহণ । আমাদের বর্তমান সমাজে পণ্য দ্রব্য যে উর্দ্ধগতি তার পেছনে একটি উল্রেখ যোগ্য কারণ হলো পরিবহণ খরচ । এই পরিবহণ খরচের কারণে আমাদের পণ্যর মূল্য বৃদ্ধি পায় অধিকাংশ । এছাড়াও নিরাপদ ও আরামদায়ক দ্রুততার সহিত যাতায়াত এখন প্রতিটি মানুষের জন্য কাম্য । আর এই সকলই সম্ভব এই উন্নয়নের যুগে আধুনিক পরিবহণ ব্যবস্থায় রেল একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহণ। এই ঝিনাইদহ ব্যবসা বাণিজ্য অনেকাংশে পিছিয়ে আছে সহজলভ্য যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে। জেলার দক্ষিণ পশ্চিম সীমানা দিয়ে একটি রেল পথ চলমান যা জেলার গুরুত্বপূর্ণ জেলা শহর হতে অর্ধশত কিলো দুরে এবং জেলার সিংহভাগ এই সুবিধার বাইরে। এই জেলায় রয়েছে ইতিহাস সমৃদ্ধ । পর্যটন কেন্দ্র সহ এশিয়ার বৃহত্তম কৃষি ফার্ম , মোবারকগজ্ঞ চিনিকল সহ কবি সাহিত্যিক সাধকদের পূর্ণ্যভুমি এই ঝিনাইদহের মাটি । এই ঝিনাইদহের কৃষি পণ্য উৎপাদনে রয়েছে যথেষ্ট সুনাম । বাবসা বাণিজ্যর রয়েছে অপার সম্ভবনা ।
প্রয়োজন এখন আামাদের সহজলভ্য পরিবহণ ব্যবস্থা । আর সেটা হতে পারে ঝিনাইদহের উপর দিয়ে রেল পথ স্থাপনের মাধ্যমে । ঝিনাইদহে আছে স্বনামধন্য ঝিনাইদহ কাডেট কলেজ , কৃষি ইনস্টিউট, মৃত্তিকা গবেষণা কেন্দ্র, ভেটনারী কলেজ, আইএসটিআই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, চক্ষু হাসপাতাল, পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট , প্যারামেডিকেল কলেজ, টেক্সটাইল কলেজ, এই সকল প্রতিষ্ঠানই রয়েছে শহরের চারপাশ ঘিরে । এ ছাড়াও দেশের স্বনামধন্য এনজিও প্রতিষ্ঠানের কয়েকটি এই শহরেরই তার প্রধান কার্যালয় , সৃজনী বাংলাদেশ এবং এইড( এ্যাকশান ইন ডেভালাপমেন্ট ) এনজিও সংস্থা সহ ছোট বড় প্রায় ৫০ এর অধিক প্রতিষ্ঠান এই শহরে গড়ে উঠেছে । সকলের আছে দেশ ও জাতির জন্য অবদান । এই সকল মিলে ঝিনাইদহ হতে পারে এক উজ্জল সম্ভবনার দুয়ার বাণিজ্যর । এখন দরকার আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও প্রসার । তারজন্য দরকার আমাদের রেল পথ । উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে খুলতে পারে অমিত সম্ভবনার দুয়ার ।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৩